Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Murder

Murder Purulia: পরিচারিকা খুনে ধৃত দুই কাঠমিস্ত্রি

দোষীদের শাস্তি ও নিহতের ক্ষতিপূরণের দাবিতে এবং পরিচারিকাদের নিরাপত্তা চেয়ে এ দিন থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় পরিচারিকা সমিতি।

পুরুলিয়া সদর থানায় পরিচালিকাদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

পুরুলিয়া সদর থানায় পরিচালিকাদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২২ ০৮:৪৩
Share: Save:

পরিচারিকাকে খুনের তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হল ভিকি শর্মা ওরফে গুলু ও রাকেশ রজক। দু’জনেই পেশায় কাঠমিস্ত্রি। আদতে বিহারের ছড়রার বাসিন্দা ভিকি পুরুলিয়া শহরের সাধুডাঙা এলাকায় ভাড়াবাড়িতে থাকে। রাকেশের বাড়ি পুরুলিয়া মফস্সল থানার দুবচড়কা গ্রামে। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সোমবার তাদের পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। চুরির উদ্দেশ্যে বাড়িতে ঢুকেছিল অভিযুক্তেরা, দাবি পুলিশের। দোষীদের শাস্তি ও নিহতের ক্ষতিপূরণের দাবিতে এবং পরিচারিকাদের নিরাপত্তা চেয়ে এ দিন থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় ‘সারা বাংলা পরিচারিকা সমিতি’র পুরুলিয়া জেলা শাখা।

রবিবার দুপুরে পুরুলিয়া শহরের দর্জিপাড়ার বাসিন্দা, স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রদীপ দাস কর্মকারের বাড়ি থেকে তাঁর স্ত্রী নন্দিতা ও পরিচারিকা পার্বতী বাদ্যকর (৫৫)-কে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পুরুলিয়া মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হলে পার্বতীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। নন্দিতা বর্তমানে দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, দিন কয়েক আগে প্রদীপের বাড়িতে কাঠের কাজকর্ম হয়েছিল। রবিবার দুপুরে দুই কাঠের মিস্ত্রি তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন জানান, কাজের সুবাদে ভিকির ওই বাড়িতে অনেক দিন ধরে যাতায়াত রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ভিকির সঙ্গে একটি মেয়ের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তাঁকে বিয়ে করার জন্য প্রায় তিন লক্ষ টাকার প্রয়োজন ছিল তার। অন্য কোনও ভাবে টাকা জোগাড় করতে না পেরে শেষে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে চুরির মতলব আঁটে সে। পুলিশের অনুমান, বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে কোথায় টাকাপয়সা থাকে, তার একটা আন্দাজ ছিল ভিকির। চুরির মতলবে রবিবার দুপুরে রাকেশকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে ঢোকে সে। ভিকি জানত যে, সে সময়ে বাড়িতে কর্ত্রী ও পরিচারিকারা ছাড়া আর তেমন কেউ থাকেন না। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, চুরির মতলব তো ছিলই। পাশাপাশি, ভিকি এতটাই বেপরোয়া ছিল যে, বাধা পেলে প্রয়োজনে পথ থেকে সরিয়ে দিতেও পিছপা হত না।

তদন্তকারীদের দাবি, সে দিন প্রথমে বাড়ির কর্ত্রী নন্দিতার কাছে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা পুরনো কিছু কাঠ চায় ভিকিরা। নন্দিতা তা দিতে রাজি হননি। তিনি ফোনে স্বামীর সঙ্গে তাদের কথা বলতে বলেন। ফোনে কথাবার্তা সারার পরে, কাঠ নিতে দোতলায় ওঠে তারা। সে সময়ে উপরের একটি ঘরে কাজ করছিলেন পার্বতী। চুরিতে যাতে বাধা না দিতে পারে, তার জন্য তাঁকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাতুড়ি দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে ঘরটি তালাবন্ধ করে দেওয়া হয়।

ইতিমধ্যে নন্দিতা উপরে উঠে এলে তাঁরও মাথায় সম্ভবত হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে সিঁড়ি থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয় বলে অনুমান তদন্তকারীদের। নন্দিতার সিঁড়িতে পড়ে যাওয়ার আওয়াজ পেয়ে ছুটে আসেন এক তলায় রান্নাঘরে থাকা অন্য এক পরিচারিকা। নন্দিতাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে দ্রুত দোকানে প্রদীপকে ফোন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। সেই গোলমালের সুযোগে অভিযুক্তেরা চম্পট দেয় বলে দাবি পুলিশের। কিছু চুরি যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, তদন্তে জানা যায়, সে দিন বাড়িতে ভিকি ও রাকেশ ছাড়া বাইরের কোনও লোক আসেনি। প্রাথমিক ভাবে তাই তারা সন্দেহের তালিকায় ছিল।

তদন্তে নেমে মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে রবিবার রাতে শহরের সাধুডাঙা এলাকা থেকে প্রথমে ভিকিকে আটক ও পরে গ্রেফতার করা হয়। ভিকিকে দিয়ে ফোন করিয়ে এনে পরে ধরা হয়ে বিকাশকেও।

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy