Advertisement
১৫ অক্টোবর ২০২৪
CPM DYFI

নারীনিগ্রহে শাস্তি পাওয়া ছাত্রনেতাকে যুব কমিটিতে ‘অভিনন্দন’, জুটল সংগঠনে পদও, ঘোর বিতর্কে সিপিএম

সিপিএম সূত্রের খবর, ওই নেতার বিরুদ্ধে এক তরুণী হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। তার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম তাঁকে প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ডও করেছিল।

CPM DYFI

ছবি প্রতীকী। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।

শোভন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৬
Share: Save:

দলের যুব সংগঠনের আঞ্চলিক কমিটির সম্মেলনে নেতা নির্বাচন ঘিরে জোর বিতর্ক দক্ষিণ ২৪ পরগনা সিপিএমে। শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনা নয়। লাগোয়া কলকাতা জেলাতেও সেই বিতর্কের আঁচ পড়েছে। রবিবার ছিল সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের যাদবপুর মধ্য আঞ্চলিক কমিটির সম্মেলন। সেখানে সহ-সম্পাদক পদে নিয়োগ করা হয়েছে অভিনন্দন দত্তগুপ্ত নামের এক তরুণ নেতাকে। তাঁকে সংগঠনের মুখপত্রের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। এই নেতাকে নিয়েই যাবতীয় বিতর্ক।

সিপিএম সূত্রের খবর, এই তরুণ যখন ছাত্র সংগঠন করতেন, তখন তাঁর বিরুদ্ধে এক তরুণী হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। তার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম তদন্ত কমিশন গঠন করে। সেই কমিশন সব পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ করে অভিনন্দনকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করে। পাশাপাশি, ছাত্র সংগঠনের সমস্ত পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সেই তাঁকেই কেন একটি আঞ্চলিক কমিটির সহ- সম্পাদক তথা সংগঠনের মুখপত্রের দায়িত্ব দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে। যুব সংগঠনের অনেকেই বলছেন, স্থানীয় পার্টির ‘আস্কারা’তেই যা হওয়ার হয়েছে। এতে মহিলাদের মধ্যে ‘নেতিবাচক’ বার্তা যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।

আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে অভিনন্দনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি শুরুতেই জানতে চান, তাঁর ফোন নম্বর কে দিয়েছেন। নম্বরের সূত্র জানানো যাবে না জানিয়ে তাঁর কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে অভিনন্দন বলেন, ‘‘সম্মেলন হয়েছে। সেখানে কোনও বিতর্ক তো হয়নি! বিতর্ক হচ্ছে, এমন কোনও খবরও আমার কাছে নেই।’’ সিপিএমের যুব সংগঠনের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি অপূর্ব প্রামাণিকও উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনে। তিনি বলেন, ‘‘যা হয়েছে, সাংগঠনিক পদ্ধতি মেনেই হয়েছে।’’

সিপিএম সূত্রের খবর, স্থানীয় স্তরে দলের মধ্যে এক ‘প্রভাবশালী’ দম্পতির হাত রয়েছে এই তরুণ নেতার মাথার উপর। যে দম্পতি বাম জমানার শেষ এক দশক যাদবপুর কার্যত শাসন করতেন বলে শোনা যায়। সিপিএম সূত্রে আরও খবর, জেলা কমিটি এই তরুণ নেতাকে সাসপেন্ড করার পর স্থানীয় স্তরের কমিটি তাকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য কন্ট্রোল কমিশনে পর্যন্ত গিয়েছিল। কিন্তু কন্ট্রোল কমিশন সব দেখে জানিয়ে দেয়, কম বয়স বলে শুধরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। না হলে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা উচিত ছিল।

তবে সিপিএমের অনেক নেতার মতে, এটি বিক্ষিপ্ত ভাবে যাদবপুরের বিষয় হিসাবে দেখলে হবে না। নারীনিগ্রহ, দলের মহিলা কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে তাঁদের হেনস্থা করার ঘটনা ক্রমশ সংক্রমণের আকার নিচ্ছে। কয়েক মাস আগেই টালিগ়ঞ্জের এক যুব নেতাকে একই কারণে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে কলকাতা জেলা সিপিএম। উত্তর ২৪ পরগনাতেও এই ঘটনার উদাহরণ রয়েছে বলে খবর। সেখানে আবার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগকারিনী জেলা ও রাজ্য কমিটিতে নালিশ করেও বিচার পাননি বলে খবর। এ নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমেও বিতর্ক রয়েছে। সামগ্রিক ভাবে যা নিয়ে উদ্বেগে সিপিএম।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE