Advertisement
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Passengers

বাস ছুটলেও যাত্রী কোথায়, প্রশ্ন

বাঁকুড়া শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে এ দিন সকাল থেকেই প্রায় সব রুটে বাস চলাচল শুরু করে।

হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রী, বাঁকুড়ায়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রী, বাঁকুড়ায়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২১ ০৬:৩১
Share: Save:

পুরুলিয়ায় ক’দিন আগেই বেসরকারি বাস চলা শুরু হয়েছে। বুধবার থেকে বাঁকুড়া জেলাতেও বেসরকারি বাস পথে নামল। ফিরে এল যাত্রী টানার চেনা হাঁকডাক। বাস চলায় খুশি যাত্রীরাও। তবে হাতেগোনা যাত্রী দেখে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলার বাস মালিকদের একাংশ। ক্রমশ যাত্রীসংখ্যা বাড়বে বলে আশাবাদী ‘বাঁকুড়া জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক জাফর আলম আনসারি। যদিও পুরুলিয়া জেলায় যাত্রী বাড়েনি বলে আক্ষেপ শোনা গিয়েছে বাস মালিকদের গলায়।

বাঁকুড়া শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে এ দিন সকাল থেকেই প্রায় সব রুটে বাস চলাচল শুরু করে। বিষ্ণুপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকেও ৩০ শতাংশ বেসরকারি বাস পথে নেমেছিল। তবে সেখানেও যাত্রী সংখ্যা ছিল কম। বেসরকারি বাস চলাচল করলেও সংখ্যায় কম বলে অভিযোগ যাত্রীদের একাংশের। বাঁকুড়া-খাতড়া বা সিমলাপাল-খাতড়া সহ বিভিন্ন রুটে বাসের সংখ্যা ছিল খুবই কম। এ দিন সকালে সিমলাপালের শ্বশুরবাড়ি থেকে খাতড়া হয়ে ইঁদপুরের বাংলায় বাড়ি ফেরেন রাজু কালিন্দী নামে এক যুবক। তিনি বলেন, ‘‘বাস কম চললেও শেষ পর্যন্ত বাস পাওয়া গিয়েছে। ভাল লাগল।’’

পুরুলিয়ার জামতোড়িয়া থেকে এ দিন দুপুরে খাতড়া বাসস্ট্যান্ডে এসে দুর্গাপুর যাওয়ার বাসের অপেক্ষায় ছিলেন চিত্ত মুর্মু নামে এক যুবক। তিনি বলেন, ‘‘এখানে এসে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি। দুর্গাপুরের বাস পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, বিকেলের আগে নেই।’’ তবে বেশির ভাগ বাস মালিক জানান, প্রথম দিন সব কর্মীরা এসে পৌঁছতে পারেননি। ক্রমশ সব বাসই পথে নামবে। তাঁরা আশাবাদী মানুষ সংক্রমণের ভয় কাটিয়ে আবার গণপরিবহণ ব্যবহার করবেন।

মঙ্গলবার পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন রুটে বাসের সংখ্যা ছিল ২০০-র বেশি। পুরুলিয়া জেলা বাস মালিক সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন তার থেকে অল্প কয়েকটি বেশি বাস নামানো হয়। সংগঠনের সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত জানান, পড়শি জেলা বাঁকুড়ায় পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ায় ,এ দিন বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর রুটে বাস চলেছে। বাঁকুড়া থেকেও বাস এসেছে। যদিও খাতড়া রুটে পরিষেবা আগেই চালু হয়েছিল। পুরুলিয়া থেকে ঝাড়খণ্ডগামী কয়েকটি বাস মঙ্গলবার থেকেই চলতে শুরু করেছে। কিন্তু তার পরেও যাত্রী হচ্ছে না বলে আক্ষেপ করেন প্রতিভারঞ্জনবাবু।

মূলত বাস পরিষেবার উপরেই নির্ভর করে জেলার দক্ষিণ-পূর্ব অংশের বান্দোয়ান-মানবাজার এলাকার যাত্রী পরিবহণ ব্যবস্থা। এ দিন দুপুরে বান্দোয়ান বাসস্ট্যান্ডে খাতড়া-পুরুলিয়া রুটের একটি বাসের কন্ডাক্টর বলেন, ‘‘তিন-চার দিন এই রুটে যাতায়াত করছি। পাঁচ-ছ’জনের বেশি যাত্রী হচ্ছে না।’’ একই ছবি মানবাজারেরও। মানবাজার-পুরুলিয়া রুটের একটি বাসের এজেন্ট বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘রোজই ভাবি, পরের দিন যাত্রী বাড়বে। এক সপ্তাহ হয়ে গেল, অবস্থা পাল্টায়নি।’’

একই ছবি রঘুনাথপুর স্ট্যান্ডেও। রঘুনাথপুর-তুলিন রুটের একটি বাসের কন্ডাক্টর ঝন্টু দে জানান, মোট জনা পনেরো যাত্রী রয়েছে। পথে আর কেউ উঠবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

মানবাজারের বাসিন্দা বাসমালিক মনোজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাস চালিয়ে জ্বালানি তেলের দামও উঠছে না। কর্মীদের বেতনও দিতে হচ্ছে। যাত্রীদের কথা ভেবে বাস বন্ধও করে দিতে পারছি না। এ ভাবে ক’দিন টানা যাবে জানি না!’’

প্রতিভারঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘পরিষেবা শুরুর পরে, বিয়েবাড়ির মরসুম থাকায় ক’টা দিন তবুও অল্প কিছু যাত্রী হয়েছে। বুধবার অধিকাংশ বাসই প্রায় ফাঁকা ছুটেছে। দুপুরের পরে, পুরুলিয়া শহরের বাসস্ট্যান্ড প্রায় খালি হয়ে যাচ্ছে। আমাদের পকেটও।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Passengers bus owners
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy