নতুন কিছু চমকের আভাস ছিল। কিন্তু আদপে তা হল না। প্রথা মেনে সম্পাদকমণ্ডলী থেকেই জেলা সম্পাদক বাছাই করল সিপিএম। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পরে বাঁকুড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদকের পদ থেকে সরে গেলেন অমিয় পাত্র। তাঁর জায়গায় এলেন প্রায় ১২ বছর ধরে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পোড় খাওয়া সিপিএম নেতা অজিত পতি। তবে রাজ্যের নির্দেশে বেশ কিছু নতুন মুখ দেখা গিয়েছে জেলা কমিটিতে। অন্য দিকে, স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন জেলার প্রাক্তন দুই মন্ত্রী পার্থ দে ও উপেন কিস্কু।
সোনামুখীতে শুরু হওয়া দু’দিন ব্যাপী সিপিএমের ২১তম জেলা সন্মেলন শেষ হল বৃহস্পতিবার। অমিয়বাবু যে সরছেন তা অবশ্য আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। তবে তাঁর জায়গায় কে দলের রাশ ধরবেন তা নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা। সেখানে যে ক’জন নেতার নাম উঠে এসেছিল তাঁদের মধ্যে অজিতবাবুর নাম ছিল প্রথম সারিতে। কিন্তু সব কিছু উলট পালট হয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর বাইরে থেকেও কেউ উঠে আসতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলেছিল খোদ অমিয়বাবুর কথাতেই। তবে এ দিন সব জল্পনার শেষ হয় অজিতবাবুর নাম ঘোষণা হওয়ার পরে। খাতড়ার বাসিন্দা অজিতবাবু ছাত্র জীবন থেকেই বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ ও সভাপতি। এ ছাড়াও জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছেন তিনি। বর্তমানে সিপিএমের কৃষক সংগঠন কৃষক সভার জেলা সম্পাদক পদেও রয়েছেন অজিতবাবু। সম্পাদক ঘোষণা হওয়ার পরে এ দিন তিনি দলের সর্বস্তরের কর্মীদের এক সঙ্গে নিয়ে চলারই বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “দল আমাকে এই জায়গায় এনেছে। দলের সমস্ত স্তরের কর্মী ও রাজ্য নেতাদের সিদ্ধান্ত মতই আমি কাজ করব।” দীর্ঘ ২০ বছর ধরে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পরে অবশেষে সরে গিয়ে এ দিন অমিয়বাবুর গলায় কিছুটা আবেগ ঝরে পড়ল। তিনি বললেন, “একদিন সবাইকে সরে গিয়ে নতুনকে জায়গা করে দিতে হয়। সেই মতো আমাকে সরতে হয়েছে। তবে অজিত একজন যোগ্য কর্মী। ছাত্র জীবন থেকেই সে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। একজন যোগ্য কর্মী হিসেবেই সে এই দায়িত্ব পেয়েছে।”
সিপিএমের জেলা কমিটিতে অবশ্য এ বার চমক দেখা গিয়েছে। এ বার ৫১ জনের জেলা কমিটি গড়েছে সিপিএম। নতুন ১৯টি মুখ উঠে এসেছে জেলা কমিটিতে। স্বেচ্ছায় সরে গিয়েছেন পার্থবাবু, উপেনবাবুরা। এ ছাড়াও কমিটি থেকে সরে গিয়েছেন বিষ্ণুপুরের জয়ন্ত চৌধুরী, বড়জোড়ার তরুণ রাজের মতো সিপিএম নেতারা। পুরনো কমিটি থেকে মোট ২১ জন সরে গিয়েছেন। নতুন করে তিনজন মহিলা বাঁকুড়ার শর্মিলা চৌধুরী, বিষ্ণুপুরের প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা বাউরি, ইন্দাসের কাকলি দত্তকে জেলা কমিটিতে নেওয়া হয়েছে। গত বারের তিনজন মহিলা সদস্যকে নিয়ে এ বারের জেলা কমিটিতে মোট ছ’জন মহিলা সদস্যকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। জেলা কমিটিতে নতুন মুখদের মধ্যে রয়েছেন জেলার ১১টি জোনালের নতুন সম্পাদকেরা। অমিয়বাবু বলেন, “রাজ্য থেকে যুব ও মহিলাদের সামনের সারিতে নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তাই নতুন ছেলে মেয়েদের বেশি পরিমানে নেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy