স্ত্রী রোমিলা সেনকে ‘অন্য রকম’ উপহার দেওয়ার ইচ্ছে ছিল বলে জানিয়েছেন শুভজিৎ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
কাছের মানুষটিকে চাঁদ উপহার দেওয়ার কথা তো অনেকেই বলেন। তবে নতুন বউয়ের জন্য প্রায় তেমনই করে দেখিয়েছেন বাঁকুড়ার এক যুবক। যদিও আস্ত চাঁদ নয়, স্ত্রী-র জন্মদিনে তাঁকে চাঁদের ১ একর জমি উপহার দিয়েছেন তিনি। তবে এ চাঁদ বৃহস্পতির!
বছর দেড়েক হল রোমিলা সেনের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের বাসিন্দা শুভজিৎ ঘোষ। পেশায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার শুভজিৎ পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনে কর্মরত। সিমলাপালের প্রত্যন্ত গ্রাম কাহারানের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে বসবাস নাগাল্যাণ্ডের লংলেং জেলায়। তবে পেশার খাতিরে শুভজিতের সঙ্গে থাকেন না রোমিলা। হায়দরাবাদের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী রোমিলা করোনাকালে বাঁকুড়া শহরের কেন্দুইয়াডিহি গ্রামের বাড়ি থেকে কাজকর্ম সামলান।
রোমিলার জন্মদিন ছিল ১৩ নভেম্বর। তবে কাজের চাপে দিনটি একসঙ্গে কাটাতে পারেননি দম্পতি। স্ত্রী-র থেকে দূরে থাকলেও ১৩ তারিখে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছুঁতেই তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শুভজিৎ। সঙ্গে বিস্ময়চাপা উপহার!
শুভজিতের কাছ থেকে জন্মদিনের উপহার পেয়ে যারপরনাই আপ্লুত রোমিলা। তিনি বলেন, “১৩ নভেম্বর ঠিক রাত ১২টায় আমাকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানায় শুভজিৎ। তার পর বলে, ‘তোমাকে হোয়াটসঅ্যাপে একটা উপহার পাঠিয়েছি। দেখে বলো তো কেমন হয়েছে?’ হোয়াটসঅ্যাপ খুলে দেখি বৃহস্পতি গ্রহের চাঁদে আমার নামে জমি কেনার শংসাপত্র। প্রথমে একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কিছু ক্ষণ কথা সরছিল না। ঘোর কাটাতে এই উপহারের জন্য শুভজিৎকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।”
নতুন বউকে ‘অন্য রকম’ উপহার দেওয়ার ইচ্ছে ছিল বলে জানিয়েছেন শুভজিৎ। নাগাল্যান্ড থেকে টেলিফোনে আনন্দবাজার অনলাইনকে সে কথা জানিয়েছেন তিনি। শুভজিৎ বলেন, “স্ত্রী-র জন্মদিনে ব্যতিক্রমী কিছু উপহার দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। মাস কয়েক আগে ইন্টারনেট, ইউটিউব ঘাঁটতে গিয়ে চাঁদে জমি কেনার কথাটা মাথায় আসে। সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকার লুনার এমব্যাসি নামে এক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওই সংস্থার কাছ থেকে ডলারের বিনিময়ে রোমিলার নামে বৃহস্পতির চাঁদে ১ একর জমিও কিনে ফেলি। আপাতত আমাকে এ নিয়ে একটি শংসাপত্র পাঠিয়েছে সংস্থাটি। ৯০ দিন পর আসল চুক্তিপত্রও এসে যাবে। রোমিলার জন্মদিনে চাঁদে জমি কেনার ওই শংসাপত্রটি উপহার হিসাবে পাঠিয়েছিলাম।”
হাতে চাঁদের জমি পেয়ে কী করবেন রোমিলা? তিনি বলেন, ‘‘পৃথিবীর চাঁদে পা রাখলেও বিজ্ঞান এখনও আমাদের বৃহস্পতির চাঁদে পৌঁছে দিতে পারেনি। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো তা-ও সম্ভব হবে। আমি হয়তো সে জমিতে পা রাখতে পারব না। কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বলে যাব যাতে আমার সেই জমিতে যেন এক বার যায়।’’ সেই সঙ্গে রোমিলার আরও একটি ইচ্ছে রয়েছে। ‘‘মহাকাশে যাওয়া তো দূরের কথা, অর্থাভাবে বিমানে চড়াও যাদের কাছে স্বপ্ন, এমন শিশুদের যেন সঙ্গে করে চাঁদে নিয়ে যায় আমার পরবর্তী প্রজন্ম!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy