রামপুরহাট আদালতে ধৃত জাহাঙ্গির শেখ। নিজস্ব চিত্র
লালন শেখকে (বড়) গ্রেফতার করার পরে পরেই বগটুই হত্যাকাণ্ডে ফের সাফল্য পেল সিবিআই। এ বার তাদের জালে ওই হত্যাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত জাহাঙ্গির শেখ। যাঁর খুনের পরেই বগটুইয়ে ১০ জনকে পুড়িয়ে-কুপিয়ে মারা হয়েছিল বলে অভিযোগ, সেই তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখের সৎ ভাই এই জাহাঙ্গির। মাথা ন্যাড়া করে সে লুকিয়ে ছিল ঝাড়খণ্ডের এক গ্রামে। সম্প্রতি ফিরে এসেছিল বগটুই গ্রামেই। সেখান থেকেই মঙ্গলবার তাকে পাকড়াও করা হয় বলে সিবিআই সূত্রের দাবি।
সিবিআই সূত্রে দাবি, ঝাড়খণ্ডের গোপন ডেরা থেকে বাড়ি আসার পথে মঙ্গলবার রাতে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে, রামপুরহাট থানার বগটুই গ্রাম থেকেই জাহাঙ্গির গ্রেফতার করা হয়। বুধবার রামপুহাট আদালতে ধৃতকে তুলে আট দিনের জন্য নিজেদের হেফাজত চেয়ে আবেদন জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী। বিচারক ৬ দিনের সিবিআই হেফাজত মঞ্জুর করেন। সূত্রের খবর, জাহাঙ্গিরের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত করে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, খুন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
চলতি বছরের ২১ মার্চ বগটুই মোড়ে বোমার ঘায়ে খুন হন বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান, বহটুই গ্রামের বাসিন্দা ভাদু শেখ। এর পরেই বগটুইয়ের পূর্বপাড়ায় ভাদু বিরোধী পরিবারের ১০ জনকে খুন করা হয়। সিবিআই সূত্রের দাবি, বগটুই গ্রামে হামলার নেতৃত্বে ছিল ভাদুর সৎ ভাই জাহাঙ্গির শেখ এবং ভাদুর ছায়াসঙ্গী লালন শেখ (বড়)। সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিটে জাহাঙ্গিরের নাম ছিল। জাহাঙ্গির গ্রেফতার হওয়ার অনেক আগেই ভাদু শেখের তিন দাদা, দুই ভাগ্নে, দুই ভাইপো সহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। ঘটনার ৯ মাস পরে সিবিআই ধরতে পারল জাহাঙ্গিরকেও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাদুর বিভিন্ন ব্যাবসা দেখভাল করত জাহাঙ্গির। বগটুইয়ের স্বজনহারা পরিবারের অভিযোগ, ভাদু খুন হওয়ার পরে লোক জড়ো থেকে শুরু করে হামলা, আগুন লাগানো— এ সবের পিছনে বড় ভূমিকা রয়েছে জাহাঙ্গিরের। ২২ মার্চ দুপুরে ভাদুর মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করে বগটুই গ্রামে ঢোকার আগেই জাহাঙ্গির পালিয়ে যায়। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপন ডেরায় থাকাকালীন নানা রকম ছদ্মবেশে থাকত জাহাঙ্গির। সেই কারণে জাহাঙ্গিরকে এত দিন ধরা যায়নি।
সিবিআইয়ের দাবি, সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের মহেশপুর থানার রদ্দিপুর আউটপোস্টের অধীন সুন্দরপাহাড়িতেও ডেরা নিয়েছিল জাহাঙ্গির। তাকে যাতে চেনা না-যায়, তার জন্য নে মাথা ন্যাড়া করেছিল জাহাঙ্গির। সুন্দরপাহাড়ি এলাকায় সে গরু কেনা-বেচার কাজ করছিল। সুন্দরপাহাড়ি এলাকায় তল্লাশি চালিয়েও সেখানে জাহাঙ্গিরের সন্ধান পায়নি সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, লালন শেখকে (বড়) গ্রেফতার করার পরে তাকে জেরা করে জাহাঙ্গির সম্পর্কে কিছু সূত্র পাওয়া যায়। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার বগটুই গ্রাম থেকে জাহাঙ্গিরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বগটুইয়ের স্বজনহারা পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি অগ্নিসংযোগ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার নেতৃত্বে ছিল জাহাঙ্গির। আমরা ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy