ফাইল চিত্র।
তিন লক্ষের বেশি মানুষকে জরুরি ভিত্তিতে জল দেওয়াটাই এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বাঁকুড়া প্রশাসনের। শনিবার দুর্গাপুর ব্যারাজের লকগেট ভেঙে পড়ার পরে তাই এ নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।
দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে পরিস্রুত পানীয় জল পাইপ লাইনের মাধ্যমে বড়জোড়া, বাঁকুড়া ১ ও বাঁকুড়া ২ ব্লকে সরবরাহ করা হয়। বাঁকুড়া শহরের কিছু অংশও এই প্রকল্পের জল পেয়ে থাকে। বাঁকুড়া পুরসভার প্রশাসক মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তের অবশ্য দাবি, “শহরের ন’নম্বর ও দশ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু অংশ সরাসরি ব্যারাজের জল পায়। লকগেট ভেঙে পড়ার খবর পাওয়ার পরেই ওই এলাকাগুলিকে সরাসরি দ্বারকেশ্বর নদের কানকাটা পাম্পহাউসের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে।” তাঁর আশ্বাস, ব্যারাজের জল না পেলেও শহরের কোনও এলাকাতেই জল সরবরাহে ঘাটতি হবে না।
তবে বড়জোড়া, বাঁকুড়া ১ ও বাঁকুড়া ২ ব্লকে জলসরবরাহে বিঘ্ন হবে বলে মানছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই তিনটি ব্লকে দৈনিক প্রায় ৩৪ মিলিয়ন লিটার জল দেওয়া হয় ব্যারাজ থেকে। তিনটি ব্লকের প্রায় তিন লক্ষ মানুষ ব্যারাজের জলের উপরে নির্ভরশীল।
জেলার জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুর পর্যন্ত এই তিনটি ব্লকে জল সরবরাহ করা গিয়েছে। তার পর থেকেই পরিষেবা বন্ধ। বাঁকুড়ার জেলাশাসক এস অরুণপ্রসাদ বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই বড়জোড়া, বাঁকুড়া ১ ও বাঁকুড়া ২ ব্লকে জল পরিবহণকারী ট্যাঙ্কার পাঠিয়েছি। পঞ্চায়েত সমিতির তরফে ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে পানীয় জলের পাউচ তৈরি রাখার নির্দেশ দিয়েছি।”
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়ায় একটি জল পরিশোধন করার যন্ত্র রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে হুগলি ও পুরুলিয়া জেলা থেকে আরও দু’টি জল পরিশোধনের যন্ত্র আনানো হচ্ছে। ওই যন্ত্রে পরিশোধন করে তিনটি ব্লকের সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছনোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রাজেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরিশোধিত জলের পাউচ তৈরি করে বাড়ি বাড়ি বিলি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তার জন্য দু’টি মেশিনও আনা হচ্ছে।”
এ দিকে, কেবল তিনটি ব্লকই নয়, গঙ্গাজলঘাটির মেজিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের কলোনির বাসিন্দারাও দুর্গাপুর ব্যারেজের জলের উপরে নির্ভরশীল। এই ঘটনায় জল সঙ্কটের আশঙ্কায় ভুগছে বিদ্যুৎকেন্দ্রও।
মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ডিজিএম প্রবীর চাঁদ বলেন, “বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল রাখা ও কলোনির বাসিন্দাদের জল ব্যারাজ থেকেই আসে। আমাদের কাছে যে পরিমাণন জল রয়েছে, তাতে মেরেকেটে দু’দিন চালানো যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কলোনির বাসিন্দাদের যথাসম্ভব কম জল ব্যবহার করার আবেদন জানিয়েছি।”
বাঁকুড়ার জেলাশাসক বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব লকগেট মেরামতির কাজ শেষ হোক, সেটাই চাই।” বাঁকুড়া জেলা পরিষদের মেন্টর অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “দুর্গাপুর ব্যারাজে লকগেটের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য বছর তিনেক আগেই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এখন সেটা যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়িত করতে জোর দেওয়া উচিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy