রায়ের আগে: বাঁকুড়ার পোয়াবাগান সর্বজনীনের মণ্ডপ তৈরি শেষ। সোমবার সকালে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
দোরগোড়ায় পুজো। প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের ‘মণ্ডপ দর্শকশূন্য’ রাখার নির্দেশের জেরে পুজো করা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছেন পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার অনেক পুজো উদ্যোক্তা। আদালতের রায় ঘোষণার পরে, প্রায় তৈরি হয়ে যাওয়া মণ্ডপ খোলার কাজ শুরু হয়েছে কোথাও কোথাও। কিছু পুজো কমিটি আবার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক ডেকে নতুন পরিকল্পনা করা শুরু করেছে।
আজ মঙ্গলবার, চতুর্থীতে উদ্বোধনের কথা পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ার ভামুরিয়া বাথানেশ্বর সর্বজনীন ও নিতুড়িয়া দুবেশ্বরী সর্বজনীনের। শেষ মুহূর্তে আদালতের নির্দেশ আসার পরে, উদ্বোধন কী ভাবে হবে, তা নিয়ে চিন্তিত কর্মকর্তারা। বাথানেশ্বর সর্বজনীনের সম্পাদক হিরালাল মাজি বলেন, ‘‘মণ্ডপের বাইরে দশ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে উদ্বোধন করা যায় কি না, দেখছি।” নিতুড়িয়া দুবেশ্বরীর সম্পাদক বুলা পাণ্ডের বক্তব্য, ‘‘উদ্বোধন হয়তো এ বার বন্ধই করে দিতে হবে।” পুরুলিয়ার এই দুই বড় বাজেটের পুজোর প্রচুর দর্শনার্থীর ভিড় হয়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, মণ্ডপের সীমানায় ১০ মিটার দূরত্বে ব্যারিকেড দেওয়া হলেও তার বাইরে ভিড় জমলে, তা কে নিয়ন্ত্রণ করবে, সে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
আদ্রার আপার বেনিয়াসোল সর্বজনীনের কর্মকর্তা ডি মনোজ বা পুরুলিয়া শহরের রথতলা সর্বজনীনের কর্মকর্তা শ্রীমন সরকারেরা আবার বলছেন, ‘‘মণ্ডপটাই ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হয়ে গেলে পুজো করা আদৌও সম্ভব হবে না কি না, জানা নেই।
আদালতের রায়কে স্বাগত জানালেও মানুষকে কতটা তা মানানো যাবে, তা নিয়ে সংশয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ এখনও হাতে পাইনি। নির্দেশ অনুযায়ী, পদক্ষেপ করা হবে।”
অন্য দিকে, করোনা-পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বাঁকুড়ার বহু পুজো কমিটিই এ বারে মণ্ডপের বাইরে থেকে প্রতিমা দেখার ব্যবস্থা করেছে। তবে কিছু পুজো হচ্ছে ‘থিম’-কেন্দ্রিক। হাইকোর্টের রায়ের পরে, সমস্যায় পড়েছেন মূলত ওই সব পুজোর উদ্যোক্তারা। তেমনই একটি পুজো, বাঁকুড়া শহরের মধ্য কেন্দুয়াডিহি পুজো কমিটির কর্তাদের একাংশ জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী দর্শনার্থীরা, মণ্ডপে ঢুকতে না পারলে সামনের অংশের মণ্ডপ খুলে দিয়ে প্রতিমা দর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। পুজো কমিটির সভাপতি অচিন্ত্য কুণ্ডুর কথায়, “আদালতের নির্দেশ জানার পরেই, জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক ডেকেছি। পুজোর আগে তৈরি হয়ে যাওয়া মণ্ডপ খোলা ও নতুন করে গড়াই বড় চ্যালেঞ্জ।”
বাঁকুড়া শহর লাগোয়া পোয়াবাগান সর্বজনীন পুজো কমিটির সম্পাদক বিদেশ পাত্র বলেন, “মণ্ডপের কাজ প্রায় শেষ। আদালতের এই নির্দেশের পরে, কী ভাবে সব সামলাব, বুঝে উঠতে পারছি না।”
তবে বাঁকুড়া শহরের লালবাজার সর্বজনীনের সম্পাদক পরেশ দাস মোদক, ইঁদারাগড়া হরেশ্বরমেলা পুজো কমিটির সম্পাদক রমেশ মুরারকারা বলেন, “প্রথম থেকেই দর্শনার্থীদের যাতে মণ্ডপে ঢুকতে না হয়, তেমন ব্যবস্থা রেখেছিলাম। মণ্ডপের বাইরের ভিড় সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ যেমন নির্দেশ দেবে, তেমনই হবে।” জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “আদালত কী নির্দেশ দিয়েছে জেনে পুজো কমিটিগুলিকে সে ভাবে প্রস্তুতি নিতে বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy