ফাঁকা স্টেশন চত্বর। নিজস্ব চিত্র
ছ’দিনের মাথায় রবিবার সকাল সওয়া ৭টা নাগাদ অবরোধ উঠল পুরুলিয়ার কুস্তাউর স্টেশন থেকে। শনিবার বিকেলে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার ঘোষণার পরে অজিত মাহাতো-সহ আন্দোলনকারী সংগঠন, আদিবাসী কুড়মি সমাজের শীর্ষ নেতৃত্ব মঞ্চ ছাড়লেও আন্দোলনকারীদের একাংশ অবরোধ তুলতে রাজি না-হওয়ায় রাতভর অবরুদ্ধ থাকে আদ্রা-চান্ডিল শাখা। এ দিন সকালে তবে তাঁরাও অবরোধ তুলে নেন।
অবরোধকারীরা সরে যাওয়ার পরে, রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর থেকে কর্মীরা এসে লাইন পরীক্ষা করেন। পরে সাড়ে ৯টা নাগাদ স্টেশনের ডাউন লাইন দিয়ে একটি মালগাড়ি যায়। তবে অনেক ট্রেন বাতিল থাকায় অবরোধ উঠলেও সকালের দিকে যাত্রী দুর্ভোগের ছবি দেখা গিয়েছে। কুস্তাউরের স্টেশন ম্যানেজার দীপককুমার দাস বলেন, “এ দিন থেকে পরিষেবা সচল হয়েছে। ফের যাত্রীরা ট্রেনে উঠতে পারবেন।” আদ্রার ডিআরএম মণীশ কুমারের আশ্বাস, আজ, সোমবার থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
গত মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে কুড়মি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্ত করা, সারনা ধর্মের পৃথক কোড চালু ও কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের কুস্তাউর স্টেশনে অবরোধ শুরু করে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। দফায় দফায় আলোচনার পরে, শনিবার জেলা প্রশাসনিক ভবনে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের সচিব ও সিআরআই (কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট)-এর এক পদস্থ কর্তার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের পরে সমাজের মূল মানতা অজিত মাহাতো অবরোধ প্রত্যাহারের কথা জানান। তবে অবরোধ পুরোপুরি ওঠেনি। বরং, আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য সমাজ মাধ্যমে অজিতকে নিশানা করে আক্রমণ শুরু হয়।
তবে লোকজন কমে যাওয়ায় এ দিন সকালে অবশিষ্ট অবরোধকারীরা রেল কর্তৃপক্ষকে লিখিত দিয়ে রেললাইন থেকে সরে যান। আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে না পারার ব্যর্থতার দায় তাঁরা অজিতের ঘাড়েই চাপিয়েছেন। এক জনের দাবি, “অজিতবাবু কোনও দিন কোনও আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত থাকেন না।” পাশাপাশি তাঁদের অনেকে নিখোঁজ থাকায় আন্দোলন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে বলে জানান। তবে যথাসময়ে ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছে তাঁদের মুখে।
আন্দোলনকারীদের একাংশের ‘বিদ্রোহী’ হয়ে ওঠাকে এ দিন ‘ষড়যন্ত্র’ বলেই দাবি করেন অজিত। তাঁর কথায়, “ওঁদের কোনও পরিচিতি নেই। কী ভাবে একটা আন্দোলনকে এই জায়গায় পৌঁছনো গিয়েছে, সেটা যাঁরা এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁরা জানেন। আর যাঁরা আজ সফল আন্দোলন দেখে ঘোলা জলে মাছ ধরতে এসেছেন, তাঁদের আগে কোনও দিন দেখা যায়নি।” তাঁর সংযোজন, “যাঁরা এই আন্দোলন সমর্থন করেছেন, আমরা তাঁদের জানি। কিন্তু ওঁরা সমর্থন করেছেন বা আন্দোলনে এগিয়ে এসেছেন বলে আন্দোলন শুরুর আগের দিন পর্যন্তও আমরা জানতাম না। এই ঘটনায় ষড়যন্ত্র রয়েছে। তফসিলি উপজাতি তালিকাভুক্ত করার দাবিতে গণতান্ত্রিক ভাবে আমাদের আন্দোলন চলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy