এই সেই চিঠি। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কে বা কারা খোলা চিঠি ছড়াল মুরারইয়ে। এ বার অভিযোগের নিশানায় মুরারই ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি। রবিবার সকালে রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় খোলা চিঠিতে ব্লক সভাপতির সঙ্গে নাম জড়ানো হয়েছে জেলা পরিষদের দুই কর্মাধ্যক্ষেরও। যদিও তিন নেতাই চিঠিতে তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তবে, এমন চিঠিতে অস্বস্তি ছড়িয়েছে শাসক দলের অন্দরে।
এর আগেও তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে খোলা চিঠি ছড়িয়েছিল মুরারইয়ে। সে সময় মুরারই থানার পুলিশ সিসিটিভি দেখে অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করে। এ বার যে চিঠি ছড়ানো হয়েছে, সেটি জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে উদ্দেশ করে লেখা। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, দলের ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ পঞ্চায়েত সমিতি এবং তার অধীন প্রতিটি পঞ্চায়েত থেকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ‘কাটমানি’ নিচ্ছেন। এমনকি বেশ কিছু এলাকায় শৌচালয় নির্মাণ না করেই টাকা তোলা হয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিনয়বাবু দলবিরোধী কাজ করেছেন বলেও দাবি করা হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিতে আরও অভিযোগ, জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ ভকত ওরফে বাবলু মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থাকাকালীন শৌচাগার নির্মাণ নিয়ে অনেক টাকার দুর্নীতি হয়েছে। জেলা পরিষদের আর এক কর্মাধ্যক্ষ (বিদ্যুৎ ও ক্ষুদ্র শিল্প) আসগর আলি ওরফে গাজলুর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ ছাড়া পলসা ও ডুমুরগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধেও স্বজনপোষণের অভিযোগ তোলা হয়েছে চিঠিতে। তৃণমূল সূত্রের খবর, পলশা পঞ্চায়েতের প্রধান নিজে এবং ডুমুরগ্রামের প্রধানের স্বামী পেশায় ঠিকাদার। দু’জনেই শৌচালয় নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
চিঠির প্রেরক হিসেবে নাম রয়েছে জনৈক রেজাউল করিমের, যিনি নিজেকে তৃণমূলের পুরনো কর্মী বলে দাবি করেছেন। যদিও এমন নামের কারও খোঁজ মেলেনি। ফলে, বেনামে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। খোলা চিঠির কপি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী এবং প্রশান্ত কিশোরের কাছেও পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করা রয়েছে।
চিঠি প্রসঙ্গে বিনয়বাবু বলেন, “আমি দলকে সঠিক দিশা দেখাতে পেরেছি বলে কিছু মানুষের গাত্রদাহ হচ্ছে। তারাই এ সব করেছে। এর আগেও একবার করেছিল। সে সময় পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল। এ বারও থানায় অভিযোগ জানাব।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি কোনও আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত নই। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে রাজনীতি করি। যে এই জঘন্য কাজটি করছে, তার উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ প্রদীপ ভকত বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছি। সমিতির সভাপতি থাকাকালীন কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। এখনও নই।’’ আসগর আলিরও দাবি, ‘‘আমি নিজে পাথরের সফল ব্যবসায়ী। আমার দুর্নীতি করার কী প্রয়োজন!’’
মুরারইয়ের বিধায়ক আব্দুর রহমান বলেন, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিনয়বাবু সঠিক ভাবে দল পরিচালনা করছেন বলেই তাঁর নামে কুৎসা রটানো হচ্ছে। আর তেউ দুর্নীতি করে থাকলে সেটা আমাদের দলীয় সভায় বলা উচিত।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের কটাক্ষ, “গোটা দলটাই দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে। এখন কেউ কেউ লুকিয়ে বলার সাহস দেখাচ্ছে। দুর্নীতিই ওই দলকে শেষ করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy