(বাঁ দিকে) অনুব্রত মণ্ডল এবং (ডান দিকে) সুকন্যা মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
পরপর দু’বছর। যাঁর হাত ধরে নানুরের হাটসেরান্দি গ্রামের দুর্গাপুজো বিখ্যাত হয়েছে, সেই অনুব্রত মণ্ডল হয়তো নিজের বাড়ির পুজোয় থাকতে পারবেন না এ বারও। এ বারের পুজো জেলেই কাটাতে হবে কেষ্ট-কন্যা সুকন্যাকেও। এই খবর জেনে উদ্বেগে অনুব্রতের পরিজন, দলের অনেক নেতাকর্মীও।
গরু পাচার মামলায় বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত এখন দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। বুধবার দিল্লির আদালত অনুব্রতের জেল হেফাজতের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ অক্টোবর করেছে। অন্য দিকে, তিহাড়ে বন্দি তাঁর কন্যা সুকন্যাও। আগেই সুকন্যার জেল হেফাজতের মেয়াদ আগামী বছরের জানুয়ারি করেছে আদালত।
সে কারণেই উৎসবের সময়টায় বাবা মেয়ে কেউ-ই বাড়ি ফিরতে পারছেন না বলে এ কপ্রকার ধরেই নিচ্ছেন দলের নেতাদের একাংশ এবং হাটসেরান্দি গ্রামের বাসিন্দারা। তার জেরেই মনখারাপ তাঁদের। এক কর্মী বললেন, ‘‘গত বছর কেষ্টদা না থাকায় আশা করেছিলাম, এ বছর হয়তো উনি থাকতে পারবেন। তাও হবে বলে মনে হচ্ছে না।’’
তবে দলের অনেকের আশা, সুপ্রিম কোর্টে অনুব্রতর জামিনের আবেদন হয়েছে। তাতে ইতিবাচক কিছু হতেও পারে। এর আগে কলকাতা হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন অনুব্রত। সেই আবেদন খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান অনুব্রত।
১৮ তারিখ অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদনের মামলায় সিবিআইকে নোটিস দিয়েছে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। অনুব্রতের অনুগামীদের অনেকে বলছেন, সুপ্রিম কোর্টে সেই আবেদনের পরিণতি কী হয়, তা দেখতে হবে। জেলা তৃণমূলের এক নেতা অবশ্য একান্তে মানছেন, ‘‘তর্কের খাতিরে যদি ধরে নিই, গরু পাচার নিয়ে সিবিআইয়ের করা মামলায় জামিন পেলেন। কিন্তু, ইডির আর্থিক দুর্নীতির মামলায় সহজ হবে না কেষ্টদার পক্ষে।’’
গত বছর অগস্টে অনুব্রত গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পরেই তাঁর পারিবারিক দুর্গাপুজোয় সে-ভাবে উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি। নিয়মমাফিক পুজোর আয়োজন হলেও মনমরা ছিল গোটা পরিবার। প্রথা মেনে এ বারও পারিবারিক দুর্গাপুজো হবে। তবে বাবা-মেয়ে না থাকায় আরও বিষণ্ণ পরিজনেরা। গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, একদা পারিবারিক পুজোর ভোল বদলে গিয়েছিল কেষ্টদার জন্যই। পুজোর কটা দিন সপরিবার গ্রামে আসতেন তিনি। ক্ষমতার শীর্ষে থাকা অনুব্রত দুর্গাপুজোর সময় একেবারে ঘরোয়া মানুষ। কিন্তু তাঁর উপস্থিতি ওজন বাড়িয়ে দিত। প্রতি বছর নেতার পুজো দেখতে উপচে পড়ে ভিড়। সেই ভিড়ে শামিল ছিলেন মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক থেকে ব্লক স্তরের নেতা থেকে গ্রামের মানুষ সকলেই। এলাহি আয়োজন হতো। এলাহি খাওয়াদাওয়াও। গ্রামের এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘ধুমধামের সেই ছবিটা গত বার থেকে বদলে গিয়েছে। খারাপ তো লাগবেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy