নিধন: শ্রীনিকেতন থেকে ইলামবাজার সড়কের পাশে মহিদাপুরের কাছে কেটে রাখা গাছ। নিজস্ব চিত্র
রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য পঞ্চায়েত, বন দফতর গাছ কাটায় সম্মতি দিলেও, নেওয়া হয়নি জেলা পরিষদের অনুমতি। এর মধ্যেই বোলপুরের রূপপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শ্রীনিকেতন থেকে ইলামবাজার যাওয়ার রাস্তায় মহিদাপুরের আগে পর্যন্ত কাটা হয়ে গিয়েছে ৪৫টিরও বেশি গাছ। যার বেশির ভাগই শিশুগাছ। কিছু বাবলা গাছও আছে। কেন এমনটা হল, সে প্রশ্নে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি জেলা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় জেলার কোনও পঞ্চায়েতে গাছ কাটতে গেলে তাদের অনুমতি নিতে হবে। সেই মর্মে জেলা সভাধিপতির নির্দেশে প্রতি পঞ্চায়েতকে চিঠি করে জানিয়েও দেওয়া হয়। যদি কোনও পঞ্চায়েত গাছ কাটে, সেই পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নির্দেশ জারি করা হয়েছিল জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে। দিন কয়েক আগে তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকেও জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গাছ কাটা নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, কোনও পঞ্চায়েতের প্রধান গাছ কাটলে তার বিরুদ্ধে সভাধিপতি এফআইআর করবেন।
বিভিন্ন সময়ে জেলা জুড়ে গাছ কাটার একের পর এক অভিযোগ উঠেছে। কয়েক দিন আগে ময়ূরেশ্বরের ঝিকোড্ডা পঞ্চায়েতের ক্যানাল পাড়ে অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। একই ভাবে মহম্মদবাজারেও গাছ কাটা নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। এ বার সেই বিতর্ক ফিরে এল রূপপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শ্রীনিকেতন-ইলামবাজার রাস্তায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুর থেকে ইলামবাজার পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত চালু হতে চলেছে। যার জন্য রাস্তার পাশে থাকা দামি দামি গাছ কেটে ফেলতে হচ্ছে। এলাকার কেউ কেউ এই নিয়ে ক্ষুব্ধও। তবে সকলেই এক মত, উন্নয়নের স্বার্থে গাছ কাটা জরুরি। তাই গাছ কাটার আগে কতটা জরুরি তা যেন বারবার যাচাই করা হয়। কারও স্বার্থ না দেখে প্রকৃতির কথা ভাবা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ নিয়াজের কথায়, ‘‘আমরাও চাই রাস্তা সম্প্রসারণ হোক।কিন্তু এতগুলো গাছ কেটে কেন?
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য ১০৯টি গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শনিবার থেকে কাজও শুরু হয়েছে। রূপপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রণেন্দ্র সরকার অনুমতি দেওয়ার কথা মেনেছেন। ঠিকাদার কাউসার শেখ বলেন, ‘‘স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বন দফতরের অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। সায় দিয়েছে পূর্ত দফতরও। সে সব নথি আছে।’’ কিন্তু, জেলা পরিষদের অনুমতি নেওয়া হল না কেন? ঠিকাদারদের বক্তব্য, গাছ কাটা নিয়ে অনুমতি-পর্ব ৩১ জানুয়ারির আগেই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তখন জেলা পরিষদের নির্দেশ সামনে আসেনি। তাই সে ব্যাপারটা ভাবা হয়নি।
সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এ বার থেকে জেলা পরিষদের অনুমতি ছাড়া জেলায় কোনও গাছ কাটা যাবে না। এই গাছগুলি কাটার ক্ষেত্রে জেলা পরিষদের অনুমতি নেওয়া হয়নি। যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বন দফতর অনুমতি দিয়েছিল। নতুন করে গাছ কাটতে গেলে জেলা পরিষদের অনুমতি নিতেই হবে। নয়তো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ উন্নয়নের স্বার্থে হলেও নির্বিচারে গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হবে না, সে আশ্বাসও দিয়েছেন সভাধিপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy