Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Blood Donation

রক্ত দিতেন রাজেশ, গ্রামের স্কুলে তাই রক্তদান

লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন মহম্মদবাজারের বেলগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজেশ।

বেড়গ্রাম পল্লী সেবানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে শিবির। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

বেড়গ্রাম পল্লী সেবানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে শিবির। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২০ ০৩:১৭
Share: Save:

তিনি নিজে রক্তদান করতেন। তাই নিহত সেনা জওয়ান রাজেশ ওরাংকে শ্রদ্ধা জানাতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করল তাঁর ছোটবেলার স্কুল। শুক্রবার সেই শিবিরে রক্ত দিতে এগিয়ে এলেন রাজেশের এক সময়ের সহপাঠীরা।

লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন মহম্মদবাজারের বেলগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজেশ। তাঁর মামার বাড়ি পাড়ুই থানার রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামে। ছোটবেলায় মামার বাড়িতে থেকে স্থানীয় বেড়গ্রাম পল্লী সেবানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পড়াশোনা করেছিলেন রাজেশ। রাজেশের দেহ স্কুলে আনতে চেয়েছিলেন তাঁর শিক্ষক ও সহপাঠীরা। কিন্তু নানা জটিলতায় তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এর পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন, প্রাক্তন ছাত্রের স্মৃতির উদ্দেশে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে সেখান থেকেই বীর জওয়ানকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।

সেই মতো বীরভূম ভলেন্টিয়ার ব্লাড ডোনার অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় শুক্রবার রক্তদান শিবির হয় রাজেশের পুরনো স্কুল প্রাঙ্গণে। তার আগে রাজেশের স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান ছিল। সকলেই এ দিন পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। উপস্থিত ছিলেন রাজেশের সহপাঠী থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষক- শিক্ষিকা, পুলিশকর্মী, সমাজকর্মীরা। রক্তদান শিবিরে রাজেশের পরিবারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু, রাজেশের বোনের চাকরির জন্য বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতির কারণে তাঁরা আসতে পারেননি। তার পরিবর্তে একটি ভিডিয়ো বার্তা দিয়ে স্কুলের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রাজেশের বোন শকুন্তলা ওরাং। তবে, রাজেশের মামাতো ভাই বাপন সরদার ও বোন দীপালি সর্দার এসেছিলেন। রাজেশের বয়স হয়েছিল ২৬। তাই ২৬টি মোমবাতি, ২৬টি ধূপ শলাকা জ্বালিয়ে এবং ২৬ জন রক্তদাতার রক্তদানের মধ্য দিয়ে রাজেশের আত্মার শান্তি কামনা চেয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

রক্তদাতাদের বেশির ভাগই ছিলেন রাজেশের সহপাঠী ও বন্ধু। তাঁদের মধ্যে বুদ্ধদেব মণ্ডল, অরিন্দম সাহা, অমিত ঘোষেরা বলেন, ‘‘রাজেশ আমাদের খুব ভাল বন্ধু ছিল। এই উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে এক দিকে যেমন তাকে স্মরণ করা হল, অন্য দিকে দেশের এক বীর জওয়ানের প্রতি শ্রদ্ধাও জানানো হল।’’ স্কুলের তরফ থেকে রক্তদাতাদের মানপত্র ও একটি করে ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। শিবির থেকে সংগ্রহ করা রক্ত বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্কুলে রাজেশের আবক্ষ মূর্তি বসবে বলেও জানান প্রধান শিক্ষক মলয় মণ্ডল।

স্কুলের শিক্ষিকা প্রতিভা গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এই রক্তদান শিবির করার একটি প্রধান কারণ হল, রাজেশ নিজেও এক জন রক্তদাতা ছিল। যখনই ছুটিতে বাড়ি আসত, তখনই বোলপুর ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত দিত। সে কথা আমরা জানার পরেই স্কুলে রক্তদান শিবিরের সিদ্ধান্ত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Blood Donation Rajesh Orang
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy