Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

দুর্ঘটনায় বরযাত্রীর বাস, মৃত প্রৌঢ় ও যুবক

পুলিশ জানিয়েছে মৃত তাপস নন্দী (২৬) ও কমলাকান্ত দাসের (৫৬) বাড়ি ঝাড়খন্ডের সরাইকেল্লা খরসোয়া জেলার কাণ্ডরা গ্রামে। বোরো থানার জামতোড়িয়ার একটি বিয়েবাড়িতে যাচ্ছিল বাসটি। বাসে মোট ৪০ জন বরযাত্রী ছিলেন।

তুবড়ে: ধরমপুর স্কুলের অদূরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো

তুবড়ে: ধরমপুর স্কুলের অদূরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোরো শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫৪
Share: Save:

বরযাত্রী বোঝাই বাস উল্টে মৃত্যু হল দুই ব্যক্তির। আহত হয়েছেন কুড়ি জনেরও বেশি। তাঁদের এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে বোরো থানার বুরুডি ও ধরমপুর গ্রামের মাঝে ধরমপুর স্কুলের কাছে।

পুলিশ জানিয়েছে মৃত তাপস নন্দী (২৬) ও কমলাকান্ত দাসের (৫৬) বাড়ি ঝাড়খন্ডের সরাইকেল্লা খরসোয়া জেলার কাণ্ডরা গ্রামে। বোরো থানার জামতোড়িয়ার একটি বিয়েবাড়িতে যাচ্ছিল বাসটি। বাসে মোট ৪০ জন বরযাত্রী ছিলেন। ধরমপুর স্কুলের কাছে রাস্তায় বাঁক নেওয়ার সময় বাসের নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। বাসটি প্রায় ১০ ফুট নীচে ধানজমিতে পড়ে উল্টে যায়। বাসের নীচে চাপা পড়েন অনেকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাপসবাবুর। স্থানীয় একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় কমলাকান্তবাবুর। আহত এক জনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ঝাড়খণ্ডের একটি হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁর পরিজনেরা।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছয় পুলিশবাহিনী। ধানক্ষেত নরম থাকায় বাসের একাংশ মাটির কিছুটা ভিতরে ঢুকে গিয়েছিল। গাড়িটি তুলতে আনা হয় তিনটি যন্ত্র। আহত ১৩ জনকে বান্দোয়ান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সাত জনকে ভর্তি করানো হয় বসন্তপুর হাসপাতালে। সেখানেই মৃত ঘোষণা করা হয় কমলাকান্তবাবুকে। পুলিশ জানিয়েছে, বাসটি উল্টে যাওয়ার পরেই ধানক্ষেতের নরম মাটিতে তাপসবাবুর মাথা ঢুকে গিয়েছিল। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি বরের জেঠতুতো ভাই ছিলেন। রবিবার দেহ দু’টি ময়না-তদন্তের জন্য পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। গাড়ির চালক পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ দিন দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় ধানক্ষেতে ছড়িয়ে রয়েছে জুতো এবং সোয়েটার। ভিড় করেছেন এলাকার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার যে বাঁকে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে সতর্কীকরণ বোর্ড লাগানো ছিল না। বোর্ড থাকলে চালক সতর্ক হয়ে যেতেন। বাসচালক স্থানীয় না হওয়ায় তিনি বুঝতে পারেননি রাস্তায় ‘বিপজ্জনক’ একটি বাঁক রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা পার্শি মুর্মু বলেন, ‘‘বাঁকের কাছে সর্তকীকরণ বোর্ড নেই। বাইরের চালক হওয়ায় বাঁকটি দেখতে পাননি। এর আগেও ওই জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। সামনেই স্কুল রয়েছে। সেখানে একটা বোর্ড ঝোলানো খুব প্রয়োজন।’’

ওই বাসের পিছনে একটি গাড়িতে ছিলেন বরের খুড়তুতো ভাই রাজ নন্দী। তিনি জানান, সন্ধ্যা ৭ টা সময় বরযাত্রী নিয়ে বাসটি ছেড়েছিল। সঙ্গে ছিল আরও চারটি গাড়ি। বরুডি মোড় অতিক্রম করার পরেই এক দম সামনে থাকা তিনটি গাড়ি গতি বাড়িয়ে এগিয়ে যায়। বাসটিও গতি বাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তকই দুর্ঘটনাটি ঘটে। রাজবাবুর কথায়, ‘‘আমরা বাসের পিছনে একটি ছোট গাড়িতে ছিলাম। হঠাৎ আমাদের গাড়ির চালাক খুব জোর ব্রেক কষে। দেখি পাশের ধানজমিতে বাসটি গড়ে গিয়েছে। আমরা চাপা পড়া লোকজনকে উদ্ধারের কাজে নেমে পড়ি।’’ ততক্ষণে অবশ্য বরের গাড়ি পৌঁছে গিয়েছিল পাত্রীর বাড়িতে।

ধরমপুর স্কুল থেকে জামতোড়িয়ার দুরত্ব পাচ কিলোমিটার। দুর্ঘটনার খবর পৌঁছলে জামতোড়িয়া থেকে পাত্রীর পরিজনেরা সেখানে আসেন। তাঁদের এক জন দেবদাস মোদক বলেন, ‘‘খবরটা শুনে গা শিউরে উঠছিল। আহতদের হাসপাতালে পাঠিয়ে ফিরে আসি। তারপর বিয়ের কাজ শুরু করি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Death Bus Accident Boro Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy