Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

‘দোকান কবে পাব’, খেদ ব্যবসায়ীদের

বিষ্ণুপুর শহরের প্রধান বাসস্ট্যান্ড রসিকগঞ্জে। এই বাসস্ট্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। বছর তিনেক আগে রাজ্য পরিবহণ দফতর ওই বাসস্ট্যান্ড নতুন করে তৈরিতে হাত দেয়।

অপেক্ষা: বিষ্ণুপুরের রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে এই দোকানঘরগুলি তৈরির কাজ ঢিমে তালে চলছে বলে অভিযোগ। ছবি: শুভ্র মিত্র

অপেক্ষা: বিষ্ণুপুরের রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে এই দোকানঘরগুলি তৈরির কাজ ঢিমে তালে চলছে বলে অভিযোগ। ছবি: শুভ্র মিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩১
Share: Save:

নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহারের অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এ বার কাজ ঢিমেতালে চলছে বলে অভিযোগ তুললেন বিষ্ণুপুরের রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের ব্যবসায়ীরা। যদিও রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের দায়িত্বে থাকা বিষ্ণুপুর পুরকর্তৃপক্ষ কাজে দেরির অভিযোগ মানতে চাননি।

বিষ্ণুপুর শহরের প্রধান বাসস্ট্যান্ড রসিকগঞ্জে। এই বাসস্ট্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। বছর তিনেক আগে রাজ্য পরিবহণ দফতর ওই বাসস্ট্যান্ড নতুন করে তৈরিতে হাত দেয়। বাসস্ট্যান্ড ঘিরে থাকা দোকান সরিয়ে দেওয়া হয় তখন। সেখানকার ব্যবসায়ীরা পেট চালাতে নানা পেশায় যুক্ত হন। তাঁরা অপেক্ষায় ছিলেন, বাসস্ট্যান্ড চালু হলে দোকান খুলতে পারবেন তাঁরা। বাসস্ট্যান্ড তৈরির পরে ২০১৮ সালে উদ্বোধনও হয়। কিন্তু টাকার অভাবে দোকানগুলি আর তৈরি করতে পারেনি পুরসভা।

তা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। অবিলম্বে দোকান তৈরির দাবিতে আন্দোলনে নামেন ব্যবসায়ীরা। হস্তক্ষেপ করতে হয় জেলাশাসককেও। তারপরে পরিবহণ দফতর ওই দোকান তৈরির জন্য নতুন করে আরও টাকা বরাদ্দ করে।

তাতে দোকান তৈরির থমকে যাওয়া কাজ শুরু হলেও গতি নেই বলে ক্ষোভ ব্যবসায়ীদের। তাঁদের দাবি, হাতে গোনা কয়েক জন মিস্ত্রিকে দিয়ে ১৩৮টি দোকান তৈরির কাজ চলছে। কবে শেষ হবে কে জানে! এ দিকে টাকাক অভাবে তাঁদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। আর কত দিন অনটনের মধ্যে দোকান চালাতে হবে?

বিষ্ণুপুর রসিকগঞ্জ সরকারি বাসস্ট্যান্ড ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির মুখপাত্র অরুণ দে-র দাবি, ‘‘গত বছরের ২৩ জুলাই পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ঝা চকচকে বাসস্ট্যান্ডের উদ্বোধন করলেন। কিন্তু আমরা দোকান পেলাম না। পেট চালাতে এখন দোকানের মালিক অন্যের দোকানের কর্মচারী হয়েছেন, কেউ ভ্যান চালাচ্ছেন, কেউ লটারি বিক্রি করছেন। জমানো টাকা সব শেষ। খরচ জোগাড় করতে না পেরে কেউ ছেলেমেয়ের পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছেন, কেউ আবার স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখেছেন। কিন্তু এ ভাবে আর কত দিন?’’ তাঁর দাবি, ‘‘শুনেছি এক কোটি টাকার উপরে পরিবহণ দফতর দোকান তৈরির জন্য বরাদ্দ করেছে। তাহলে দোকান তৈরিতে গতি থাকবে না কেন?’’ ওই সমিতির অভিযোগ, ইতিমধ্যে নির্মাণ সামগ্রীর গুণমান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁরা বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসকের কাছে বিষয়টি দেখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

দোকান তৈরির দায়িত্বে থাকা বিষ্ণুপুর পুরসভার উপপুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায় ধীরগতির কাজের অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘দ্রুত গতিতেই দোকান তৈরি হচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের শেষে বিষ্ণুপুর মেলার সময়ে নথিভুক্ত দোকানদারেরা নতুন দোকান পাবেন। তবে অনেকে নাম ভাঁড়িয়ে নতুন দোকান পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁরা সফল হবেন না। পুরসভা এ ব্যাপারে সজাগ রয়েছে।’’

রসিকগঞ্জ সরকারি বাসস্ট্যান্ড ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সদস্যেরা অবশ্য বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসন তথা মহকুমাশাসক নিজে নতুন দোকানঘর বিলি বণ্টনে থাকুন, সেটাই আমরা চাই।’’ মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘আগে দোকানঘর তৈরির কাজ শেষ হোক। কমিটি তৈরি করে দোকানঘর বিলি বণ্টনের ব্যবস্থা করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bishnupur Bishnupur Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy