দাদা দেবদাস মিত্র
বিবাহবিচ্ছেদের পর স্বামীর কাছ থেকে খোরপোশ নিতে চেয়েছিলেন বোন। কিন্তু আপত্তি ছিল দাদার। এ নিয়ে পারিবারিক অশান্তি চলছিল অনেক দিন ধরে। সেই বিবাদের পরিণতি যে এমন নৃশংস হতে পারে, তা কল্পনাও করতে পারছেন না বাঁকুড়া শহরের অরবিন্দনগরের বাসিন্দারা। বোনের গলায় ছুরি চালিয়ে নিজেকে ঘর বন্ধ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন দাদা। বাদ গেলেন না বৃদ্ধা মা-ও। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হলেন তিনিও।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ছেলে দেবদাস মিত্র, মেয়ে মুনমুন মিত্রকে সঙ্গে নিয়ে অরবিন্দনগরের একটি ভাড়া বাড়িতে বেশ কয়েক দিন ধরেই থাকেন মা মুক্তা মিত্র। সম্প্রতি কলকাতার এক ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে বিয়ে হয় মুনমুনের। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই স্বামীকে ছেড়ে অরবিন্দনগরের বাড়িতে এসে সেখানেই থাকতে শুরু করেন তিনি। এর পরেই বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁর স্বামী। পাল্টা খোরপোশের দাবি জানান মুনমুন। এতেই আপত্তি দেবদাসের। বোন স্বামীর থেকে ভরণপোষণের টাকা নিক, দাদা তা চাননি।
পরিবারের তরফেও জানা গিয়েছে, এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই দাদা-বোনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে তা চরমে ওঠে। ঝামেলার সময় হঠাৎ বোনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর গলায় ছুরি চালিয়ে দেন দেবদাস। মা মুক্তা বাধা দিতে গেলে তাঁর হাতেও আঘাত লাগে। এর পরেই একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন দেবদাস। এক তলায় চিৎকার চেঁচামেচি শুনেই নীচে নেমে এসে মা ও মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন বাড়ির মালিক কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দোতলার ঘরে থাকি। একতলায় মা ও ভাই-বোন থাকেন। শুরুতে কিছুই বুঝতে পারিনি। পরে নীচে নেমে এসে দেখি, রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।’’
বাড়ির মালিকের চেঁচামেচিতেই ছুটে আসেন স্থানীয়রা। খবর দেওয়া হলে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মুনমুন ও মুক্তাকে উদ্ধার করে। তার পর বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় রক্তাক্ত দেবদাসকে। তাঁর গলায় ছুরির আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তাঁদের তিন জনকেই বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে মুক্তা বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে অনেকেই পাগল বলছে। কিন্তু ও পাগল নয়। মানসিক রোগের চিকিৎসকের কাছে নিয়েও গিয়েছিলাম। আসলে অনেক পড়াশোনা করে চাকরি না পেয়ে ওর মধ্যে মানসিক অবসাদ তৈরি হয়েছে। হয়তো সে কারণেই এই ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে ও।’’
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঠিক কী কারণে বোনকে আক্রমণ করলেন দাদা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy