ফাইল চিত্র।
অপহৃত ‘আয়নম’ আর ‘কাজলে’র খোঁজে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন ‘হুঁদুরদুর্গা’। আজও আলতা রাঙা পায়ে নূপুর পরে হুঁদুরদুর্গার খোঁজে গ্রামে-গ্রামে ঘোরেন ভরত হেমব্রমেরা। দিনভর চলে ‘দাসাই নাচ’। সন্ধ্যায় ক্লান্ত শরীরে ফেরেন গ্রামে। বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ পঞ্চায়েতের বালিগুমা গ্রামের আদিবাসী পুরুষেরা দুর্গাপুজোর সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত দাসাই নাচের মাধ্যমে তাঁদের আরাধ্য ‘হুঁদুরদুর্গার’ খোঁজ করেন। এটাই রীতি।
আদিবাসীদের কাছে এই ‘দাসাই নাচ’ আদতে ‘যুদ্ধনৃত্য’। কানে কানপাশা, পায়ে আলতা-নূপুর, এবং মাথায় ফেট্টি পরে পুরুষেরা এই নাচ দেখান। ফেট্টিতে গোঁজা থাকে পালক। তাঁরা জানান, এই নৃত্য তাঁদের কাছে আনন্দের নয়, দুঃখের। কারণ ব্যাখ্যা করেন গ্রামের ভরত হেমব্রম।
ভরতের কথায় ‘‘কথিত রয়েছে, আয়নম এবং কাজল নামে দুই নারীকে এই সময় অপহরণ করেছিল আর্যরা। তাঁদের উদ্ধার করতে বেরিয়েছিলেন হুঁদুরদুর্গা। পথে দুর্যোগ নেমেছিল। তিনি আর ফিরে আসেননি। আমরা প্রত্যেক বছর এই সময় তাঁর খোঁজে গ্রামে-গ্রামে ঘুরি।’’ নাচটি দুঃখের হওয়ায় নতুন পোশাক পরে তা পরিবেশন করা যায় না। পুরনো ধুতি-গেঞ্জি কেচে পরতে হয়।
আদিবাসীদের রীতি অনুযায়ী, দুর্গা এক জন ‘বলবান পুরুষ’। যাঁকে খুঁজে পাওয়া গেলে আয়নম এবং কাজলকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে। এই চার দিন কাঠগুড়া, গড়ডাঙা, পিটরাগাড়া, ঘুঘুডাঙা, চিতরঙ, হেকিমডাঙা, গামারবনির মতো গ্রামগুলিতে ঘোরার সময় তাঁদের ঝোলায় চাল ঢেলে দেন গ্রামবাসী। মাঘের কোনও এক দিন সেই চাল রান্না করে এক সঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া সারেন বালিগুমার বাসিন্দারা।
শুধু বালিগুমা গ্রামে নয়, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া আর পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক আদিবাসী গ্রামেও ‘দাসাই নাচ’ প্রসিদ্ধ বলে জানাচ্ছেন গ্রামবাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy