Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Custodial death in Bogtui Case

‘লালনের জিভ কেটে নিয়েছে সিবিআই!’ স্ত্রীর অভিযোগ, দাবি সিআইডি তদন্তের, নিলেন না দেহ

বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখকে চলতি মাসেই গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই। সোমবার অস্থায়ী শিবিরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করে সিবিআই।

লালন শেখের দেহ দেখে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার পর স্ত্রী এবং ভাগ্নি।

লালন শেখের দেহ দেখে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার পর স্ত্রী এবং ভাগ্নি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:১৭
Share: Save:

বগটুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন রহস্যমৃত্যুতে সিআইডি তদন্ত চাইলেন স্ত্রী রেশমা বিবি। তাঁর অভিযোগ, লালনকে খুন করেছে সিবিআই। এমনকি, তাঁর জিভ কেটে নিয়েছে সিবিআই! কয়েক জন সিবিআই আধিকারিকের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ এনে রামপুরহাট থানায় এফআইআর করেছেন রেশমা।

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে লালনের দেহ দেখার পর ধীর পায়ে বাইরে বেরিয়ে আসছিলেন রেশমা। পরনে আটপৌরে হলদে শাড়ি। মুখে কান্নার ছাপ স্পষ্ট। বার বার কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়ছেন। তাঁকে তুলে ধরছেন এক আত্মীয়া। সম্পর্কে তিনি লালনের ভাগ্নি। তিনিই প্রথম বলেন, ‘‘আমরা সিআইডি তদন্ত চাইছি। সিবিআই মেরে ফেলেছে ওকে। পুরো বডিতে নীল নীল দাগ। পা ও হাতের তলায় মারের চিহ্ন স্পষ্ট…। ওর জিভ কেটে দিয়েছে।’’ পাশ থেকে কাঁদতে কাঁদতে রেশমা বলে ওঠেন, ‘‘আমরা ওই সিবিআই অফিসারদের গ্রেফতারি চাই। সিআইডি তদন্ত চাইছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওর জিভ কেটে দিয়েছে। আমরা ওই দেহ নেব না। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ দিয়েছি। এফআইআরে আমি ওদের নাম দিয়েছি।’’

এফআইআরে লালনের স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, গত ৩ ডিসেম্বর তাঁর স্বামীর সিবিআই গ্রেফতারির পর তাঁর মুখ দিয়ে ‘বড় বড় নাম’ বলিয়ে নিতে চায় সিবিআই। তিনি স্বামীর কাছ থেকেই এ কথা শুনেছেন। পরে রামপুরহাট আদালতের নির্দেশে লালনকে দ্বিতীয় বার হেফাজতে নেওয়ার পর তাঁর কাছে ‘হার্ড ডিস্ক’ চান। এর জন্য তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়। এমনকি, রবিবার রাতে তাঁকে এক সিবিআই আধিকারিক হুমকির সুরে বলেন, ‘‘কাল (সোমবার) দুপুর ১২টার মধ্যে হার্ড ডিস্ক আমাকে দে। না হলে সোমবারের পর তোর স্বামীকে আর পাবি না।’’ রেশমা পুলিশকে জানিয়েছেন, এমতাবস্থায় তাঁরা কী করবেন কিচ্ছু বুঝে উঠতে পারেননি। পরে তাঁকে আবার ফোন করেন এক সিবিআই আধিকারিক।

রেশমার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, সোমবার সিবিআই আধিকারিকরা তাঁর বাপের বাড়িতে উপস্থিত হন। বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। শাসানি দেন হয় হার্ড ডিস্ক দিতে হবে না হলে ৫০ লক্ষ টাকা তাঁদের চাই! লালনের স্ত্রী অভিযোগপত্রে লিখেছেন, ‘‘আমি ওঁকে (সিবিআই অফিসার) জানাই এত টাকা আমার কাছে নেই।’’ এর পর ওই তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘১২টার পর দেখ কী অবস্থা করি।’’ এর পর বেলার দিকে তাঁদের খবর দেওয়া হয় লালন মারা গিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে যায় চার সদস্যের সিআইডির দল। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে এই মামলাটি দেখছে তারা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE