বঙ্গভুক্তি দিবসে পুরুলিয়া শহরে শোভাযাত্রা। নিজস্ব চিত্র।
হাতে প্ল্যাকার্ড, বাজনার তালে পায়ে পা মিলিয়ে ঝলমলে শোভাযাত্রা— পুরুলিয়ার জন্মদিনে প্রতি বছরের চেনা ছবি এ বার বিশেষ দেখা গেল না। রবিবার এ নিয়ে অনেকের গলাতেই শোনা গিয়েছে আক্ষেপের সুর।
ভাষা আন্দোলনের জেরে তৎকালীন বিহারের মানভূম জেলার অবলুপ্তি হয়েছিল। ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বর নতুন জেলা হিসাবে পুরুলিয়ার অন্তর্ভুক্তি ঘটেছিল পশ্চিমবঙ্গে। প্রতি বছর দিনটি মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয় জেলার নানা প্রান্তে। করোনা আবহে এ বার ছন্দপতন হয়েছে।
মানভূমের ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা তথা জেলার প্রথম সাংসদ প্রয়াত ভজহরি মাহাতোর ছেলে, বান্দোয়ানের বাসিন্দা দীপক মাহাতো বলেন, ‘‘১ নভেম্বর দিনটি জেলাবাসীর কাছে অত্যন্ত গর্বের। এ বার করোনার প্রকোপের জেরে দিনটি যথাযথ ভাবে পালন করতে পারা গেল না। আক্ষেপ থেকে গেল।’’
পুরুলিয়া শহরে নিবারণচন্দ্র দাশগুপ্তের মূর্তির পাদদেশে লোকসেবক সঙ্ঘ আয়োজিত অনুষ্ঠানে সঙ্ঘের সচিব সুশীল মাহাতো বলেন, ‘‘পুঞ্চার পাকবিড়রা থেকে কলকাতা ঐতিহাসিক পদযাত্রার সদস্য কয়েক জন ভাষা সেনানী এখনও রয়েছেন। এই বিশেষ দিনে আমরা তাঁদের কীর্তির কথা স্মরণ করি।’’ শহরের শিল্পাশ্রম থেকে এ দিন একটি শোভাযাত্রাও করেন সঙ্ঘের সদস্যেরা। স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে পুরুলিয়ার ভাষা আন্দোলানের ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তোলা হয়। ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। বক্তা জলধর কর্মকার বলেন, ‘‘এই দিন তো বার বার ফিরে আসবে না। করোনা সতর্কতা বজায় রেখে আমরা জেলার জন্মদিন স্মরণ করেছি।’’
পুঞ্চার লৌলাড়ায় নিত্যানন্দ জনবাণী রেডিয়োর পক্ষ থেকে রবিবার সারাদিন ধরে ‘ফেসবুক লাইভ’-এ ও রেকর্ড করা অনুষ্ঠানে জেলার জন্মদিনের প্রাক্কথা আলোচিত হয়েছে। অন্যতম আলোচক, ইতিহাস গবেষক প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘কোন আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আমাদের জেলার জন্ম হয়েছে, তার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’’ মানবাজারে কিসান মান্ডিতে ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের স্টলে মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু কেক কেটে জেলার জন্মদিন পালন করেন।
কাশীপুরের মাজরামুড়া গ্রামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চিত্রকর পরিবারের ছেলেমেয়েদের নিয়ে একটি কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা অনলাইনে একটি অনুষ্ঠান করেছেন। অনলাইনে অনুষ্ঠান করেছে আদ্রার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। পুরুলিয়ার বাসিন্দা স্বল্প দৈর্ঘের ছবির নির্দেশক রাজারাম মাহাতো বলেন, ‘‘করোনা বিধি মেনে মঞ্চ করে জমায়েত করিনি। তবে ফেসবুকের লাইভ অনুষ্ঠানে একদা মানভূম তথা বর্তমান ঝাড়খণ্ডের কিছু বাসিন্দাও হাজির ছিলেন । করোনা বিধি মেনে এ ভাবেই দুই রাজ্যের বঙ্গভাষীদের মেলবন্ধন ঘটানোর চেষ্টা করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy