Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
নমুনা ট্রপিক্যালে

বমি নিয়ে ফের মৃত্যু, ময়নাতদন্ত

এ দিনের মৃত্যু নিয়ে ওই পাড়ায় চার জনের মৃত্যু হল। এর আগে গত ১২ দিনের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল।

মাড়গ্রামে নেওয়া হচ্ছে নমুনা, সোমবার। নিজস্ব চিত্র

মাড়গ্রামে নেওয়া হচ্ছে নমুনা, সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০ ০৪:২৪
Share: Save:

ফের এক উপসর্গ নিয়ে মাড়গ্রামের এঁটালোপাড়ায় আর এক শিশুর মৃত্যু ঘটল। সোমবার দুপুরে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় ছ’বছরের নুরজাহান খাতুনের। বমির উপসর্গ নিয়ে এ দিনই ওই বালিকাকে ভর্তি করা হয়েছিল।

এ দিনের মৃত্যু নিয়ে ওই পাড়ায় চার জনের মৃত্যু হল। এর আগে গত ১২ দিনের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই মৃত্যুর কারণ ডেথ সার্টিফিকেটে সেপসিস উল্লেখ করা হয়েছে। আগে তিন জনের কারও ময়নাতদন্ত না হলেও এ ক্ষেত্রে ওই বালিকার ময়নাতদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসন। বিডিও (রামপুরহাট ২) রাজীব পোদ্দার বলেন, ‘‘মৃত্যুর কারণ সঠিক কারণ

অনুসন্ধানের জন্য পরিবারের লোককে বুঝিয়ে নুরজাহান খাতুনের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।

নুরজাহান খাতুনের বাবা দুলু শেখ জানান, তাঁর মেয়ে রবিবার চার বার বমি করেছিল। বমি বন্ধ করার জন্য রামপুরহাট ২ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়ানো হয়। এ দিন সকালে মেয়ের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য দফতর। তাঁর কথায়, ‘‘সকাল ১০টা থেকে মেয়ের শরীর প্রচণ্ড খারাপ করতে থাকে। বমি করতে থাকে। মেয়েকে সাড়ে ১১টা নাগাদ রামপুরহাট মেডিক্যালে ভর্তি করি। সেখানেই আধ ঘণ্টা চিকিৎসা চলার পরে মেয়ে মারা যায়।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর কারণ হিসেবে সেপসিস লেখা হলেও কোন ধরণের জীবাণু থেকে এমন হচ্ছে সে সম্বন্ধে উল্লেখ কিছু করা হয় নি। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সেপসিস চিহ্নিত করা হলেও সঠিক ভাবে মেলানো যাচ্ছে না। বিষক্রিয়া বা জীবাণু সংক্রমণের কথা বলা হচ্ছে। তাই সেটা কোন জীবাণু সেটা বিশ্লেষণ করা দরকার। জীবাণু মানুষের থেকে এল না জল থেকে এল সেটা দেখা দরকার।’’ রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ডেপুটি সিএমও ইচ (৩) ত্রিদিব মুস্তাফি জানান, আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। মোট ১২ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার দুপুরে মৃত বালিকার রক্তের নমুনাও রয়েছে।

রামপুরহাট ২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিজিৎ রায়চৌধুরী জানান, এ দিন দুপুরে রামপুরহাট মেডিক্যালের শিশু বিভাগের প্রধান-সহ শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা এলাকায় আসেন। এলাকায় ১৩১ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৮ জনের রিপোর্ট এখনও আসেনি। বাকি ১২৩ জনের রিপোর্টে করোনা সংক্রমণ মেলেনি। এ দিন বিকেলে এলাকায় যান মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি পরিস্থিতি নিয়ে বিডিও এবং স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

এলাকায় বিক্রি হওয়া বাইরের খাবার ও জল নিয়েও সতর্কতা প্রচার করছে প্রশাসন। বিডিও জানান, এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ চালু থাকলেও ট্যাপগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় ২০ হাজার পাউচ প্যাকেট জল সরবরাহ করা হয়েছে। এলাকার ১০টি পানীয় জলের উৎসের জল পরীক্ষা করার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। এলাকার চারটি পুকুরের জল সাফ

করা হয়েছে। নিকাশি নালাগুলিও পরিষ্কার করা হয়েছে। এলাকায় মাইকিং করে জল ফুটিয়ে খাওয়া-সহ পাউচ প্যাকেটের জল খাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। আশাকর্মী, ভিলেজ রিসোর্স পার্সন-সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় বাড়ি বাড়ি ওআরএস, ট্যাবলেট সরবরাহ করছেন বলে জানান বিডিও। এ ছাড়া বাসি খাবার, ফেরি করা আইসক্রিম, ঘুগনি, ফুচকা, আচার খেতেও বারণ করা হয়েছে। এলাকার বিক্রি হওয়া খাবারের নমুনাও সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য দফতরের ফুড সেফটি আধিকারিক।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Child Vomiting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy