বাঁকুড়ার জয়পুরে আবাস যোজনা পরিদর্শন। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী
একশো দিনের কাজের জব-কার্ড তাঁদের কাছেই থাকে, না কি জোর করে কেউ নিয়ে নেয়— এমন প্রশ্ন শুনে কিছুটা হকচকিয়ে গিয়েছিলেন কয়েক জন শ্রমিক। ভাষার সমস্যায় প্রশ্ন বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে হয়তো, ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক এমনটা দাবি করলেও, ‘ন্যাশনাল লেভেল মনিটরিং’ (এনএলএম) দলের সদস্যেরা জানালেন, শ্রমিকেরাই যা বলার বলবেন। খানিক ধাতস্থ হয়ে শ্রমিকেরা জানালেন, কার্ড তাঁদের কাছেই থাকে।
বুধবার পুরুলিয়ার জয়পুর পঞ্চায়েতের হোয়াংদায় এ ভাবেই নানা তথ্য জানলেন কেন্দ্রীয় দলটির সদস্যেরা। পুরুলিয়ার জয়পুর ব্লকের আরও দু’টি পঞ্চায়েতে গিয়ে একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনা প্রকল্প খতিয়ে দেখেন তাঁরা। এ দিন বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকেও তিনটি পঞ্চায়েতে গিয়ে ওই দুই প্রকল্প পরিদর্শন করে
কেন্দ্রীয় দল।
একশো দিনের কাজে মজুরি ঠিক মতো মিলছে কি না, চাইলেই কাজ পাওয়া যায় কি না, পুরুলিয়ার জয়পুর পঞ্চায়েতে গিয়ে শ্রমিকদের কাছে এ সবও খোঁজ নেন ওই সদস্যেরা। পঞ্চায়েতের প্রতিনিধির কাছে কাজের নথিপত্র দেখা হয়। ওই পঞ্চায়েতের ধবনি গ্রামে আবাস যোজনা প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে ওই সদস্যেরা, বাড়ির কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি কেন, সে প্রশ্ন তোলেন। এক উপভোক্তা দশ হাজার টাকা এখনও মেলেনি বলে জানালে, বিষয়টি ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চান কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। ব্লকের প্রতিনিধি জানান, সব টাকাই দেওয়া হয়েছে। ওই উপভোক্তার ব্যাঙ্কের পাশবই ‘আপডেট’ করা নেই।
বড়গ্রাম পঞ্চায়েতের সেলানি ও সিধি-জামড়া পঞ্চায়েতের বাবুডি গ্রামে এ দিন ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের কাজ দেখেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। বিডিও (জয়পুর) বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘এই প্রকল্পে বিভিন্ন ফলের চাষ ও পশুপালন হচ্ছে। উপভোক্তাদের কাছে এ নিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চেয়েছেন ওই সদস্যেরা।’’ এনএলএম দলের এক সদস্য শুধু বলেন, ‘‘যে তথ্য উঠে আসছে, সে অনুযায়ী আমরা রিপোর্ট জমা দেব।’’
বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকের রাউৎখণ্ড পঞ্চায়েতে গিয়েও আবাস যোজনা প্রকল্পের নানা বাড়ি সরেজমিনে দেখে এনএলএম দল। কোনও বাড়ি অসম্পূর্ণ থাকলে তার কারণ কী, সরকারি টাকার বাইরে অন্য কোনও টাকা কাজে লাগানো হয়েছে কি না, তা কী ভাবে জোগাড় করেছেন উপভোক্তা— এ সব জানতে চান। দলের এক সদস্য বলেন, ‘‘সরকারি টাকা কী ভাবে ব্যবহার হচ্ছে, টাকা কম পড়েছে কি না ইত্যাদি তথ্য জানা হচ্ছে।’’
কেন্দ্রীয় দলের সদ্যদের কাছে ভাষা-সমস্যার কারণে সব কিছু ভাল ভাবে জানাতে পারেননি বলে আক্ষেপ করেন রাউৎখণ্ডের আবাস যোজনার উপভোক্তা রিনা কোলে। তাঁর দাবি, ‘‘সরকারি যে টাকা মেলে, তাতে আর কতটা বাড়ি তৈরি হবে? জমি বিক্রি ও ধার-দেনা করে ছাদ তুলতে পেরেছি। প্লাস্টার বোধ হয় আর করাতে পারব না!’’ আর এক উপভোক্তা স্মৃতিরেখা কর্মকারের দাবি, ‘‘এক বছর পরেই বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ছে। প্লাস্টার বা মেরামত করানোর ক্ষমতা নেই আমাদের।”
বাঁকুড়ার জয়পুরের বিডিও বিট্টু ভৌমিক বলেন, ‘‘ব্লকের রাউৎখণ্ড, সলদা ও গেলিয়া পঞ্চায়েত পরিদর্শন করেছে এনএলএম দল। উপভোক্তাদের কাছে নানা তথ্য
সংগ্রহ করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy