যন্ত্র দেখতে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র
নোট বদলের চোটে মিষ্টি ব্যবসাও লাটে ওঠার জোগাড়!
রোজকার নগদ লেনদেনের বাজারে ডিজিটাল পেমেন্টে কথা ভেবে কার্যত অসুবিধার মধ্যে পড়বেন বলেই মনে করছেন তাঁরা। সমস্যায় পরে, অনেকেই অবশ্য ‘ক্যাশলেস বিনিময়’-এও আগ্রহী। রবিবার মিষ্টি ব্যবসায়ীদের দু’ দিনের দ্বিবার্ষিক রাজ্য সম্মেলনে ঘুরে ফিরে উঠে এল তেমন কথাই। এ দিন থেকেই রামপুরহাট পুর ময়দানে শুরু হয়েছে ওই সম্মেলন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ১৫০০ প্রতিনিধি যোগদান করেছেন। মূলত মিষ্টি শিল্পের উপযুক্ত মান বজায় রেখে এই শিল্পকে আগামী দিনে যন্ত্র নির্ভর করার লক্ষ্যে এই সম্মেলন। এ ছাড়া সমিতির সদস্যদের নানান অভাব অভিযোগ আলোচনা হয় সম্মেলনে। সম্মেলনে উদ্বোধন করেন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধায়।
পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক, রবীন কুমার পাল বলেন, ‘‘৯ নভেম্বর কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার দিন ছিল। নোট বদলের সিদ্ধান্তে বেতন দেওয়া তো হয়নি। পরে ব্যাঙ্ক থেকে পর্যাপ্ত নোট না পাওয়ার জন্য কর্মীদের বেতন দিতে দেরি হয়েছে।” সমিতির সভাপতি রামজী চৌরাসিয়া বলেন, ‘‘২০০০ টাকা নোট বাজারে আসার জন্য প্রথম দিকে ব্যবসা অনেক ক্ষেত্রে লোকসান হয়েছে।” তিনি জানান, কেউ যদি ৫০ টাকার সামগ্রী কিনছেন সেক্ষেত্রে খরিদ্দারকে ২০০০ টাকাতে ১৯৫০ টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে। কিন্তু ওই ভাবে কতজনকে আমরা টাকা ফেরত দিতে পারব!’’ তাঁদের দাবি, নোট বদলের ধাক্কায় প্রথম দিকে ৭৫ শতাংশ ব্যবসা লোকসান হয়েছে। এখন সেই লোকসান ২৫ শতাংশতে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি এমনই, নগদ টাকার অভাবে কার্ডে খুচরো মিষ্টির দামও নিতে হচ্ছে। যে সব দোকানে কার্ডে পেমেন্ট নেওয়ার ব্যবস্থা নেই, তাঁরা মেশিন বসাবার কথা ভাবছেন।
কোচবিহারের দিনহাটা থেকে সম্মেলনে এসেছিলেন দেবাশিস সাহা। তিনি বলেন, ‘‘দোকানের কর্মচারীরা যারা অনেকেই ঠিক মতো নাম সাক্ষর করতে পারেন না, কমপিউটারের ব্যবহার জানেন না। যারা মুখে মুখেই হিসাব কষে দেয় তাঁদের কাছে তিনটে রসগোল্লা, তিনটে সন্দেশ বিক্রির জন্য ডেবিট কার্ড কি করে করবে!’’ কর্মচারীদের টাকা দেওয়া সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়। হাওড়া জেলার বেতাই থেকে আসা মিষ্টি ব্যবসায়ী শৌলেন্দ্র নাথ পাল, জলপাইগুড়ি থেকে আসা মিষ্টি ব্যবসায়ী অমিতাভ অধিকারী, ঘাটাল থেকে আসা মিষ্টি ব্যবসায়ী তথা ঘাটাল পুরসভার পুরপ্রধান বিভাষ ঘোষ, বাঁকুড়া জেলার খাতড়া থেকে আসা ব্যবসায়ী তাপস সিংহরা জানান, নোট বদলের ফলে আগে মানুষ এটিএম লাইনে, ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলে নিজেদের কাজ সারছেন। এই ক’দিনে তুলনামূলক ভাবে নগদে মিষ্টি কেনা কমেছে। ডিসেম্বর মাসজুড়ে রাজ্যে নানা মেলা-উৎসব-পরব। সেই সব জায়গায়তেও মিষ্টির বিক্রি কতখানি হবে, সে নিয়েও কপালে ভাঁজ তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy