Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Blood Bank

কোন গ্রুপ চাই, চড়ে রক্তের দর

হাসপাতালে আসা অনেকেই জানাচ্ছেন, রামপুরহাট মেডিক্যালে রক্তের দালাল বেশ সক্রিয়। বিশেষ করে নার্সিংহোমে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে এই চক্রের দাপট বেশি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ০১:১৮
Share: Save:

সন্ধে ৬টা। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে অপেক্ষা করছিলেন ঝাড়খণ্ডের মহেশপুর এলাকার এক যুবক। রামপুরহাটেরই একটি নার্সিংহোমে তাঁর স্ত্রীর অস্ত্রোপচার হবে। সেই কারণে দুই ইউনিট বি পজিটিভ রক্ত লাগবে। মুরারইয়ের একটি নার্সিংহোম থেকে থেকে রামপুরহাটের ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছিল ওই মহিলাকে।

উদ্বিগ্ন ওই যুবককে, তাঁর সঙ্গী গাড়ির চালক জানান ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত নেই। তবে টাকা দিলে রক্ত মিলবে। তার জন্য ২০ হাজার টাকা লাগবে। যুবকটি দরদাম করে এক ইউনিট রক্তের জন্য ৫ হাজার ৮০০ টাকা ঐ গাড়ির চালককে দেন। অভিযো, এর পরেই ওই গাড়ির চালক ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে রক্ত দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন। ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের সন্দেহ হওয়াতে ধরা হয় ওই যুবককে। তারপরেই গাড়ির চালক ৫ হাজার ৮০০ টাকা ফেরত দেয়।

রামপুরহাট মেডিক্যালে এই ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি। তবে রক্ত নিয়ে এমন দালাল চক্রের সক্রিয়তার অভিযোগ নতুন নয়। ওই ঘটনার দিন সাতেক আগে রামপুরহাট মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের কাছে ও নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের জন্য দালালির অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগে হাসপাতাল চত্বরের সাইকেল স্ট্যান্ডে রক্তের দালালকে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় বলে অভিযোগকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন।

হাসপাতালে আসা অনেকেই জানাচ্ছেন, রামপুরহাট মেডিক্যালে রক্তের দালাল বেশ সক্রিয়। বিশেষ করে নার্সিংহোমে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে এই চক্রের দাপট বেশি। বেশ কয়েকটি নার্সিংহোম থেকে রক্তের দালালদের ফোন নম্বর দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে হাসপাতালের বাইরে বা হাসপাতাল চত্বরের ভিতরে থাকা সাইকেল স্ট্যান্ড এলাকায় দালালি বেশি হয়। অনেক সময় ব্লাড ব্যাঙ্কের বাইরে বসে থেকে অনেকে রক্তের দালালি করে বলেও রোগীর আত্মীয় পরিজনদের অভিযোগ।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, দালালরা ব্লাড ব্যাঙ্কের বাইরে টাঙানো ডিসপ্লে বোর্ডে ব্লাড ব্যাঙ্কে প্রতিদিনের কোন গ্রুপের রক্তের স্টক নেই বা কম আছে সেগুলি দেখে নেয়। তার পরে ওই গ্রুপের রক্তের প্রয়োজনে আসা রোগীর আত্মীয় পরিজনদের সঙ্গে দরদাম চালাতে থাকে। বেশির ভাগ নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের জন্য দালালি বেশি হয়। ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত দশ হাজার টাকা থেকে কুড়ি হাজার টাকা পর্যন্ত দর ওঠে।

ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা জানান, অনেকে ডোনার কার্ড নিয়ে এসে রক্ত নিয়ে যান। সেক্ষেত্রে দালাল ধরা মুশকিল হয়ে যায়। আবার হাসপাতাল চত্ত্বরে নজরদারির অভাবের জন্য দালালরা অনেক সময় ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের সঙ্গে ভয় দেখিয়েও রক্ত জোগাড় করে বলে রোগীর পরিজনেরা অনেকেই জানিয়েছেন। ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরাও জানিয়েছেন, দালাল চক্র ধরা পড়ার পরেও ব্লাড ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়নি। হাসপাতালের এমএসভিপি সুজয় মিস্ত্রি বলেন, ‘‘ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা যে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, এমন দাবি আমার কাছে জানাননি। তবে ব্লাড ব্যাঙ্কে প্রবেশের আগে মূল গেটে দু’জন নিরাপত্তা কর্মী নিযুক্ত আছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Blood Bank Rampurhat Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy