Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

পথে হামলার নালিশ, ধৃত ১১

পুলিশ জানিয়েছে, ওন্দা থানার দু’টি হামলার ঘটনায় যুক্ত অভিযোগে মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ইন্দাসে ঝামেলার ঘটনায় রবিবার বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

 ইন্দাসে সেই বাস। নিজস্ব চিত্র

ইন্দাসে সেই বাস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৯ ০১:১৬
Share: Save:

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বাঁকুড়ার ওন্দায় সভা করতে এসে বলেছিলেন, যে সব তৃণমূল নেতারা কলকাতায় যাবেন, তাঁদের রাস্তায় পেলে আগে ধরে কাটমানির টাকা ফেরত নিতে হবে। শনিবার দুপুরে তাঁর সভার পরে সেই রাতেই শহিদ সমাবেশের জন্য কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেওয়া তৃণমূল কর্মীদের কয়েকটি বাসে হামলার অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ার জেলার বিভিন্ন এলাকায়। আক্রান্ত হলেন পুলিশ কর্মীরাও। যার মধ্যে দু’টি ঘটনা ওন্দা থানায় ও একটি ইন্দাসে। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি হামলার জন্য দায়ী। যদিও তা মানতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব।

পুলিশ জানিয়েছে, ওন্দা থানার দু’টি হামলার ঘটনায় যুক্ত অভিযোগে মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ইন্দাসে ঝামেলার ঘটনায় রবিবার বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘তিনটি হামলার ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’’

শনিবার রাত ন’টার পরে তৃণমূল কর্মীদের গাড়ি আটকানোকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল বাধে ওন্দার কাঁটাবাড়ি ও মাজডিহা এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওন্দার আগড়দা এলাকা থেকে তৃণমূলকর্মীদের একটি বাস কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। বাস ছাড়ার সময়েই তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে একপ্রস্ত বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। বাসটি কাঁটাবাড়ি সংলগ্ন ঝাঁটিবনি এলাকায় আসতেই আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, রাস্তায় গাছ ফেলে বাসটি আটকে দেওয়া হয়েছিল। যদিও পুলিশ সেই দাবি অস্বীকার করেছে। বাস আটকানোর খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের হস্তক্ষেপে বাসটি ছাড়া পেলেও জনতার ক্ষোভ গিয়ে পড়ে পুলিশের উপরে। অভিযোগ, পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বেধে যায় উত্তেজিত লোকজনের। পুলিশের গাড়ি লক্ষ করে ঢিলও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। জখম হন তিন পুলিশ কর্মী। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা দায়ের করে ঘটনাস্থল থেকেই চার জনকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু হয়।

এ দিকে মাজডিহা এলাকাতেও কলকাতাগামী তৃণমূল কর্মীদের বাস আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সাত জনকে গ্রেফতার করে। মাজডিহার ঘটনায় রাতেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে ওন্দা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।

ওই রাতে ছাতনা ব্লকের তৃণমূল কর্মীদের কলকাতাগামী বাসগুলি সোনামুখী-বর্ধমান রাস্তা হয়ে যাচ্ছিল। পথে ইন্দাস থানার নলডাঙা এলাকায় তিনটি বাস ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে রাস্তার পাশ থেকে বাসের উইন্ডস্ক্রিন ও জানলা লক্ষ করে ঢিল ছোঁড়া হয়। বাসের কাচ ভাঙে। ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়ায় ওই এলাকায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ওই অবস্থাতেই বাসগুলি কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেয়।

ছাতনা ব্লক তৃণমূল সভাপতি পরমেশ্বর কুণ্ডুর অভিযোগ, “বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা আমাদের আটকাতে হামলা চালিয়েছে। আমাদের কয়েকজন কর্মী ও বাস চালক আহত হয়েছেন।’’ সেই সুরেই রবিবার তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সংসদীয় জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা অভিযোগ করেছেন, “শনিবারই ওন্দায় সভা করতে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কলকাতাগামী আমাদের বাসে হামলা চালানোর জন্য উস্কানি দিয়ে গিয়েছিলেন। প্রত্যেকটি হামলার ঘটনায় বিজেপি জড়িত। কলকাতা থেকে ফিরে আমরা এর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করব।”

যদিও বাসে হামলার ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করেছেন দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ। তিনি দাবি করেন, “তৃণমূল নেতারা দিলীপবাবুর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করছেন। তিনি কেবল কাটমানি ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। তৃণমূল কর্মীদের বাসে হামলার ঘটনায় বিজেপির কোনও যোগ নেই।”

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Violence Arrest TMC Martyr's Day
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy