Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Bankura Murder

গোলাপ-গোপালের প্রেমে কাঁটা সেই দেওরের দেহ খুঁজেই পেল না বাঁকুড়ার পুলিশ, মিলল শুধু পোশাক

বাঁকুড়ার সারেঙ্গা থানার মাকড়কোল গ্রামের সেই নিহত যুবক অসিত প্রতিহারের দেহের খোঁজে নন্দকুমারে বৃহস্পতিবার দিনভর তল্লাশি চালিয়েও সফল হল না পুলিশ।

—ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:১২
Share: Save:

প্রেমের সম্পর্কে ‘পথের কাঁটা’ দেওরকে সরাতে ৪২ দিন আগে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানার খঞ্চিতে তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছিলেন বৌদি ও তাঁর প্রেমিক। পুলিশি তদন্তে এখনও পর্যন্ত তেমনটাই উঠে এসেছে। বাঁকুড়ার সারেঙ্গা থানার মাকড়কোল গ্রামের সেই নিহত যুবক অসিত প্রতিহারের দেহের খোঁজে নন্দকুমারে বৃহস্পতিবার দিনভর তল্লাশি চালিয়েও সফল হল না পুলিশ। অভিযুক্ত বৌদি এবং তাঁর প্রেমিকের দেখিয়ে দেওয়া নয়ানজুলি থেকে মিলল না অসিতের দেহ। তবে মিলল কিছু পোশাক। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া জামাকাপড় অসিতেরই কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শুক্রবার ফের দেহের খোঁজে তল্লাশি চালানো হবে।

জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় অভিযুক্ত যুগল জানিয়েছেন, গত ৭ অগস্ট রাতে অসিতকে খুন করে খঞ্চি গ্রাম লাগোয়া ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারের নয়ানজুলিতে দেহ ফেলে দিয়েছিলেন তাঁরা। এ কথা জানার পরেই দেহ বা দেহাবশেষ উদ্ধারে যায় সারেঙ্গা থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে সারেঙ্গা থানার পুলিশের দশ জনের একটি দল নন্দকুমার থানার খঞ্চিতে যায়। সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশি হেফাজতে থাকা দুই অভিযুক্তকেও। তাঁরা যে নয়ানজুলি দেখিয়েছিলেন, সেখানেই তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। দুপুরের দিকে সেখান থেকে কিছু জামাকাপড় পাওয়া যায়। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, পোশাকগুলি অসিতেরই। তাই, নয়ানজুলিতেই কোথাও না কোথাও অসিতের দেহ রয়েছে। কিন্তু এত দিন ধরে জলে থাকায় দেহের কতটুকু অবশিষ্ট রয়েছে, তা নিয়েও চিন্তিত তদন্তকারীদের কেউ কেউ। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার বিকেলের পর আলো কমে যাওয়ায় আপাতত তল্লাশি বন্ধ করা হয়েছে। শুক্রবার ফের মৃত যুবকের দেহের সন্ধান চালানো হবে।’’

তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ অগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিলেন মাকড়কোল গ্রামের বাসিন্দা অসিত। নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ৪০ দিন পর ১৭ সেপ্টেম্বর বিষয়টি সারেঙ্গা থানায় লিখিত ভাবে জানায় পরিবার। অভিযোগ পেতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, অসিত গত ৬ অগস্ট বৌদি গোলাপ প্রতিহারের সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে যান। পরে সেখান থেকে বৌদি ফিরে এলেও অসিত আসেননি। পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, কয়েক বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর দুই সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন গোলাপ। সম্প্রতি বাপের বাড়ির সূত্রে নন্দকুমারের বাসিন্দা গোপাল জানার সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। পর্যায়ক্রমে যা প্রণয়ের সম্পর্কে গড়ায়। অসিত এই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে যাওয়ায় বৌদির সঙ্গে তাঁর ঝামেলাও হয় এ নিয়ে। এর পরেই ‘পথের কাঁটা’ হয়ে থাকা অসিতকে সরাতে ফন্দি আঁটেন বৌদি গোলাপ ও তাঁর প্রেমিক গোপাল। গোপাল পরিকল্পিত ভাবে গোলাপ ও অসিতকে নন্দকুমারে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। সেই মতো ৬ অগস্ট সেখানে যান গোলাপ এবং অসিত। পরে বাঁকুড়ার বাড়িতে ফেরেন শুধু গোলাপই। দিনের পর দিন অসিত ফিরে না আসায় সন্দেহ পরিবারের লোকেদের। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ গোলাপকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় গোপালকেও। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা ভেঙে পড়েন। স্বীকার করে নেন যে, গত ৭ অগস্ট রাতে নন্দকুমারে পূর্বপরিকল্পনা করে অসিতকে অতিরিক্ত মদ খাইয়ে মাথায় আঘাত করে ও নয়ানজুলির জলে ডুবিয়ে খুন করেছেন তাঁরা। এর পরেই ওই যুগলকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার খাতড়া আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

bankura Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy