Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
TMC 21 July Rally

খরচ বড় বালাই, একুশে ট্রেনই ভরসা তৃণমূলের

তৃণমূল সূত্রে খবর, আগে যেখানে ফি-বছর একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে ৩০০-৪০০টি বাস নেওয়া হত, সেখানে গত বছর এবং এ বারেও ৫০টি বাসও জেলা থেকে যাচ্ছে না।

সিউড়ি থেকে হুল এক্সপ্রেসে রওনা দিলেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। শনিবার সিউড়ি স্টেশনে।

সিউড়ি থেকে হুল এক্সপ্রেসে রওনা দিলেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। শনিবার সিউড়ি স্টেশনে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৪ ০৫:৪৮
Share: Save:

‘শহিদ সমাবেশে’ যোগ দিতে বীরভূম জেলা থেকে কলকাতা যাবেন এক লক্ষ কর্মী। এমন লক্ষ্যই স্থির করেছে জেলা তৃণমূল। তবে তাঁদের কলকতা নিয়ে যেতে বাস নয়, মূলত ট্রেন ও ছোট গাড়িই ভরসা দলের। জেলা বাস মালিক সংগঠনের দাবি, মাত্র ১৫টির মতো বাস নেওয়া হয়েছে।

তৃণমূল সূত্রে খবর, আগে যেখানে ফি-বছর একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে ৩০০-৪০০টি বাস নেওয়া হত, সেখানে গত বছর এবং এ বারেও ৫০টি বাসও জেলা থেকে যাচ্ছে না। অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক বাস ভাড়ার করার রেওয়াজে বদল এসেছে। খরচ বাঁচাতেই এই রাস্তা বলে দলের নেতারা জানাচ্ছেন। তৃণমূলের হিসাব, সকলকে বাসে করে কলতাকায় নিতে হলে ৩৫ থেকে ৪০ কোটি টাকা খরচ। সেই ঝামেলা এড়িয়ে রামপুরহাট, সাঁইথিয়া, আমোদপুর, সিউড়ি, দুবরাজপুর ও বোলপুর থেকে হাওড়া ও শিয়ালদহগামী বিভিন্ন ট্রেনে কর্মী-সমর্থকেরা যাচ্ছেন। পাশাপাশি ছোট গড়ি তো থাকছেই।

জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মূল লক্ষ্য তো শহিদ দিবসে দলবদ্ধ ভাবে কলকাতায় যাওয়া। সেটা বাস, ট্রেন না ছোট গাড়িতে, বিবেচ্য নয়।’’ তবে, ব্লক স্তরের নেতাদের অনেকেই আড়ালে বলছেন, ‘‘কেষ্টদা থাকতে এই সব খরচ নিয়ে ভাবতে হত না। লোকসভা নির্বাচনে বিস্তর খরচ হয়ে গিয়েছে। বাস ভাড়া করতে যে পরিমাণ খরচ হবে সেটা আন্দাজ করেই পিছিয়ে আসতে হয়েছে। তা ছাড়া বাসের খরচের চার ভাগের এক ভাগে সম পরিমাণ লোক নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’’

তৃণমূলের এক নেতা জানালেন, জেলা থেকে কলকাতা যেতে ভাল বাসগুলিতে কমপক্ষে ২২-২৫ হাজার টাকা ভাড়া লাগবে। ব্লক ভেদে খরচ আরও বেশি। লাক্সারি বাস হলে, সেই খরচ ৩০ হাজার পেরিয়ে যাচ্ছে। একটি বাসে ৫০ জনকে নিয়ে যাওয়া যায়। খাওয়া খরচ ১০ হাজার জুড়লে টাকার অঙ্ক ৪০ হাজার। পরিবর্তে ট্রেনে খরচ অনেকটাই কম। ২০২২ সাল পর্যন্ত রাজনগর ব্লক থেকে ২১শে জুলাইয়ে অন্তত ৮-১০টি বাস গিয়েছে। এ বারে একটিও বাস করা হয়নি। সব কর্মী সিউড়ি ও সাঁইথিয়া থেকে ট্রেনে যেতে শুরু করেছেন শনিবার দুপুর থেকে। ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুকুমার সাধু বলেন, ‘‘১৫০০ পাস বিলি হয়েছে। ব্লক থেকে ১০০০-১২০০ কর্মী যাচ্ছেন।’’ খয়রাশোল ব্লকেও আগে প্রতিটি অঞ্চল থেকে একটি করে বাস যেত। কিন্তু সেই রেওয়াজে বদল এসেছে গতবার থেকে। এ বার একটিও বাস করা হয়নি। একই ভাবে সিউড়ি ১ ও ২ ব্লক থেকে প্রায় ৮ হাজার লোক নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অধিকাংশই ট্রেনে যাবেন সিউড়ি ও আমোদপুর থেকে। সঙ্গে প্রচুর ছোট গাড়ি থাকছে। মুরারই, নলহাটি থেকেও কোনও বাস যাচ্ছে না।

দুবরাজপুর ব্লক তৃণমূল অবশ্য ট্রেনের পাশাপাশি ৬টি বাস নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্লক কোর কমিটির আহ্বায়ক রফিউল থান। দুবরাজপুর শহর থেকে শ’পাঁচেক কর্মী ট্রেনে কলকাতা যাবেন জানিয়েছেন দলের শহর সভাপতি স্বরূপ আচার্য। নানুর ও লাভপুর থেকেও কয়েকটি বাস যাচ্ছে। দলের অন্দরেই অবশ্য প্রশ্ন, এত সংখ্যক কর্মী-সমর্থককে কি কেবল কয়েকটি ট্রেনেই পাঠানো সম্ভব? সে ক্ষেত্রে বহু মানুষ ইচ্ছা থাকলেও যেতে পারবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Birbhum 21 July
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE