সিউড়ির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
ক্যাম্পাসিং নিয়ে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি এবং প্রশাসনিক অব্যবস্থার অভিযোগে কলেজের ডিরেক্টর, অধ্যাপক, পরিচালন সমিতির সদস্য এবং প্লেসমেন্টের দায়িত্বে থাকা অধিকারিকদের ঘেরাও করে রাখল একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার সিউড়ি বিআইইটি(বীরভূম ইন্সটিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়াংরি অ্যাণ্ড টেকনোলজি)-র ঘটনা। পড়ুয়াদের দাবি, কলেজের ডিরেক্টর ভবেশ ভট্টাচার্য, দুই প্লেসমেন্ট আধিকারিক ও কলেজ হোস্টেলের দায়িত্ব থাকা আধিকারিকের পদত্যাগ।
কলেজ সূত্রে খবর, সমস্যা মূলত ক্যাম্পাসিং বা জব প্লেসমেন্ট নিয়েই। অবস্থান বিক্ষোভে শামিল বি-ই কলেজের বিভিন্ন শাখার চতুর্থ বর্ষ বা ফাইনাল ইয়ারের পড়ুয়ারদের অভিযোগ, “ক্যাম্পাসিং যথাযথ না হওয়ায় কাজ পাচ্ছেন না ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়ারা। অথচ এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ উদাসীন।’’
এ দিন বিকাল থেকে শুরু হওয়া এই জটিলতা কাটেনি রাত আটটা পর্যন্ত। পড়ুয়ারারা তাঁদের দাবিতেই অনড় থাকায়, কখন সমাধান সূত্র মিলবে, সেটা স্পষ্ট নয়। এ দিকে ছাত্র বিক্ষোভের জেরে কিছুটা অসুস্থ বোধ করতে থাকেন ভবেশবাবু। ক্যাম্পাংসিয়ে খুব বেশি পড়ুয়া সুযোগ না পাওয়ার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, “রাজ্যজুড়ে কর্ম সঙ্কটের প্রভাব এখানেও পড়েছে। আমরা পড়ুয়াদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। তবে যে হারে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ বড়েছে, এত খরচের পরও যদি পড়ুয়ারা প্রতিষ্ঠিত না হতে পারেন, তাহলে ক্ষোভ তো স্বাভাবিক।”
পড়ুয়াদের দাবি, কলেজে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান নিয়ে এসে ক্যাম্পাসিং করানোর ক্ষেত্রে এই উদাসীনতা আগেও ছিল, বর্তমানেও রয়েছে। ফাইনাল ইয়ারের প্রায় চারশো জন পড়ুয়ার মধ্যে মাত্র জনা দশ বারো পড়ুয়াই কলেজে ক্যাপাসিংয়ে আসা গুটিকয়েক শিল্প সংস্থায় কাজ পেয়েছে। তাহলে অন্যদের ভবিষ্যত কী হবে?
পড়ুয়াদের আরও অভিযোগ, “হাতে গোনা গুটি কয়েক শিল্পসংস্থাকে ক্যাম্পাসিংয়ের জন্য নিয়ে আসা হয়। যে সব সংস্থা আসে তার মধ্যেও কিছু জাল সংস্থাকে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু আরও বেশি সংখ্যক এবং নামকরা শিল্প সংস্থা বা সংস্থাকে আনার ব্যাপারে কোনও উদ্যোগই চোখে পড়ে না। যেহেতু পুরো বিষয়টির দায় ভবেশবাবু এড়াতে পারেন না, তাই তাঁকে ঘেরাও করা হয়েছে। তাঁর পদত্যাগ চাই।”
তাঁরা বলেন, কলেজে ভর্তির সময় উন্নয়নের খাতে যে বিপুল পরিমান টাকা নেওয়া হয়, সেই টাকায় ঠিক কী উন্নতি ছাত্র ছাত্রীদের হয়েছে সে ব্যাপারে উত্তর দিতে ব্যর্থ ডিরেক্টর। বিভিন্ন সংস্থাকে কলেজে ক্যাম্পাসিংয়ের জন্য নিয়ে আসার দায়িত্বে থাকা ট্রেনিং প্লেসমেন্টের দুই আধিকারিক দায়িত্ব পালন করেননি। সেই কারণেই, তাঁদেরও ইস্তফা দাবি করেছে পড়ুয়ারা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রেনিং ও প্লেসমেন্টের দায়িত্ব থাকা এক আধিকারিক অবশ্য ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “এই মফঃস্বল শহরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যে সব সংস্থাকে ক্যাম্পাসিংয়ের জন্য নিয়ে আসা সম্ভব, তাঁদেরই ডাকি। সংস্থা এলে ছাত্র-ছাত্রীদেরকেই তাঁদের যোগ্যতা প্রমাণ করে কাজ পেতে হবে।”
ওই আধিকারিকের আরও দাবি, “যেখানে গোটা রাজ্যে শিল্প রুগ্ন। কাজের সুযোগ নেই। বাইরে থেকে এখানে আসা সংস্থাগুলি প্রথমে নিজেদের রাজ্যের ছেলেমেয়েদের নেওয়ার পরে, তারপর এখানে আসে স্বভাবতই সকলের ইচ্ছা পূরণ সম্ভব নয়।” কলেজ হোস্টেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক রাজদূত মুখোপাধ্যায় বলেন, “নিয়ম শৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেটা অনেক সময় পড়ুয়াদের পছন্দ নাও হতে পারে। ক্ষোভ থাকতে পারে। এ দিনের বিক্ষোভে পড়ুয়াদের তেমন ক্ষোভেরই প্রকাশ ঘটেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy