ডিভিসির জলে আতঙ্ক বাড়ছে টানা বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁকুড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
নিম্নচাপের জেরে লাগাতার বৃষ্টিতে বাঁকুড়া জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি কাঁচা বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি নিরাশ্রয় হয়ে পড়া মানুষদের স্থানীয় স্কুলগুলোতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রশাসন। তার মধ্যে সোমবার থেকে ডিভিসির দুর্গাপুর ব্যারেজ এবং কংসাবতীর মুকুটমণিপুরের জলাধার থেকে জল ছাড়া শুরু হতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। দুই নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাস করা মানুষকে সচেতন করার কাজ শুরু করেছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। গ্রামে গ্রামে চলছে মাইকে প্রচার।
নিম্নচাপের জেরে বাঁকুড়া জেলায় শুক্রবার বিকাল থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। দফায় দফায় চলা ওই বৃষ্টিতে জেলা জুড়েই বিপর্যস্ত জনজীবন। নাগাড়ে বৃষ্টিতে জেলার বহু কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, টানা বৃষ্টিতে জেলায় সোমবার বিকেল পর্যন্ত মোট ৩৭৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১,৩৭২টি বাড়ির। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ১২টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক এন সঈদ বলেন, ‘‘সোমবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই ১২টি ত্রাণ শিবিরে মোট ৬৯০ জন আশ্রয় নিয়েছেন।’’
এর মধ্যে বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে বিভিন্ন জলাধার থেকে ছাড়া জল। ডিভিসির পাঞ্চেৎ, মাইথন এবং দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে বিপুল হারে জল ছাড়ায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বাঁকুড়া জেলার ৬টি ব্লকের নিচু এলাকায়। জেলা প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই মেজিয়া, শালতোড়া, বড়জোড়া, সোনামুখী, ইন্দাস এবং পাত্রসায়ের ব্লকের দামোদর তীরবর্তী নিচু এলাকায় বসবাসকারী মানুষকে সতর্ক করতে মাইক প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দামোদর তীরবর্তী যে গ্রামগুলিতে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে, সেই গ্রামগুলি থেকে বাসিন্দাদের অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তবে শুধু দামোদর নদেই নয়, সোমবার থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে, কংসাবতীর মুকুটমণিপুর জলাধার থেকেও। কংসাবতী সেচ দফতর সূত্রে খবর, রবিবার গভীর রাত থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে। প্রাথমিক ভাবে নদীপথে ৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হলেও সোমবার দুপুরের পর থেকে নদীপথ, লেফট ব্যাঙ্ক মেইন ক্যানেল এবং রাইট ব্যাঙ্ক ফিডার ক্যানেল মিলিয়ে মোট ১০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ছাড়া জলে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হুগলি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এই আশঙ্কায় ওই দুই জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে। বাঁকুড়া জেলাতেও কংসাবতী নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক এ নিয়ে বলেন, ‘‘আমরা সেচ দফতর, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, বিদ্যুৎ দফতর-সহ প্রতিটি বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। জেলায় মজুত রয়েছে যথেষ্ট ত্রাণ সামগ্রী। দুর্গতদের কাছে তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ব্লক প্রশাসন, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে। সাবধান করা হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy