রসনা: পেঁয়াজ-পোস্ত। নিজস্ব চিত্র
একটি পোস্তর বড়া ৫০টাকা। এক প্লেট পেঁয়াজ পোস্ত ৬৫ টাকা।
সিউড়ির একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে বসে ভাত, মুসুর ডাল, মাছের একটা পদ আর পছন্দের পোস্তোর বড়া অর্ডার দিতে যাচ্ছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী শান্তনু গুপ্ত। মেনু কার্ডে তার এমন দাম দেখে আঁতকে উঠলেন তিনি।
কাজের সুবাদে মাঝেমধ্যেই সিউড়িতে আসতে হয় তাঁকে। দুপুরের খাবার খেতে হলে শহরের এক জনপ্রিয় হোটেলে চলে আসেন। সোমবার দুপুরেও তা-ই করেছিলেন। কিন্তু পোস্তর পদের চড়া দাম দেখে বললেন, ‘‘এই তো কয়েক দিন আগেও পেঁয়াজ পোস্তর দাম ছিল ৩৫ টাকা। বড়া ৩০ ছিল।’’ তা শুনে এক হোটেলকর্মীর মন্তব্য, ‘‘পোস্ত আগেই ১২০০ ছুঁয়েছে, পেঁয়াজ এখন হয়েছে তার দোসর। পেঁয়াজের আজকের বাজারদর ৬০ টাকা, শোনেননি?’’
শুধু শান্তনুবাবু নন, যে হারে পোস্ত আর পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, আম বীরভূমবাসীর আক্ষেপের জায়গা নেই। পোস্ত-প্রিয় জেলার মানুষ বলছেন, ‘‘পোস্তর দাম আকাশ ছুঁয়ে যাওয়ায় পাত থেকে কার্যত সরে গিয়েছে। এ বার তো পেঁয়াজও ছোঁয়া যাবে না।’’
জেলার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এপ্রিল-মে মাসেও যেখানে পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কিলোগ্রাম ৬ টাকা, তা-ই এখন ১০ গুণ বেড়ে ষাটে পৌঁছেছে। পাইকারি বাজারে তার দাম ঘোরাফেরা করেছে প্রতি কিলোগ্রামে ৫০-৫২ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, আগে যে ক্রেতা ২ কিলোগ্রাম পেঁয়াজ নিতেন, তিনিই এখন ৫০০ গ্রাম পেঁয়াজ কিনছেন। পুজোর মুখে দাম আরও বাড়ে কিনা, সেই সংশয়ও রয়েছে। সিউড়ি, দুবরাজপুরে ফাস্ট ফুডের দোকানিরা বলছেন, ‘‘একেবারে পেঁয়াজ বন্ধ করলে তো হবে না। তবে মুনাফা কমেছে।’’
কেন হঠাৎ দর বাড়ল পেঁয়াজের? জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষায় দক্ষিণবঙ্গ-সহ গোটা রাজ্যের বাসিন্দাদের হেঁসেলে যে পেঁয়াজ ঢোকে, তা রাজস্থানের। রাজ্যে যে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় তা বাজারে ঢুকতে শুরু করে মার্চ মাসে। টানা তিন মাস বাজারে সেই পেঁয়াজের সরবরাহ থাকে। বর্ষা শুরুর আগে থেকেই রাজস্থানের পেঁয়াজ জেলার পাইকারি ও খুচরো বাজারে আসতে থাকে। সেই পেঁয়াজের দাম বাজারে খানিকটা চড়া থাকলেও, মধ্যবিত্তের নাগালেই থাকে। যদিও, এ বছর রাজস্থানে বন্যা পরিস্থিতি বাজারের ছবি বদলে দিয়েছে। একই অবস্থা বেঙ্গালুরুর পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকেই রাজস্থানের বিভিন্ন এলাকায় ও বেঙ্গালুরুতে অতিবৃষ্টি ও বন্যা পরিস্থিতির জেরে পেঁয়াজের ফলন ব্যাপক মার খেয়েছে। তাই সমস্যা তৈরি হয়েছে। এখন ভরসা মধ্যপ্রদেশের ইন্দৌর ও নাসিক। তবে সুখবর একটাই। সোমবার বিকেল থেকে জোগান কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম নেমেছে কিলোগ্রাম প্রতি প্রায় ৬ টাকা। দুবরাজপুরের এক ব্যবসায়ী বলছেন, ‘‘আশা করি দু’চার দিনে দর নিম্নমুখী হবে। বাজারে তেমনই ইঙ্গিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy