সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক। মুজফ্ফর আহমেদ ভবনে। —নিজস্ব চিত্র।
প্রথমে সাড়া জাগিয়ে ময়দানে নেমেও আর জি কর-কাণ্ডে সিপিএম গুটিয়ে গেল কেন, প্রশ্ন উঠছিল দলের অন্দরেই। সংশয় তৈরি হচ্ছিল রাজনৈতিক শিবিরের একাংশেও। দলের মধ্যেই এ বার সেই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে রাজ্য সম্পাদকের বক্তব্য, আর জি করের ঘটনার পরে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন বিচারের দাবিতে। নাগরিক প্রতিবাদের উপরে ‘দলীয় কর্তৃত্ব’ চাপিয়ে দেওয়া তাঁদের উদ্দেশ্য নয়। মানুষের আন্দোলন চলবে। তার পাশাপাশি, ন্যায়-বিচারের জন্য দল হিসেবে রাস্তায় থাকবে সিপিএমও। মূলত শহর ও মফস্সলে যে প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে, তাকে গ্রামাঞ্চলে সংগঠিত করার বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
আর জি কর-পরবর্তী পরিস্থিতি মাথায় রেখে কল্যাণীতে দলের রাজ্য কমিটির তিন দিনের বর্ধিত অধিবেশন স্থগিত করেছে সিপিএম। পরিবর্তে শুক্রবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বসেছিল এক দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক। ঠিক হয়, আর জি করে হামলা এবং সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টের জন্য প্রতিবাদীদের পুলিশি তলবের প্রতিবাদে আজ, শনিবার ‘লালবাজার চলো’ কর্মসূচি হবে। পুলিশি নোটিসপ্রাপ্তদের হয়ে আইনজীবীরা লালবাজারে যাবেন। কলেজ স্ট্রিট থেকে লালবাজারের দিকে মিছিল করে সঙ্গে যাবেন এসএফআই, ডিওয়াইএফআই এবং গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কর্মী-সমর্থকেরা। সচরাচর ১ সেপ্টেম্বর ‘সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী দিবস’ পালন করে বামেরা। আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বামফ্রন্টের উদ্যোগে ওই দিন মিছিল ও সমাবেশের পরিকল্পনা হয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে।
বৈঠকের ফাঁকে সেলিম এ দিন বলেছেন, “বিভিন্ন সময়েই দেখা গিয়েছে, সিবিআই তদন্ত হাতে নিলেও বিশ বাঁও জলে চলে যায়। তারাও কাঠামোর অংশ। ফলে, সিবিআই-তদন্তে যেমন নজর থাকবে, তেমনই সব অংশের রাস্তায় থাকা জরুরি। ন্যায়বিচারের দাবি আদায় করতে হবে রাস্তায় থেকেই।” শুধু শহরভিত্তিক কেন্দ্রীয় কর্মসূচি না-করে স্থানীয় স্তরে প্রতিবাদ-আন্দোলন চালানো ও গ্রামাঞ্চলের মানুষকেও নারী নিরাপত্তা, অপরাধীর শাস্তি ও স্বাস্থ্য-দুর্নীতির প্রতিবাদে শামিল করার বার্তা জেলা নেতৃত্বকে দেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে। রাজ্যকে বিঁধে সেলিম বলেন, “রাজ্য সরকারই তো আর জি করের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত। তার বদলে তাঁকে পাশের হাসপাতালে অধ্যক্ষ করা হল। নগরপালকে সরিয়ে দিতে পারত। তা করা হল না। উল্টে পুলিশকে দিয়ে প্রতিবাদ দমনে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে।”
নারী নির্যাতনের বেড়ে চলা ঘটনার প্রেক্ষিতে কড়া আইন ও দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেলিমের মন্তব্য, “পার্ক স্ট্রিট থেকে একের পর এক ঘটনায় আক্রান্তকেই দোষী সাজানো হয়েছে। আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাস্তার দখল নিয়েছেন মহিলারাই। প্রতিবাদের ধরন দেখে মুখ্যমন্ত্রী এখন চিঠি পাঠিয়ে আইন করতে বলছেন প্রধানমন্ত্রীকে। আইনের অভাব নেই। আসল কথা হল, সরকারের সদিচ্ছা আছে কি না!”
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষকে সম্প্রতি পদ থেকে ‘ছুটি’ দিয়েছে সিপিএম। সেই সিদ্ধান্ত রাজ্য কমিটিতে অনুমোদিত হয়েছে। সিপিএম সূত্রে খবর, সুশান্তের বিরুদ্ধে এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই সদস্য রেখা গোস্বামী ও শ্রীদীপ ভট্টাচার্য। তদন্ত এখন চলবে। সুশান্ত এ দিন রাজ্য কমিটির বৈঠকে ছিলেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy