দীর্ঘ ক্ষণ তালাবান্দি থাকার পর উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির জেলা কার্যালয়ের একটি কক্ষে নিজের দলের কর্মীদের একাংশের হাতেই ঘণ্টাখানেক তালাবন্দি হয়ে থাকতে হল কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারকে। তালা বন্ধ করে প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। শুধু তাই নয়, দলীয় কর্মীরা বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডলকেও হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। এক ঘণ্টা পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ মুক্ত হন। মঙ্গলবার দুপুরের এই ঘটনার নেপথ্যে কি বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল স্পষ্ট হল? সুভাষ নিজে কিছু বলতে চাননি। তবে বিক্ষোভকারীরা উগরে দিচ্ছেন নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ।
মঙ্গলবার দুপুরে বাঁকুড়া শহর লাগোয়া কেশিয়াকোল এলাকায় গোশালা পরিদর্শনে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ। বিজেপি সূত্রে খবর, সেখান থেকে ফেরার পথে বাঁকুড়া শহরের নতুনগঞ্জে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। জেলা নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করার সময় আচমকা সেখানে বিজেপির পতাকা হাতে হাজির হন বেশ কয়েক জন কর্মী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যে কক্ষে বসে বৈঠক করছিলেন, কোনও কথা না বাড়িয়ে ঝটপট সেই ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে দেন ওই কর্মীরা। এর পর ঘরের বাইরে শুরু হয় স্লোগান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি হাতে ওই বিক্ষোভকারীরা ‘সুভাষ সরকার দূর হঠো’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এই খবর পেয়ে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র জেলা কার্যালয়ে ছুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকেও বিক্ষোভকারীদের হাতে হেনস্থা হতে হয়। বিজেপি জেলা সভাপতির জামার কলার এবং কান ধরে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা । চলে ধস্তাধস্তি। ওই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। জেলা কার্যালয়ে যান মন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ এবং আরও বেশ কয়েকজন কর্মী।
পুলিশ প্রথমে বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভকারী বিজেপি কর্মীদের সরানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা অনড় অবস্থান নিয়েছিলেন। তাঁদের বেশ কয়েক জনকে আটক করে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ । এর পর তালা খুলে সুভাষ এবং সুনীলকে উদ্ধার করে পুলিশ ।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মোহিত শর্মা নামে এক জন বলেন, “বিজেপির কার্যকর্তা হিসাবে আমরা পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত, সর্বস্তরের নির্বাচন করেছি। কিন্তু আমাদের সংগঠনে গুরুত্ব না দিয়ে সুভাষ ইচ্ছেমতো জেলা কমিটি থেকে মণ্ডল কমিটি তৈরি করেছেন। উনি দল নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা করছেন। তারই প্রতিবাদে আমরা ওঁকে তালাবন্দি করে বিক্ষোভ দেখিয়েছি।”
অন্য দিকে, বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলের দাবি, বিক্ষোভকারীদের কেউ-ই বিজেপির নন। তাঁর কথায়, ‘‘এঁদের সকলকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরা সকলেই তৃণমূলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতী। বিজেপির ক্ষতি করার জন্য তৃণমূলের মদতেই এঁরা এই কাজ করেছেন।”
অন্য দিকে, এ নিয়ে তৃণমূলের তরফে রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, “বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এতটাই প্রকট হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকেও তালাবন্দি করে রাখছেন দলেরই একাংশ। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তাঁর আগে এমন অনেক নাটক দেখা যাবে।” তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা মুখপাত্র মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তের কথায়, “বিজেপির এটাই নীতি। যারা ক্ষমতা পান, তাঁরাই স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠেন। ভোটে জেতার পর কর্মীদের আর মনে রাখেননি মন্ত্রী। তাই এই ক্ষোভ-বিক্ষোভ। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy