Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bankura University

অস্থায়ী অধ্যাপক চাই, ক্লাস প্রতি ৩০০, মাসে ৪৮০০ টাকা, বিজ্ঞপ্তি বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে, পদার্থবিদ্যায় অস্থায়ী লেকচারার নিয়োগ করা হবে। যোগ্যতা হতে হবে স্নাতকোত্তর। থাকতে হবে পিএইচডি অথবা হতে হবে নেট উত্তীর্ণ।

Bankura University advertises for temporary lecturers on per class payment

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে সমালোচনা। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৬:৩৭
Share: Save:

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের ক্লাস নেবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। ‘অঙ্কুর’ নামে বাঁকুড়া পুলিশের সেই প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক মিটতে না মিটতেই নতুন বিতর্ক। এ বারেরও ঘটনা সেই বাঁকুড়ার।

সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএইচডি ডিগ্রিধারী অথবা নেট উত্তীর্ণ অস্থায়ী লেকচারার চেয়েছে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়। তাতে বলা হয়েছে, বেতন দেওয়া হবে ক্লাস প্রতি ৩০০ টাকা। গত ২৪ মার্চ প্রকাশিত সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনায় সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলির তরফে কড়া সমালোচনা করা হয়েছে এর। সমালোচনার মুখে পড়ে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত ২৪ মার্চের বিজ্ঞপ্তি বলছে, পদার্থবিদ্যার জন্য অস্থায়ী লেকচারার নিয়োগ করা হবে। এই পদে চাকরি পেতে হতে হবে স্নাতকোত্তর। আরও জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে থাকতে হবে পিএইচডি অথবা হতে হবে নেট উত্তীর্ণ। বিজ্ঞপ্তিতে লেকচারারদের বেতন হিসাবে লেখা রয়েছে ক্লাস প্রতি ৩০০ টাকা। বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে সর্বাধিক চারটি ক্লাস করতে পারবেন ওই লেকচারাররা।

বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে সমাজমাধ্যমে। এক জন শ্রমিকের বেতন যেখানে দৈনিক ৫০০-৬০০ টাকা, সিভিক ভলান্টিয়ারদের মাসিক বেতন ৯০০০ টাকা, সেখানে পদার্থবিদ্যার মতো একটি বিষয়ে এক জন পিএইচডি ডিগ্রিধারী অথবা নেট উত্তীর্ণ লেকচারার কী করে ওই সামান্য বেতনে কাজ করবেন, এই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বিভিন্নমহল। এসএফআইয়ের বাঁকুড়া জেলার সম্পাদক অনির্বাণ গোস্বামী বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিজ্ঞপ্তি শুধু শিক্ষাকে অপমান করা নয়, এ রাজ্যের সমস্ত শিক্ষিত যুবককে অপমান করা। আমরা ধিক্কার জানাই।’’

বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপির জেলা সভাপতি সনুপ পাত্র বলেন, ‘‘এ রাজ্যের সরকারের ভাত দেওয়ার নাম নেই কিন্তু কিল মারার গোঁসাই। শিক্ষিত যুব সম্প্রদায়কে কাজ দিতে পারছে না রাজ্য সরকার। আর তাই কখনও সিভিক কর্মীদের দিয়ে পড়ানো বা কখনও ৩০০ টাকা বেতনে উচ্চ শিক্ষিতদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে আন্দোলন গড়ে তুলব।’’

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর এ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে তুলনা করে ‘সিভিক লেকচারার’ নিয়োগ করা হচ্ছে বলে খোঁচা দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, ‘‘এমন একটি বিজ্ঞপ্তি পড়ার পর এক জন অধ্যাপক হিসাবে আমি বিরক্ত বোধ করছি।’’

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি তীর্থঙ্কর কুণ্ডু অবশ্য বলছেন, ‘‘যাঁরা নেট উত্তীর্ণ হয়েছেন তাঁরা এখনও পড়াশোনার মধ্যেই আছেন। সেই পড়াশোনার ফাঁকে এমন ক্লাস করে হাতখরচের টাকা উঠে এলে খারাপ কী?’’

সমালোচনার মুখে পড়ে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সৌরভ দত্ত বলেন, ‘‘এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর বেশি আমি কিছু বলব না।’’

এর আগে মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাঁকুড়া জেলা পুলিশের তরফে ‘অঙ্কুর’ নাম একটি প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়। তাতে বলা হয়েছিল, প্রাথমিকের পড়ুয়াদের অঙ্ক এবং ইংরাজির ‘বিশেষ পাঠ’ দেবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। সেই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সমালোচনার ঝড় ওঠে। যার জেরে স্থগিত হয়ে যায় ওই প্রকল্প। এই আবহে আবার নতুন বিতর্কের জন্ম হল বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে।

অন্য বিষয়গুলি:

university Job Bankura University PHD Lecturer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy