তৃণমূল কর্মীকে রাস্তা থেকে দলীয় কার্যালয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা সুব্রত ওরফে গোপে দত্ত ও তাঁর সঙ্গীদের গ্রেফতারের দাবিতে থানায় স্মারকলিপি দিল দলের অন্য গোষ্ঠী। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের পাত্রসায়র ব্লক সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলের কর্মীরা থানার ওসি-র সঙ্গে দেখা করে অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান। এরই মধ্যে এ দিন সকালে ময়রাপুকুরে গোপাল লোহার নামে এক তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
বুধবার দুপুরে পাত্রসায়র গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে ময়রাপুকুর গ্রাম সংসদ থেকে নির্বাচিত তৃণমূল সদস্যা আরতি বাস্কেকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে দলেরই দুই কর্মী শেখ জয়নাল মিদ্যা ও শেখ সুরজের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তারই জেরে প্রথমে জয়নালকে মারধর করা হয়, পরে তাঁরই সঙ্গী শেখ সুরজকে পাত্রসায়র বাসস্ট্যান্ড থেকে তুলে তৃণমূল কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর ও ছিনতাই করা হয়। টিএমসিপি-র নেতা সুব্রত দত্ত-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়। আবার জয়নাল ও সুরজের বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ হয় থানায়। থানার সামনে দুষ্কৃতীদের এই দাপাদাপিতে এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। পুলিশ অবশ্য বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাউকে ধরতে না পারায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরাও।
এ দিন স্নেহেশবাবুর নেতৃত্বে প্রায় ৪০০ জন কর্মী থানার সামনে জড়ো হন। পরে তাঁদের মধ্য থেকে ১৫ জন ওসির কাছে অভিযুক্তদের ধরার দাবি জানান। পাত্রসায়র ব্লকের তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের নেতা জহরলাল ওরফে ঝন্টু মিদ্যার অভিযোগ, “পাত্রসায়র বাসস্ট্যান্ড এলাকার এক তোলাবাজ লাঠি দেখিয়ে, বোমাবাজি করে এলাকার মানুষের শান্তি নষ্ট করছে। বহু নিরীহ মানুষকে পার্টি অফিসে তুলে নিয়ে এসে মারধর করেছে, ফোনে হুমকি শাসানি দিচ্ছে।” স্নেহেশবাবুর দাবি, এলাকার মানুষের স্বার্থে তিনি দলের সবস্তরের কর্মীদের সংযত হতে অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “তবে যাঁরা দলের নাম ভাঙিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি।’’ পাত্রসায়র থানার ওসি অমিত সিংহ মহাপাত্র অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বিষ্ণুপুরের এসডিপিও পরাগ ঘোষ দাবি করেন, “অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চলছে। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি।”
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ময়রাপুকুর গ্রামের মাঠে শৌচকর্ম করতে যাওয়া গোপাল লোহার নামে এক প্রৌঢ় তৃণমূল কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে দলের অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। স্নেহেশবাবুর অনুগামী তৃণমূল নেতা ঝন্টু মিদ্যার অভিযোগ, “গত রবিবার আমাদের শান্তি মিছিলে গোপাল লোহার হেঁটেছিলেন। সেই ‘অপরাধে’ শেখ ফটিক সাঙ্গোপাঙ্গোদের নিয়ে গোপালকে বেধড়ক মারধর করে। থানায় অভিযোগ করলে গ্রামছাড়া করারও হুমকি দিয়েছে ওরা।” তিনি জানান, খবর পেয়ে দলের কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে পাত্রসায়র ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফটিক-সহ কয়েকজনের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ফটিকের সঙ্গে অবশ্য চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশ এই ঘটনাতেও কাউকে গ্রেফতার করেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy