রামচন্দ্র ডোমের প্রচারে পা মিলিয়েছেন মহিলারা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
গত একটা বছর বামেদের অস্তিত্বই টের পাওয়া যায়নি বোলপুরের সিয়ান-মুলুক পঞ্চায়েত এলাকায়। অথচ বিদায়ী সাংসদ রামচন্দ্র ডোমের প্রচারে সেই এলাকাতেই পথে নামলেন হাজার খানেক সিপিএম কর্মী-সমর্থক।
ভোটের অঙ্কের বিচারে বোলপুর কেন্দ্রে এ বার সিপিএমের শক্ত লড়াই। গত বিধানসভা নির্বাচন ইস্তক তাদের একের পর এক শক্ত ঘাঁটি হাতছাড়া হয়েছে। গত তিন বছরে মুলুকে কোনও রকম দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পারেনি সিপিএম। গত বছর জানুয়ারিতে লাভপুরে কৃষক সভার বীরভূম জেলা সম্মেলনে এসেছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। কিন্তু গোটা সিয়ান-মুলুক এলাকা থেকে নেতা-কর্মীদের প্রায় কাউকেই দেখা যায়নি।
সিপিএমের অভিযোগ ছিল, ওই এলাকা থেকে তৃণমূল কাউকেই লাভপুরে যেতে দেয়নি সে দিন। বাস ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই থেকে সিয়ান-মুলুকে সিপিএম কার্যত ঘরে ঢুকে গিয়েছিল। এক সময়ে যে কোপাই লোকাল এলাকা ‘লালদুর্গ’ বলে পরিচিত ছিল, সেখানে এই পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছিল, ভোটের প্রচারে কী হতে পারে। কিন্তু এ দিনের মিছিল ছবিটা অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে।
এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ থেকে শুরু হয় সিপিএমের রোড-শো। প্রার্থীর সঙ্গে ছিলেন জোনাল ও লোকাল নেতারা। ডিওয়াইএফ নেতা-কর্মীরাও ছিলেন। সাহাজাপুর, পূর্ব ইসলামপুর, সিয়ান পূর্ব-পশ্চিম, ডিহিপাড়ায় ঘোরে মিছিল। তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষের জেরে যে ডিহিপাড়ায় বছরখানেক মাথাই তুলতে পারেনি সিপিএম। এ দিন অবশ্য কয়েকশো পুরুষ-মহিলা মিছিলে সামিল হন। কোন টনিকে তাঁরা ফের জেগে উঠলেন?
সিপিএম প্রার্থীর ব্যাখ্যা, “হয়তো আমরা বেরিয়েছি, তাই মানুষ সাহস পেয়েছেন। রুদ্ধশ্বাস অবস্থা থেকে মরিয়া হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন।” দলের বোলপুর জোনাল সম্পাদক উৎপল রুদ্রের দাবি, “তৃণমূলী সন্ত্রাসে যাঁরা অতিষ্ঠ হয়ে ছিলেন, তাঁরাই ভয়কে জয় করে সামিল হচ্ছেন।” তবে শুধু নেতারা তো নন, পাহারায় পুলিশও ছিল। সেটাও অনেককে অভয় জুগিয়েছে বলে এলাকার নেতাদের দাবি।
সাহাজাপুরের ধানু লোহার, পূর্ব ইসলামপুরের আলম শেখ, ডিহিপাড়ার সান্ত্বনা মাঝি, বৈদ্যনাথপুরের কমল দাসেরা জানান, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় মরিয়া হয়ে বেরিয়েছেন। বড় নেতাদের দেখে তাঁরা ভরসা পেয়েছেন। সন্ধ্যায় মুলুক এলাকার দক্ষিণপাড়া, আদিবাসীপাড়া, আদর্শপল্লি, মিরেপাড়া, মির্ধাপাড়াতেও প্রচুর সিপিএম সমর্থককে বেরোতে দেখা যায়।
তৃণমূলের বোলপুর ব্লক সভাপতি রহিম চৌধুরী অবশ্য দাবি করেন, “গত ৩৪ বছর ধরে বামেরা যা করেছে, তাদের থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ওদের পায়ের নীচে মাটি নেই।” তা হলে এত লোক বেরোচ্ছে কেন? তৃণমূল নেতা পাল্টা বলেন, “কোথায় এত লোক? হাতে গোনা কয়েক জন এসেছিল। দশ-বিশ জন যদি হয়েও থাকে, তারা এই এলাকার লোক নয়, বহিরাগত। এলাকার মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন, উন্নয়নের সঙ্গে আছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy