প্রস্তুতিতে ব্যস্ত কে এস রাধাকৃষ্ণন। বুধবার শান্তিনিকেতনের অর্থশিলা প্রদর্শশালায়। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী abpbabubiswajit@gmail.com
বাংলা সাহিত্যে হাস্যরসের অন্যতম স্রষ্টা রাজশেখর বসু। পরশুরাম ছদ্মনামে তাঁর লেখা আজও বাঙালি পাঠককুলকে মজিয়ে রেখেছে। লেখাগুলির সঙ্গে থাকা অলঙ্করণগুলি যেন একে অপরের পরিপূরক। কিন্তু এই আঁকাগুলি কার? এই প্রশ্নের উত্তর চট করে অনেকেই দিতে পারবেন না। কারণ, এই অলঙ্করণগুলির স্রষ্টা যতীন্দ্রকুমার সেন আজ বিস্মৃত প্রায়।
স্মৃতির অতল থেকে শিল্পী যতীন্দ্রকুমারকে তুলে আনার চেষ্টায় ব্রতী হয়েছেন আর এক শিল্পী কে এস রাধাকৃষ্ণন। শান্তিনিকেতন নিবাসী শিল্পীকে এ কাজে সাহায্য করেছেন তাঁর দীর্ঘ দিনের পরিচিত শিল্প সংগ্রাহক পরিমল রায়। যতীন্দ্রকুমারের অলঙ্করণ নিয়ে আগামী ২ সেপ্টেম্বর থেকে শান্তিনিকেতনে শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী। সঙ্গে প্রকাশিত হবে একটি বইও।
বাঙালি না হয়েও পারিবারিক সূত্রে পরশুরামের রসে মজেছেন রাধাকৃষ্ণন। তিনি জানান, পরিমলের সূত্রেই তিনি রাজশেখর ও যতীন্দ্রকুমারের ‘যুগলবন্দি’র ব্যাপারে জানতে পেরেছেন। যা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘লেখনীর সঙ্গে তুলিকার কী চমৎকার জোড় মিলিয়াছে।’ দীর্ঘ দিন ধরে এই দু’জনের কাজের সংরক্ষণের সঙ্গে যুক্ত পরিমল। রাজশেখরের বাড়িতে পড়ে থাকা পাণ্ডুলিপি ও আঁকাগুলিকে সংগ্রহ করে, পরিষ্কার ও পুনরুজ্জীবনের কাজ করেছেন তিনি। এ কাজে পরিমলকে সাহায্য করেছেন রাজশেখরের বংশধর দীপঙ্কর বসু। যাঁর কাছে যতীন্দ্রকুমার তাঁর সব কাজ রেখে গিয়েছিলেন।
রাধাকৃষ্ণন জানান, এই সংরক্ষণের কাজ করতে গিয়ে ‘কজ্জলী’, ‘গড্ডালিকা’ ও ‘হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প’-এর আসল অলঙ্করণগুলি পেয়ে যান পরিমল। পাশাপাশি, দেখা যায় শুধু লেখা নয়, রাজশেখর নিজেও বেশ কয়েকটি বিখ্যাত চরিত্রের স্কেচ করছেন। যাতে যতীন্দ্রকুমারের কাজের সুবিধা হয়। এত দিন যা পড়ে নষ্ট হচ্ছিল।
এ বার একই ছাদের তলায় এই সব কাজকেই তুলে নিয়ে আসছেন রাধাকৃষ্ণন। আগামী ২ সেপ্টেম্বর থেকে শান্তিনিকেতনের শ্যামবাটিতে অর্থশিলা আর্ট গ্যালারিতে যতীন্দ্রকুমার সেনের কাজ নিয়ে শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনীতে যতীন্দ্রকুমারের ১৬০টি অলঙ্করণ তুলে ধরা হবে। একই সঙ্গে ওই দিনই তাঁর বিভিন্ন কাজ নিয়ে “ভিসন অ্যান্ড ভিস্যুয়ালস” নামের একটি বইও প্রকাশ করা হবে। আগামী দিনে তাঁর এই সমস্ত কাজগুলিকে একত্রিত করে শান্তিনিকেতনের একটি আর্কাইভ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
এ দিন রাধাকৃষ্ণন বলেন, “এগুলি অমূল্য সম্পদ। আরও আগে এগুলি মানুষের কাছে প্রদর্শনী কিংবা বইয়ের মাধ্যমে আসা উচিত ছিল। তবে দীর্ঘদিন পর ওঁর সৃষ্টিকে প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরতে পেরে সত্যি আজ ভাল লাগছে।” প্রদর্শনী চলবে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy