প্রতীকী ছবি
কখনও পুলিশ অফিসারকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। কখনও ‘মাস্ক ছাড়া’ থানার বাইরে অবস্থান-বিক্ষোভের অভিযোগ। চলতি মাসে এমনই অভিযোগে রামপুরহাট ও সিউড়ি থানায় বসিয়ে রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে বিজেপি-র বীরভূম জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলকে। এর পিছনে শাসকদলের ‘যড়যন্ত্র’-ই দেখছেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি। তাঁর দাবি, পরের পর ভিত্তিহীন অভিযোগে তাঁকে ফাঁসিয়ে পুলিশ দিয়ে হেনস্থা করতে উঠেপড়ে গেলেছে তৃণমূল। উদ্দেশ্য, তাঁদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পণ্ড করা। তৃণমূল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে জেলার পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি-র চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। সেই জন সমর্থনকে ধরে রেখে এবং আগামী দিনে ভোট বাক্সে ফেলতে প্রতিনিয়ত কর্মসূচি নেওয়ার চেষ্টা চলছে কোভিড পরিস্থিতিতেও। বিজেপি নেতাদের দাবি, এটা শাসকদল ভাল ভাবে নিতে পারছে না। তাই নানা কৌশলে নিয়েছে। শ্যামাপদের দাবি, ‘‘শাসকদল নিজেরা পারছে না বলেই পুলিশকে ব্যবহার করছে। আমার বিরুদ্ধেই অন্তত ২০টি মামলা হয়েছে। এই জেলায় অন্তত দেড় হাজার মামলায় আমাদের কয়েক হাজার নেতা-কর্মীরা ফেঁসে হয় জেলে না হয়, বেলে (জামিনে) আছেন। যাঁকে জেলে ঢোকানো যাচ্ছে না, আমার মতো জেরা করার নামে থানায় ডেকে হেনস্থা করা চলছে।’’ কিন্তু এ ভাবে বিজেপি-কে আটকানো যাবে না বলেও তাঁর হুঁশিয়ারি।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। কিন্তু, প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘এ রাজ্যে আইনের শাসন আছে। পুলিশ নিরপক্ষ। ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করলে, আইনের শাসন না মানলে, পুলিশকে আক্রমণ করলে বা খারাপ ভাষা প্রয়োগ করলে যা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, পুলিশ তাই নিয়েছে।’’ বিজেপি-র পাল্টা দাবি, ‘আইনের শাসন’কে শাসকদলের নেতারা বুড়ো আঙুল দেখালে তখন তো পুলিশি তৎপরতা চোখে পড়ে না।
তৃণমূল নেতারা বলছেন, লোকসভা ভোটের ফল দেখে বিজেপি-র এত আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। লোকসভা আর বিধানসভা নির্বাচন এক নয়। জনসংযোগের অভাব, অন্তর্কলহ, এবং নিচুতলার নেতাকর্মীদের ভুল ত্রুটি-সহ নানা খামতি মিটিয়ে সংগঠন মজবুত করার লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছে শাসকদল। বিজেপি-র সেই সংগঠন কোথায়—প্রশ্ন এক শীর্ষ তৃণমূল নেতার।
সংগঠন তেমন মজবুত তো নয়ই, উপরস্তু জেলা বিজেপি-র মাথাব্যথা গোষ্ঠীকোন্দলও। প্রশ্ন উঠেছে জেলা সভাপতির প্রতি আনুগত্য ও দল পরিচালনার কৌশল নিয়েও। যার কিছুটা আঁচ শুক্রবারই সিউড়িতে পাওয়া গিয়েছে। প্রকাশ্যেই শ্যামাপদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিজেপির কিসান মোর্চার জেলা সভাপতি। শ্যামাপদের ঘোর বিরোধী হিসেবে পরিচিত দলের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘‘আগে দেখেছি, বিজেপি-র সামান্য কর্মীকেও এ ভাবে থানায় টেনে নিয়ে আসতে পারত না পুলিশ। আট–নয় ঘণ্টা জেরা করা তো দূরের কথা। অথচ সেটাই আমাদের মাননীয় জেলা সভাপতির সঙ্গে ঘটছে। বহিষ্কৃত হলেও মন থেকে এই ঘটনা মেনে নিতে পারছি না। এটা দলের অসম্মান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy