Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
গণঅভিযোগ বৈঠক

নিকাশির সুরাহায় সাত দিন

ঘটনা হল, ঠিক এক সপ্তাহ আগের গণঅভিযোগ বৈঠকেও বাঁকুড়া শহরের নিকাশি ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ শুনে জেলাশাসক পুরসভা, জেলা পরিষদ ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে শহরের গোবিন্দনগর এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।

মুখোমুখি: বাঁকুড়া জেলা সংখ্যালঘু ভবনে অলকাদেবী। নিজস্ব চিত্র

মুখোমুখি: বাঁকুড়া জেলা সংখ্যালঘু ভবনে অলকাদেবী। নিজস্ব চিত্র

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০১:০০
Share: Save:

পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থা ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠল। সোমবার বাঁকুড়া জেলা সংখ্যালঘু ভবনে প্রশাসনের গণঅভিযোগ বৈঠকে শহরের একাধিক বাসিন্দার মুখে এই কথা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস। কেন বারবার এমনটা হচ্ছে, বৈঠকে থাকা পুরসভার প্রতিনিধির কাছে সেই প্রশ্নের জবাব চাইলেন।

এ দিন জেলাশাসকের কাছে বাঁকুড়া শহরের প্রণবানন্দপল্লির দুই বাসিন্দা নিকাশি ও এলাকার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অভিযোগ জানান। তাঁদের দাবি, এলাকায় পাকা নালা নেই। জল জমে থাকে। পরিচ্ছন্নতার কাজও নিয়মিত হয় না। ঘটনা হল, ঠিক এক সপ্তাহ আগের গণঅভিযোগ বৈঠকেও বাঁকুড়া শহরের নিকাশি ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ শুনে জেলাশাসক পুরসভা, জেলা পরিষদ ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে শহরের গোবিন্দনগর এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। ওই এলাকায় নিকাশি নালা করার বিষয়ে পরিকল্পনা নেওয়াও শুরু হয়েছে। এলাকার পরিচ্ছন্নতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

এ দিন গোবিন্দনগর সংলগ্ন প্রণবানন্দপল্লির বাসিন্দাদের কাছেও একই অভিযোগ শুনে ক্ষুব্ধ হন জেলাশাসক। বাঁকুড়া পুরসভার তরফে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সুধাংশু চিনা। জেলাশাসক সুধাংশুবাবুকে প্রশ্ন করেন, বারবার কেন নিকাশি নালা ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অভিযোগ শুনতে হবে? বলেন, ‘‘আপনারা কি আদৌ কোনও কাজ করছেন? কিছু দিন আগেই এখানে পুরসভার নিকাশি নালা না থাকায় জল জমার কথা উঠল। আমি নিজে পরিদর্শন করে এলাম। এসপি বা ডিএম কিছু না বলা পর্যন্ত কি কাজ করবেন না আপনারা?” এর পরেই জেলাশাসক নির্দেশ দেন, সাত দিনের মধ্যে তিনি নিজে প্রণবানন্দপল্লি পরিদর্শনে যাবেন। তার মধ্যে যে ভাবেই হোক ওই এলাকায় সমস্যা মেটাতে হবে।

গণঅভিযোগ বৈঠক শেষে সুধাংশুবাবু পুরসভায় ফিরে পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তের কাছে সব তুলে ধরেন। মহাপ্রসাদবাবু বলেন, “নালা পরিষ্কারের কাজে ফাঁকফোকর যে রয়ে যাচ্ছে, তা আমার নজরেও এসেছে। তবে এই ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য কাউন্সিলরদের পাশাপাশি পুর-আধিকারকদেরও নজরদারি দরকার।” তিনি জানান, শীঘ্রই বাঁকুড়া পুরসভা এলাকার পরিচ্ছন্নতার হাল নিয়মিত খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি গড়বেন। ওই কমিটি রোজ শহরের কোথায় পরিচ্ছন্নতার কাজ হচ্ছে তা প্রমাণ-সহ পুরপ্রধানের কাছে পেশ করবে।

যদিও পুরসভার অনেকেরই দাবি, সাফাই কর্মীর যথেষ্ট অভাব রয়েছে। সূত্রের খবর, পুরসভায় ৩১০ জন স্থায়ী সাফাই কর্মী থাকার কথা। রয়েছেন ১১৫ জন। এ ছাড়া ২১৫ জন অস্থায়ী কর্মী ও দিনমজুরির ভিত্তিতে কাজ করা ১৮০ জন সাফাই কর্মী আছেন। পুরকর্মীদের অনেকেই দাবি করছেন, ২৪টি ওয়ার্ড সাফসুতরো রাখতে ওই ক’জন সাফাইকর্মী যথেষ্ট নন। যদিও মহাপ্রসাদবাবু এই দাবি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “সুষ্ঠু পরিকল্পনা করেই আমাদের এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। কোন পদ্ধতিতে আমরা শহর জুড়ে নিয়মিত সাফাই চালাব তা নিয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

এ দিন গণঅভিযোগ বৈঠকে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের প্রকল্পে শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে নিকাশি নালা গড়ার আর্জি জেলাশাসকের কাছে জানান ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অলকা সেন মজুমদার। অলকাদেবী বলেন, “১১ নম্বর ওয়ার্ডের দু’টি বিশেষ জায়গায় জমে থাকা জল বের করার নিকাশি নেই। ওই সমস্যার সমাধানের জন্য বড় প্রকল্প নেওয়া দেরকার। তাই পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের তরফে যদি কাজটি করানো যায় তা দেখার জন্য জেলাশাসকের কাছে আবেদন করেছি।” জেলাশাসক বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Drainage System DM District Magistrate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy