রক্ত দিচ্ছেন পুরুলিয়ার ব্লাড ব্যাঙ্কের আধিকারিক। নিজস্ব চিত্র
এনআরএস-কাণ্ড নিয়ে রাজ্যের চিকিৎসা-ক্ষেত্র যখন তোলপাড়, সেই সময় মুর্মূষু রোগীদের জন্য রক্ত দিতে এগিয়ে এলেন পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা। চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে শুক্রবার কালো ব্যাজ পরে রোগী দেখলেন তাঁরা। তারই ফাঁকে বিশ্ব রক্তদাতা দিবসে (১৪ জুন) ৪২ প্যাকেট রক্তও দিলেন।
হাসপাতালের সুপার শিবাশিস দাস বলেন, ‘‘টানা কয়েক মাস ধরে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের তীব্র সঙ্কট চলছে। এই পরিস্থিতিতে রোগীদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স থেকে সমস্ত শ্রেণির কর্মীরা রক্তদান করতে এগিয়ে এসেছেন।’’ হাসপাতালের কোয়ালিটি ম্যানেজার দেবদীপ মুখোপাধ্যায় জানান, এ দিন ব্লাড ব্যাঙ্কে মোটে ২৫ প্যাকেট রক্ত মজুত ছিল। হাসপাতালের শিবির থেকে ৪২ প্যাকেট রক্ত সংগ্রহ হওয়ায় ভাঁড়ার কিছুটা ভরল।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আউটডোরের দোতলায় রক্তদান চলছে। ডাক্তার থেকে নার্স, হাসপাতালের কর্মী, এমনকি চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরাও রক্ত দিতে এসেছিলেন। রক্ত দিয়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ দীনবন্ধু সাহানা বলেন, ‘‘কালো ব্যাজ পরে আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি এই পেশায় দায়বদ্ধতাও রয়েছে। তাই রোগী দেখার ফাঁকেই রক্ত দিলাম।’’ স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের ডাক্তার সুষেণ হাঁসদা বলেন, ‘‘ডাক্তার নিগ্রহের প্রতিবাদ চলবে। আবার আমরা রোগীদের পাশ থেকেও সরছি না।’’ জেলা পুলিশ হাসপাতালের ডাক্তার দিলীপ বাস্কে জানান, বিশ্ব রক্তদাতা দিবসে তাঁরা রক্তদান করবেন বলে আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে এই শিবির সমাজের কাছে আলাদা বার্তাও পৌঁছে দিল।
পুরুলিয়া জেলা সদরের ব্লাড ব্যাঙ্কের উপরে জেলার বড় অংশের মানুষ নির্ভরশীল। ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তাপসকুমার রায় জানান, প্রতি মাসে এখানে সাতশো থেকে সাড়ে সাতশো প্যাকেট রক্তের চাহিদা থাকে। যার মধ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় তিনশো। কিন্তু শীত ফুরনোর সঙ্গে সঙ্গেই রক্তের জোগান কমতে শুরু করে। লোকসভা ভোটের আগে থেকে শিবির কমে যাওয়ায় টান পড়েছে রক্তের ভাঁড়ারে।
তাপসবাবু বলেন, ‘‘চলতি মাসে এখনও পর্যন্ত জেলায় দু’টি শিবির হয়েছে। রক্ত পাওয়া গিয়েছে ১৭৪ প্যাকেট। বাকি সময়টা আরও শিবির না হলে কী যে হবে, জানি না।’’ পুরুলিয়ার অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিও অবশ্য রোগীদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধকারিক অনিলকুমার দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের জোগান অত্যন্ত কম থাকায় আমরা বিভিন্ন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে বলেছি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে। পালা করে বিভিন্ন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা রক্ত দিচ্ছেন।’’ তাপসবাবু জানান, মে মাসে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকে ১৭০ ইউনিট রক্ত পাওয়া গিয়েছিল বলে সামাল দেওয়া গিয়েছে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy