বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার। নিজস্ব চিত্র।
চুরির অপবাদ দিয়ে গত দেড় বছর ধরে একটি আদিবাসী পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠল বীরভূমের শান্তিনিকেতনে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা না পেয়ে পুলিশসুপারের দ্বারস্থ হন তাঁরা। অবশেষে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তৎপর হল পুলিশ।
ঘটনাটি শান্তিনিকেতন থানার বালিপাড়া গ্রামের। ওই এলাকার বাসিন্দা কালিদাস চোড়ের পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। কালিদাসের অভিযোগ, স্থানীয় একটি স্কুলের চাবির চুরির অপবাদ দিয়ে বিষয়টি গ্রামের সালিশি সভায় তোলা হয়। সুকোল হেমব্রম নামে এক পুরোহিত কালিদাস এবং তাঁর এক আত্মীয় ছোটনের বিরুদ্ধে চাবি চুরি করার অভিযোগ তোলেন। বিষয়টি তিনি গ্রামের মোড়ল সুনীল হাঁসদার কাছে জানান।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে। কালিদাসের অভিযোগ, গ্রামের মোড়লের কাছে খবর পৌঁছতেই তিনি সালিশি সভা ডাকেন। সেখানে তাঁদের জোর করে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এর পরই মোড়ল কালিদাসের পরিবারের ৮ সদস্যকে একঘরে করার নিদান দেন গ্রামবাসীদের। শুধু তাই নয়, গ্রামের সবাইকে কালিদাসের পরিবারের সঙ্গে মেলামেশা না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনও বলা হয় যে, গ্রামের কেউ ওই পরিবারের সঙ্গে মেলামেশা করলে তাঁদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। ফলে কেউ ধারেকাছে ঘেঁষতেন না।
তার পর থেকেই গ্রামে কোণঠাসা হয়ে পড়ে রয়েছে চোড়ে পরিবার। অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এই নরকযন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে এবং সুবিচারের আশায় জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠির দ্বারস্থ হন। তিনি শান্তিনিকেতন থানাকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ পাওয়ার পরই কালিদাসের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য তৎপর হয় পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, “গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। আইনের পথেই যা করার করব।” শনিবার আদাবাসী পরিবারের সঙ্গে দেখা করনে রূপপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “এটা ছোট ঘটনা। পঞ্চায়েতকে জানানো হয়নি। জানানো হলে আমরা আগেই সমাধান করে দিতাম। এবার সমাধান হয়ে যাবে৷”
অন্য দিকে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত মোড়ল সুনীলের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। ওঁরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন। গ্রামের মানুষের সঙ্গে ওঁরা কথা না বললে কী করার আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy