তৃণমূলের সম্মেলন। নিজস্ব চিত্র
দলের কর্মিসম্মেলনে বিজেপির দিকে যাওয়া সিপিএমের ভোট নিয়ে কর্মীদের সতর্ক করলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ। শুক্রবার সিউড়ি-২ ব্লকের পুরন্দরপুরে দলের কর্মিসম্মেলনে বিজেপিকে দুর্বল করতে এবার সিপিএমকে অক্সিজেন যোগানোর পরামর্শ দিয়েছেন জেলার তৃণমূল নেতারা।
গত লোকসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনায় নজরে এসেছে জেলার প্রতিটি এলাকায় তৃণমূলের বিরোধী দল হিসেবে এবার উঠে এসেছে বিজেপি। এমনকি বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যাও অন্যান্য বিরোধী দলের থেকে অনেক বেশি। সেই চিত্র ছিল সিউড়ি-২ ব্লকের ক্ষেত্রেও। কোনও বুথে বিজেপি তো কোনও বুথে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। কিন্তু প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে সিপিএম ও কংগ্রেসের চিহ্নটুকুও ছিল না বললেই চলে। আর এতেই প্রশ্ন ওঠে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের অনেকটাই সিপিএম থেকে ‘সুইং’ করে আসা কী না তা নিয়ে। তাই এবার বিজেপির কাছ থেকে সিপিএমের ভোট কাটতে বদ্ধপরিকর তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।
এ দিন তৃণমূলের জেলা সভাপতির সুরে সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ এক অঞ্চল সভাপতিকে বলেন, ‘‘আপনার অঞ্চলে ৩১২২টি ভোট পেয়েছে বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস নেই বললেই চলে। আর আমরা ভোট পেয়েছি ৬৭৭০। সিপিএম-এর ভোট বিজেপির দিকে গিয়েছে সেটা আমরা স্পষ্ট বুঝেছি। তাই কেষ্টদা (অনুব্রত মণ্ডল) বলছেন, সিপিএমকে আর অচ্ছুত করে রাখা যাবে না।’’
কিছুদিন আগেই সিউড়িতে বিজয়া সম্মেলনের মঞ্চ থেকে বিধানসভা ধরে কর্মসূচি নেওয়ার কথা জানান তৃণমূল নেতারা। সেই মতো এই কর্মিসম্মেলন হয়। এ দিন ওই ব্লকের সমস্ত অঞ্চল সভাপতিকে একে একে মঞ্চে ডাকা হয়। ডাকা হয় বুথ সভাপতিদেরকেও। ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনায় শুরু হয় প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। যে সব বুথে বিজেপি বেশি ভোট পেয়েছে সেখানকার নেতাদের তিরস্কার করা হয়। অনুব্রত দমদমা পঞ্চায়েতের এক বুথ সভাপতির উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘কত ভোটে পিছিয়ে আছেন?’’ উত্তরে ওই বুথ সভাপতি বলেন, ‘‘১৮০ ভোটে, এবার ‘মেক আপ’ হয়ে যাবে।’’ তাতেই ধমকের সুরে জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘আগে ‘মেক আপ’ পরে কথা, হারলেন কেন বলুন?’’ রাজু মুখোপাধ্যায় নামে এক অঞ্চল সভাপতি জেলা সভাপতিকে বলেন, ‘‘এলাকায় একটি রাস্তা না হওয়ায়, কিছুটা ভোট কেটেছে।’’ এরপরেই অনুব্রত জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে ওই রাস্তাটি করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন এবং ওই অঞ্চল সভাপতিকে প্রশ্ন করেন, ‘‘রাস্তা হলে কত লিড হবে?’’ জবাব আসে, ‘‘৩৫০০ ভোট হবেই।’’ পাল্টা অনুব্রতের তোপ, ‘‘না পারলে?’’ কাঁচুমাচু হয়ে উত্তর দেন রাজুবাবু, ‘‘আপনি যা শাস্তি দেবেন, তাই মাথা পেতে নেব।’’ এমন বিনীত জবাবে মুচকি হেসে ধমকের সুরে অনুব্রত বলেন, ‘‘না পারলে জেলে যাবি।’’ সম্মেলন শেষ হওয়ার মুখে অনুব্রত ব্লকের তৃণমূল নেতাদের বলেন, ‘‘সামনের বিধানসভায় ২১ হাজার ভোটে লিড হলে আগামী পঞ্চায়েত ভোটের আগে সিউড়ি-২ ব্লকে কোনও রাস্তা কাঁচা থাকবে না।’’
আর সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, ‘‘এনআরসি থেকে সুরু করে বিভিন্ন জনবিরোধী ই্যসুতে রাস্তায় কারা? তৃণমূল? না সিপিএম। তাতেই স্পষ্ট হয় অক্সিজেন কাদের প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy