বিরোধী মিছিলের পথ আটকে দাঁড়াল পুলিশ। রামপুরহাটে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
হাতে মাত্র আর দু’দিন। শনিবার পর্যন্ত রামপুরহাট মহকুমা এলাকায় জেলা পরিষদের ১৮টি আসনে কংগ্রেস, সিপিএম, ফরওয়ার্ড ব্লক, বিজেপি একটিও মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি। মহকুমা এলাকার আটটি পঞ্চায়েত সমিতির ১৮৯টি আসনে এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৭৬টি আসনেও এখনও বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি। বিশেষ করে রামপুরহাট ২, মুরারই ১, মুরারই ২, নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির আসনে একটিও মনোনয়ন জমা পড়েনি।
মনোনয়নের খাতা খুলতে শনিবার রামপুরহাট মহকুমা এলাকার বিভিন্ন পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের আসনগুলিতে প্রার্থী দেওয়ার জন্য রামপুরহাট মহকুমাশাসকের কার্যালয়কে বেছে নিয়েছিল কংগ্রেস, বামফ্রন্ট এবং বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু, তাদের সেই মরিয়া চেষ্টা এ দিন কার্যত ব্যর্থ হল। তার জন্য পুলিশ, প্রশাসনকে দায়ি করেছে বিজেপি, কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট। বিরোধীদের অভিযোগ, রামপুরহাট মহকুমাশাসকের কার্যালয় অফিসের সামনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লাঠি, রড, হাতে নিয়ে সশস্ত্র ভাবে জমায়েত করেছিল। পুলিশ তাদের না সরিয়ে উল্টে বিরোধীদের মনোনয়ন জমায় বাধা দেয়।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ জানান, পুলিশ-প্রশাসনকে আগাম জানিয়ে শনিবার রামপুরহাট ১ এবং ২— এই দুই পঞ্চায়েত সমিতির বামফ্রন্ট প্রার্থীদের গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের মনোনীত প্রার্থী সহ তাঁদের দু’জন করে প্রস্তাবকদের নিয়ে রেলওয়ে চ্যাম্পিয়ন গ্রাউন্ডে জমায়েত করা হয়। প্রার্থী সহ প্রস্তাবকদের নিয়ে প্রায় হাজার দেড়েক বামপন্থী কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রামপুরহাট মহকুমাশাসক ভবনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। মাঝ পথে রেলওয়ে ইনস্টিটিউটের কাছে পুলিশ ব্যারিকেড করে পথ আটকায়। সঞ্জীব বর্মণের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ আমাদের প্রার্থী-সহ প্রস্তাবক নিয়ে তিন জনকে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেও তাঁরা প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও নিরাপত্তা দিতে রাজি হয়নি।’’
একই অভিযোগ কংগ্রেস বিধায়ক মিল্টন রসিদের। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে রাজি হয়নি। তাই আমরা ঝুঁকি নিয়ে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নে নিয়ে যেতে চাইনি।’’ বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস চৌধুরীর আবার অভিযোগ, শুক্রবার লিখিত ভাবে পুলিশ, প্রশাসনকে প্রার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। সেই মতো শনিবার সকাল থেকে রামপুরহাট মহকুমা এলাকার মুরারই থেকে ময়ূরেশ্বর বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা করার জন্য রামপুরহাটের দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হন। কিন্তু, পুলিশ প্রশাসন নানা অছিলা দেখিয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ সময় দুপুর তিনটে বাজতে পনেরো মিনিট আগে দশ জন প্রার্থীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা পুলিশ, প্রশাসনের এই নির্দেশ মানতে রাজি নই।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দিনের শেষে রামপুরহাট মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে তৃণমূলের পাঁচটি মনোনয়ন জমা পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy