Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

৯৮ শতাংশ জিও-ট্যাগিং করে নজির

রবিবার মহম্মদবাজার ও সোমবার সিউড়িতে আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনী থেকে যাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন, সেই তালিকায় ছিলেন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও জেলা পরিষদের সভাধিপতিরা। সে জন্য কয়েকটি ব্লকের বিডিও, স্থানীয় পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন তাঁরা।  

বৃহস্পতিবারের মধ্যেই ৮১ হাজারেরও বেশি উপভোক্তাদের জিও ট্যাগিং হয়েছে। ফাইল চিত্র।

বৃহস্পতিবারের মধ্যেই ৮১ হাজারেরও বেশি উপভোক্তাদের জিও ট্যাগিং হয়েছে। ফাইল চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৭
Share: Save:

উৎকণ্ঠা কাটিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আবাস যোজনার বাড়ি প্রাপকদের ৯৮ শতাংশের জিও ট্যাগিং সম্পন্ন করতে সমর্থ হল বীরভূম জেলা প্রশাসন। যা রাজ্যের অন্য জেলার সাপেক্ষে যথেষ্ট ভাল বলেই ধরা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবর্ষে জেলায় সরকারি আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির অনুমোদন ছিল ৮৩ হাজার ৩৫৬টি। সেখানে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই ৮১ হাজারেরও বেশি উপভোক্তাদের জিও ট্যাগিং হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) দীপ্তেন্দু বেরা এবং আবাস যোজনার জেলা নোডাল অফিসার শুভঙ্কর ভট্টাচার্যেরা বলছেন, ‘‘চেষ্টা হচ্ছে ১০০ শতাংশ লক্ষ্যপূরণ করার। এখানে মূল বাধা চিহ্নিত উপভোক্তাদের জমি ও নথিপত্রের সমস্যা। জেলাশাসক নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে শিবির করে সেই সমস্যা মেটানোর। সেই চেষ্টাই করা হবে।’’
ঘটনা হল, শেষবেলায় এসেও প্রায় ৪০ শতাংশ সরকারি আবাস যোজনার প্রাপকদের জিও ট্যাগিং হয়নি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন শাসকদলের নেতারা। রবিবার মহম্মদবাজার ও সোমবার সিউড়িতে আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনী থেকে যাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন, সেই তালিকায় ছিলেন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও জেলা পরিষদের সভাধিপতিরা। সে জন্য কয়েকটি ব্লকের বিডিও, স্থানীয় পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন তাঁরা।

সেই উৎকণ্ঠা কাটিয়ে শেষবেলায় ভাল কাজ হওয়ায় খুশি শাসক শিবির। সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলছেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ও ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় থাকা জন প্রতিনিধিদের মিলিত চেষ্টায় ভাল কাজ হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য ছিল, দু-একটি ব্লকে কাজ কিছু কম হয়েছিল ঠিকই। তবে শেষবেলায় পরিসংখ্যান ভাল হবে সেটা প্রত্যাশিত ছিল। শাসকদল জন প্রতিনিধিদের চাপ দেওয়ায় কাজটা আরও সুবিধা হয়েছে। ২০১১ সালে আর্থ-সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষা অনুযায়ী যে সকল পরিবারের পাকা বাড়ি নেই সেগুলিকে চিহ্নিত করে ধাপে ধাপে এই বাড়ি উপভোক্তাদের নামে দেওয়া হয়। এই প্রকল্পে তিনটি কিস্তিতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মেলে। এ ছাড়াও উপভোক্তা পান ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে ৯০ দিনের মজুরি।

তালিকা অনুযায়ী প্রাপকদের সত্যিই পাকা বাড়ি আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখে তালিকা চূড়ান্ত করা প্রথম ধাপ। তার পরের ধাপ রেজিস্ট্রেশন। তার পর আসে জিও ট্যাগিং। এরপরে উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার কথা। ব্লক ও পঞ্চায়েতের উদ্যোগে এ কাজ হচ্ছিল। সেখানেই জেলার বেশ কয়েক’টি ব্লক পিছিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছিল। সাঁইথিয়া-নানুরের মতো দু’একটি ব্লক লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে না বলায় সেই কোটা অন্য ব্লকে দেওয়া হয়েছিল।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতভিত্তিক বাড়ি প্রাপকদের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে পাকাবাড়ি রয়েছে বা এই প্রকল্পে আসার যোগ্য নন এমন উপভোক্তাদের নাম বাদ দিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করে, সেই চূড়ান্ত তালিকা প্রতিটি পঞ্চায়েতে টাঙিয়ে রাখতে বলা হয়েছিল। যাতে কোনও অভিযোগ থাকলে প্রশাসনের নজরে আসে। চূড়ান্ত তালিকায় থাকা উপভোক্তাদের সাহায্যের জন্য ছিলেন আবাস বন্ধুরা। যাতে প্রকৃত উপভোক্তার বদলে অন্য কারও অ্যাকাউন্টে টাকা না যায়, সে জন্য সচিত্র ব্যাঙ্কের পাসবই, আধার কার্ড ইত্যাদি ভাল ভাবে যাচাই করা হয়েছে। সেটা করতে গিয়ে আর্থ-সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষা লিস্টে থাকা প্রায় ৫০ হাজার বাড়ি প্রাপকের নাম বাদ গিয়েছে।

তাই কিছুটা হলেও সময় লেগেছে। তার পরেও ৯৮ শতাংশ উপভোক্তার জিও-ট্যাগিং করে বাঁকুড়া, উত্তর দিনাজপুর, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়া সহ বেশ কয়েকটি জেলাকে যথেষ্ট পিছনে ফেলে দিয়েছে বীরভূম।

অন্য বিষয়গুলি:

Birbhum Suri Geo Taggging
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy