দলে আসা জয়ী সদস্যদের হাতে পতাকা তুলে দিচ্ছেন মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
জেলাকে বিরোধীশূন্য করবেন বলে জানিয়েছিলেন। শনিবার যুব তৃণমূলের সভাপতি তথা দলের জেলা পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এলেন পুরুলিয়ায়। আর এ দিনই বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিলেন রঘুনাথপুর ১ ব্লক এলাকার পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন সদস্য। তাদের সঙ্গেই তৃণমূলে যোগ দেন ওই এলাকার সমিতির আরও এক নির্দল সদস্যও। এই দলবদলে অবশ্য রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতি ও বেড়ো ও নতুনডি পঞ্চায়েতের সমীকরণে কিছু বদল হচ্ছে না। সমিতি ও দুই পঞ্চায়েত থাকছে বিজেপির হাতেই।
শাসকদলের নেতারা জানান, এ দিন বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির সদস্য মমতা মণ্ডল, নতুনডি পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য নমিতা বাউড়ি ও বেড়ো পঞ্চায়েতের বিজেপির সদস্য শেখ আতাউল্লাস। যোগ দিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির নির্দল সদস্য টুম্পা বাউড়িও। তবে টুম্পা নির্বাচনে তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছিলেন। পরে তাঁকে সমর্থন করেন বিরোধীরা। দলবদলের সময়ে অভিষেক পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়ার উদ্দেশে রওনা হয়ে গিয়েছেন। জেলা কার্যালয়ে ওই চার জনের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো ও রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি।
এ দিন তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিজেপির তিন সদস্য জানান, এলাকার উন্নয়নে করতে হলে তৃণমূল ছাড়া বিকল্প নেই বলেই তাঁরা দলবদল করেছেন। তবে জেলা বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কমলাকান্ত হাঁসদার অভিযোগ, ‘‘নির্বাচনের ফল গণনার পরের দিন থেকেই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের নেতারা আমাদের জেতা সদস্যদের ভয় আর প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন।’’ যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
সূত্রের খবর, জেলায় এসে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের নিয়ে ভোটের ফলের নিয়ে পর্যালোচনা করেন অভিষেক। শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ তিনি পৌঁছেছিলেন পুরুলিয়ার সার্কিট হাউসে। রাতেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো, যুব সভাপতি সুশান্ত মাহাতো ও বেশ কিছু বিধায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ নেতা। সূত্রের খবর, জেলার শীর্ষ নেতাদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। দলের কাজে ঢিলেমি হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন অভিষেক।
শনিবার দুপুরেও জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতা, ব্লকের সভাপতি, পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি, জেলা পরিষদের জেতা সদস্যদের নিয়ে আর এক দফা বৈঠক করেন অভিষেক। সেই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন জেলাপরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো। দল সূত্রের দাবি, তাঁকে ডাকাই হয়নি। বৈঠকে পুরুলিয়ার সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাতো, কাশীপুরের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া ও বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেনকে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। তাঁরা জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর সঙ্গে সমন্বয় রেখে জেলার প্রতিটি ব্লকে নির্বাচনের ফল পর্যালোচনা করে পনেরো দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবেন অভিষেকের কাছে। যে ব্লকগুলিতে দলের ফল খারাপ হয়েছে, সেখানে নেতৃত্বে বদল আনা হতে পারে বলে বৈঠকে ইঙ্গিত দিয়েছেন অভিষেক।
জেলা পরিষদে আসন কমেছে। ছ’টি পঞ্চায়েত সমিতি হারিয়েছে শাসকদল। বেশ কিছু পঞ্চায়েতেও হেরেছে তারা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার জেলায় প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ করলেও তার ফল আমরা পাইনি। জেলার অনেক এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ আর জীবনযাত্রার মান দেখে মানুষ দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। পর্যবেক্ষক নির্দেশ দিয়েছেন, জনপ্রতিনিধিদের আচরণ বদলাতে হবে। আরও বেশি করে মানুষের কাছে যেতে হবে। যেখানে ফল খারাপ হয়েছে, সেখানে সংগঠন ঢেলে সাজানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy