নলহাটিতে নিজের বাড়িতে বিভাস অধিকারী। নিজস্ব চিত্র
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় নাম জড়ানোর পরেই সম্প্রতি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) তলবে কলকাতা গিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সেখান থেকে ফেরার পরেই বুধবার রাজনীতি থেকে ‘সন্ন্যাস’ নেওয়ার ঘোষণা করলেন বিভাস অধিকারী। এ দিন নলহাটি ২ ব্লকের কৃষ্ণপুর গ্রামে নিজের আশ্রমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সে কথা জানিয়ে দেন ওই ব্লকেরই প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি বিভাস।
এ দিন বিভাস বলেন, ‘‘রাজনীতি এবং ঠাকুরের সেবা একসঙ্গে হয় না। ২০১৯ সালে আমার বড়সড় পথ দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ঠাকুরের কৃপায় বেঁচে রয়েছি। এখনও আমার চিকিৎসা চলছে।’’ নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ধৃত কুন্তল ঘোষ ও গোপাল দলপতির মুখে বিভাস অধিকারীর নাম শোনা গিয়েছিল। তিনি মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেন দু’জন। বিভাস অবশ্য এ দিন ফের বলেন, ‘‘যাঁরা আমার নাম মুখে আনছেন তাঁরা আমাকে চেনেনও না। আমিও তাঁদের চিনি না। তবে ডিএড কলেজ থাকার সুবাদে মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল আমার।’’
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁপ সম্পর্ক নিয়েও এ দিন মুখ খুলেছেন বিভাস। তিনি বলেন, ‘‘আশ্রম উদ্বোধন করতে মুখ্যমন্ত্রী আসতে পারেননি বলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছিলেন। তাই অনেকে ভাবছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমার কাছের মানুষ।”
মাস তিনেক আগে তাঁর কলকাতার ফ্ল্যাট ইডি সিল করে দিয়েছিল। মঙ্গলবার তল্লাশির পরে সেই ফ্ল্যাটের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে বলে বিভাসের দাবি। তিনি বলেন, ‘‘ইডি আমার সমস্ত কাগজপত্র দেখে খুশি। তদন্তকারীরা পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। আমি সিবিআই এবং ইডির তদন্তে খুশি। আমাকে যতবার ডাকা হবে আমি হাজিরা দিতে প্রস্তুত।’’
ফ্ল্যাটে ইডির হানা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ওই ফ্ল্যাট ঠাকুরের নামে রয়েছে। বহু ভক্ত চিকিৎসা জন্য কলকাতায় যান। ফ্ল্যাটে তাঁদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়। তাই ইডির কাছে ফ্ল্যাটের সিল খুলে দেওয়ার আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ইডি ফ্ল্যাটের সিল ভেঙে খুলে দিয়েছে। ফ্ল্যাটের প্রতিবেশীরা যে ট্রাঙ্ক ও পেটির কথা বলছেন সেটা ওষুধের। ইডি তল্লাশি করেও ওষুধ পেয়েছে।’’
তাঁর সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সম্পর্ক নিয়েও চর্চা চলছে। এ দিন বিভাস সে প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমি ঠাকুরের প্রচার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে করি। বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম ও কংগ্রেসের বহু ভক্ত রয়েছে। এই নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণের কটাক্ষ, ‘‘ঠাকুর ঘরে কে, আমি কলা খাইনি হচ্ছে বিভাসের অবস্থা। গ্রেফতার না হওয়ার আগেই বলছেন নির্দোষ। নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত না থাকলে কেন ইডি ও সিবিআই ডাকছে?’’
বিভাসের রাজনীতি ছাড়া নিয়ে তৃণমূলের জেলা সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ইডি-সিবিআই নিয়ে কিছু বলব না। তবে বিভাস অধিকারী অসুস্থ অনেকদিন ধরে। শুনেছি তাঁর অস্ত্রোপচার হবে। তাই দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।’’ বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘উনি কতবার দল ছাড়বেন আবার যোগ দেবেন জানি না। রাজ্যের বহু শিক্ষক নিয়োগ থেকে বঞ্চিত। যোগ্যদের চাকরি আর এই সব দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষজনের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy