Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
DA Controversy

মহার্ঘ ভাতা কি অধিকার? কী বলছে জনতা?

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪৫
Share: Save:

কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দাবি করে আন্দোলন করছেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। এই আন্দোলন ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা এবং আইনি বিতর্ক— ডিএ কি সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার?

এই বিতর্কে লিখিত ভাবে অংশ নিতে আনন্দবাজার অনলাইন আহ্বান করেছে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে। পক্ষে-বিপক্ষে আমরা বহু মতামত পেয়েছি এবং পাচ্ছি। নির্বাচিত লেখাগুলি প্রকাশ করা হচ্ছে। যেমন যেমন মতামত আসছে, তেমন তেমন প্রতি দিন এই পাতাতেই সেগুলি প্রকাশিত হতে থাকছে। নজর রাখুন।

পক্ষে
মহার্ঘ ভাতাকে ‘অধিকার’ বা ‘অনধিকার’ এই ঘেরাটোপের বাইরে রেখে বেতনের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসাবে মনে করুন। মূল্যবৃদ্ধি হলে এটিরও বৃদ্ধি হওয়া দরকার। দেশে বাজারমূল্য শেষ কয়েক দশকে কখনও স্থির রয়েছে বা কমেছে বলে শোনা যায়নি। সরকার মূল্যবৃদ্ধি আটকানোর ব্যবস্থা নিক। তা হলেই ল্যাটা চুকে যায়। ডিএ নিয়ে ভাবতেই হবে না।
অর্ক চক্রবর্তীখড়দহ
বিপক্ষে
সরকারি কর্মচারীরা বাড়তি মহার্ঘ ভাতা দাবি করলে তাঁদের কাজ এবং অকাজের দায়িত্বও নিতে হবে। সরকারি কর্মচারীরা অনেক সময় সাধারণ মানুষকে যে ভাবে হেনস্থা করেন, তার দায়িত্ব কে নেবে? অধিকাংশ লোক মহার্ঘ ভাতা থেকে বঞ্চিত। সরকারি কর্মচারীরা এর দাবিদার হলে আগে তাঁদের নিজেদের কাজের উৎকর্ষ এবং দক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে।
তীর্থঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়গ্রেটার লন্ডন (ব্রিটেন)
পক্ষে
যদি ব্যবসায়ীরা জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি করে সেই দামে কিনতে আমাদের বাধ্য করেন, তবে মহার্ঘ ভাতা অবশ্যই অধিকার। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে মহার্ঘ ভাতা সমানুপাতিক। অন্য রাজ্যগুলো কি বোকা? তারা কেন মহার্ঘ ভাতা দেয়? সরকারি কর্মচারীদের বেতন ছাড়া আয়ের বিকল্প কোনও পথ নেই। সুতরাং মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে তাল রেখে ডিএ দেওয়া সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি।
অরিন্দম নাগকলকাতা
বিপক্ষে
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা প্রাপ্তির আইনানুগ অধিকার নেই। ‘ফান্ডামেন্টাল রুলস’ অনুযায়ী এটি সরকারের ‘মহানুভবতা’। দিতে পারে, না-ও দিতে পারে। এটি আদালতেরও এক্তিয়ারভুক্ত নয়। আপাতদৃষ্টিতে এই ভাতার দাবিটি নৈতিক হলেও, আইনি স্বীকৃতি নেই। সরকারি নিয়োগের শর্তাবলীতে প্রতি বছর বেতনবৃদ্ধির উল্লেখ থাকে। ডিএ-র হার বৃদ্ধির উল্লেখ থাকে না।
চন্দ্রাণী মান্নাকলকাতা
পক্ষে
রাজ্য সরকারের কাছে ক্লাব, লক্ষ্মীর ভান্ডার, মেলা-খেলা— সব কিছুর জন্য টাকা আছে। তা হলে মহার্ঘ ভাতা দিতে পারবে না কেন? সব রাজ্য সরকার দিচ্ছে। আমাদের সরকারকেও দিতে হবে।
মহম্মদ জিয়াউদ্দিন মোমিনইংরেজ বাজার
বিপক্ষে
মহার্ঘ ভাতা নিয়োগকর্তার মানবিকতার উপর নির্ভর করে। বেতন কর্মচারীদের শ্রমের মূল‍্য। কিন্তু মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার জন‍্য প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সঙ্গতি থাকার দরকার। মহার্ঘ ভাতার জন‍্য সংস্থাকে দুর্বল করে দেওয়া ঠিক নয়। এটা করে কর্মীদের ক্ষতিই হয়।
কল্যাণ দে সরকারকলকাতা
পক্ষে
মহার্ঘ ভাতা অবশ্যই অধিকার। বাজারের দ্রব্যমূল্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধির জন্য বাচ্চাদের পড়াশোনা, চিকিৎসা, সংসার খরচ চালাতে পারা যায় না। সে জন্যই মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়। আমার পরামর্শ, যাঁদের বেসিক ৮০ হাজার টাকার বেশি, তাঁদের ডিএ বন্ধ করে, যাঁদের বেসিক ৮০ হাজার বা তার কম, তাঁদের দেওয়া হোক। এতে সরকারের আর্থিক দায়ভার কমে যাবে।
সুতপা দাস রায়কলকাতা
বিপক্ষে
চোখের সামনে নুন আনতে পান্তা ফুরোনো মানুষগুলো একটু বেশি আয়ের জন্য ছটফট করছে। সেই রাজ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা মানায় না। বেকারত্ব এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, কোনও নিম্নমানের চাকরির জন্যও বড় বড় ডিগ্রিধারীরা আবেদন করছেন। এ অবস্থায় সরকারি কর্মচারীরা যে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন, সেটাই যথেষ্ট।
তাপস পালনামখানা
পক্ষে
যেখানে মূল্যবৃদ্ধির মাপকাঠির উপর ভিত্তি করে সারা দেশে ডিএ নির্ধারণ করা হয়, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ দেশের একটি অংশ হয়েও কনজ়িউমার প্রাইস ইনডেক্স কেন মানবে না? রাজ্যের প্রতিটি প্রকল্পের সুবিধা এই সরকারি কর্মচারীরাই প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেন। তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে এ ভাবে কত দিন চলবে?
দেবাশীষ রক্ষিতকলকাতা
বিপক্ষে
মহার্ঘ ভাতা কোনও সাংবিধানিক অধিকার নয়। কোভিডের সময় বিভিন্ন রাজ্য কর্মীদের বেতন বন্ধ বা অর্ধেক করে দিলেও বাংলায় তা হয়নি। অন্য দিকে অন্যান্য ভাতার বিরোধিতা করে মহার্ঘ ভাতা পাওয়াকে অধিকার বলা যায় না। সরকারি কর্মীরা বেসরকারি কর্মীদের ১০ শতাংশ গতিতে কাজ করলেও অনেক দ্রুত হত সব প্রক্রিয়া।
শুভম গঙ্গোপাধ্যায়কলকাতা
পক্ষে
ডিএ সরকারি কর্মচারীদের অনেক লড়াই, সংগ্রামের ফল। অনেকে বলছেন, যাঁরা ডিএ পান না তাঁদের কী হবে? আমার ব্যাক্তিগত মত হল, তাঁরাও লড়াই, সংগ্রাম করে অধিকার অর্জন করুন। সরকারি কর্মচারীরা ডিএ পেলে অন্যদের হিংসা করে কী লাভ হয়?
দিলীপ মণ্ডলপুরুলিয়া
বিপক্ষে
মহার্ঘ ভাতা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। এটি অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ায় এবং অপরাধপ্রবণতা বাড়ায়। আমি মনে করি মহার্ঘ ভাতা এক প্রকার ঘুষ। ভাতা জনকল্যাণমূলক নীতি হতে পারে না, বরং এটা জীবন্ত অভিশাপ। সরকার দুর্বল হয়ে পড়ে।
গুরুদাস শিটবিষ্ণুপুর
পক্ষে
অধিকার তো বটেই! যদি না হয় তো আদালতে বলুক যে ডিএ সরকারি কর্মচারীদের অধিকার নয়, তাই দেব না। তখন কেন টাকা নেই বলছে?
রবি মাহাতপুরুলিয়া
বিপক্ষে
ডিএ কখনওই অধিকারের মধ্যে পড়ে না। যেখানে বেকারত্বের জ্বালা, প্রচুর সরকারি চুক্তিভিত্তিক কর্মীর ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেতন অথচ সমান শিক্ষাগত যোগ্যতা, সেখানে সরকারি কর্মচারীদের ৪০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বাড়ালে প্রচুর বেতন-বৈষম্য সৃষ্টি হবে।
রাজু সরকারবর্ধমান
পক্ষে
ডিএ একটি সাংবিধানিক অধিকার। বাজারমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যা দেওয়া হয়। ডিএ-র ক্ষেত্রে অন্য কোনও প্রকল্পের অজুহাত প্রযোজ্য নয়। রাজ্য কোথা থেকে, কী ভাবে দেবে সেটা রাজ্যের নিজস্ব বিষয়।
সারদা প্রসাদ মণ্ডলদমদম
বিপক্ষে
আমি আমেরিকায় থাকি। তাই ঠিক নিয়মকানুন জানি না। তবে মনে হয়, ভাতা কত হবে সেটা সরকার ঠিক করবে। এ নিয়ে কোনও জোরজার করা যায় না।
স্বরাজ চক্রবর্তীওহিয়ো (আমেরিকা)
পক্ষে
মহার্ঘ ভাতা অবশ্যই কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার, যা ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে। দ্রব্যমূল্য সূচক নির্ধারণ করা কোনও রাজ্যের কাজ নয়,তা করে থাকে স্বতন্ত্র সংস্থা। আমি কলেজে কর্মরত একজন সহকারী অধ্যাপক, আইনজ্ঞ না। তবে এটাও জানি, উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সঙ্গে মহার্ঘ ভাতার বিরোধ থাকতে পারে না। কর্মীদের বঞ্চিত করে কী ভাবে উন্নয়ন হয়?
নারায়ণ সামন্তকলকাতা
বিপক্ষে
মহার্ঘ ভাতা কখনওই অধিকার নয়। যে হেতু জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী, তাই সরকারের উচিত কর্মচারীর কষ্ট লাঘব করা। তবে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ সরকারের আওতায়।
অজিত কুমার গঙ্গোপাধ্যায়কলকাতা
পক্ষে
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রত্যেকটি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার তার কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা প্রদান করে। একটি উদ্দেশ্য নিয়েই কর্মচারীদের ডিএ দেওয়া হয়, যাতে তাঁদের ক্রয়ক্ষমতা ঠিক থাকে। এর ফলে বাজার অর্থনীতিও চাঙ্গা হয় বলে অর্থনীতিবিদদের অভিমত।
অভিজিৎ দত্তজিয়াগঞ্জ
বিপক্ষে
মহার্ঘ ভাতা কখনওই অধিকার হতে পারে না। যাঁরা বেসরকারি চাকরি করেন, তাঁরা মহার্ঘ ভাতা পান না। এমনকি ব্যাঙ্কে অনেক সময় মহার্ঘ ভাতা কমে যায়। তা হলে মহার্ঘ ভাতা অধিকার কী করে হল? এমনকি, সুপ্রিম কোর্টের ১৯৫৪ সালের অর্ডারে আছে যে, মহার্ঘ ভাতা কোনও অধিকার নয়, এটি অনুদান।
রনি মিত্রহাওড়া
পক্ষে
সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার জন্যই তার কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দিতে হয়। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব সরকারেরই। সেই কারণেই মহার্ঘ ভাতা কর্মচারীদের অধিকারের মধ্যে পড়ে।
উৎপল ভট্টাচার্যভাটপাড়া
বিপক্ষে
ভাতা কখনও বাধ্যতামূলক হতে পারে না। দেশের ৯৮ শতাংশ মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা স্থিতিশীল নয়। তাঁদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। সরকারি কর্মচারীরা আর্থিক ভাবে স্থিতিশীল। নির্দিষ্ট হারে মহার্ঘ ভাতার দাবি অন্যায্য।
সিদ্ধার্থ দত্তচৌধুরীভদ্রেশ্বর, হুগলি
পক্ষে
বাজার অর্থনীতির নিয়মে মূল্যবৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী। তাই জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান দামের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ডিএ দেওয়া রাষ্ট্রের কর্তব্য।
সাগ্নিক দাসকলকাতা
বিপক্ষে
৩০০ টাকার জন্য বহু সাধারণ মানুষকে সারা দিন পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু অতিরিক্ত অনুদানের আশায় যাঁরা আজ আন্দোলন করছেন, তাঁদের বেতন কি সে তুলনায় কম? তাঁরা কখনও এই অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন কি? না কি, যে হেতু তাঁরা সরকারি চাকরি পেয়েছেন, তাই তাঁদের চাহিদা বেশি।
সুদীপ দেকোচবিহার
পক্ষে
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে তাল রেখে সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়। এটা দীর্ঘ দিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার অনুসরণ করে আসছে। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করুক। তা হলেই মহার্ঘ ভাতার প্রয়োজন হবে না। মহার্ঘ ভাতা বাজারেই খরচ হয়। তাই এটা থেকে বঞ্চিত করলে গোটা সমাজ বঞ্চিত হয়।
সুব্রত চক্রবর্তীবগুলা
বিপক্ষে
বেকার ভাতা যেমন অনুদান, মহার্ঘ ভাতাও তাই। বেকার ভাতা এক সময়ে চালু ছিল, কিন্তু অর্থের অভাবে সরকার বন্ধ করেছে। এগুলো অধিকার হতে পারে না।
সুদীপ কুমার দেকলকাতা
পক্ষে
মেলা, খেলা আর লক্ষ্মীর ভান্ডার দিয়ে ভোট না কিনে প্রাপ্য পাওনা দেওয়াটা সরকারের রাজধর্মের মধ্যে পড়ে। ডিএ সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা।
সাহেব পরামানিকরাজগ্রাম, বাঁকুড়া
বিপক্ষে
মহার্ঘ ভাতা পাওয়া উচিত। কিন্ত কেন্দ্রীয় হারে না-ও হতে পারে। সরকারের সকল জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই জনগণের টাকায় তার নিজস্ব কর্মীদের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বিশেষ করে যখন সেই কর্মীদের অধিকাংশ তাদের কর্তব্য ও দায়বদ্ধতার প্রতি সচেতন নয়।
দেবাশিস সিংহদুর্গাপুর
পক্ষে
মহার্ঘ ভাতা কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার। এই অধিকার থেকে কর্মচারীদের বঞ্চিত করার অর্থ কর্মীদের অধিকারকে উপেক্ষা করা। সরকারের অন্যতম চালিকাশক্তি সরকারি কর্মচারীরা। সরকারি প্রকল্পগুলির সফল রূপায়ণে কর্মচারীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সুতরাং মহার্ঘ ভাতা থেকে শ্রমিকদের বঞ্চিত করা উচিত নয়।
কুন্তল চক্রবর্তীবনগাঁ
বিপক্ষে
এক শ্রেণির মানুষকে অতিরিক্ত রক্ষাকবচ দেওয়ার দরকার নেই। সরকারি বিদ্যালয়ে পড়তে কেউ চায় না, কিন্তু পড়াতে সবাই চায়। আবার সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার থেকে বেসরকারি হাসপাতালে লোকে জায়গা খোঁজে। এর কারণগুলো নিয়ে ভাবুন। তার পর বলুন, ডিএ এবং অন্য সুবিধা দেওয়ার কতটা দরকার আছে সরকারি কর্মচারীদের।
কৌস্তভ রায়কলকাতা
পক্ষে
ডিএ মানুষের অধিকার। তা ঠিক হওয়া উচিত মূল্যবৃদ্ধি সূচক অনুযায়ী। সরকার বা অন্য কারও ইচ্ছায় নয়। এতে সরকার স্বেচ্ছাচারী হওয়ার সুযোগ পাবে। ‘এক দেশ এক আয়কর’ হলে, ‘এক দেশ এক বেতন’ ব্যবস্থা হবে না কেন?
অন্তরা মণ্ডলকলকাতা
বিপক্ষে
সরকারি কর্মচারীরা যে বেতন পাচ্ছেন তাতে তাঁদের সংসার ভাল ভাবেই চলে। সরকারি কর্মীর সংখ্যা দেশের জনসংখ্যার ৪-৫ শতাংশ। তা হলে অবশিষ্ট ৯৫ শতাংশ কি দেশের নাগরিক নন? আমি এই একপেশে দাবির বিপক্ষে।
সুবীর চক্রবর্তীবালি
পক্ষে
আমি গ্রুপ সি কর্মচারী। আমি আমার কাজের তুলনায় বেতন অনেকটাই কম পাই। তাই আমার ডিএ দরকার।
অনুপ তিওয়ারিকাঁথি
বিপক্ষে
মহার্ঘ ভাতা একদম দেওয়া উচিত নয়। এমনিতেই সরকারি কর্মচারীদের যা বেতন দেওয়া হচ্ছে সেটাই অনেক বেশি। মহার্ঘ ভাতার টাকা গরিব মানুষের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। তাতে সামাজিক বৈষম্য দূর হবে।
‌কারীবুল ইসলাম মোল্লাপছিয়ারা
পক্ষে
আমি সরকারি কর্মচারী নই। আমার কোনও আত্মীয়ও সরকারি কর্মচারী নয়। কিন্তু তাই বলে মিথ্যা বলি কী করে? ডিএ সরকারি কর্মীদের ন্যায্য অধিকার। এবং এতে রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকাটাই অত্যন্ত ভুল নিয়ম। ডিএ না দেওয়া অত্যন্ত অন্যায়।
শুভজিৎ মণ্ডলকলকাতা
বিপক্ষে
মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হোক কাজের নিরিখে। খেটে-খাওয়া সরকারি কর্মীরা (সংখ্যায় কম) পান সম্পূর্ণ ভাতা। ঘুষখোর, অলস কর্মীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হোক ব্যবস্থা। কথায় কথায় কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলনের সলতে পাকালে শোকজ় নয়, কাটা হোক ৭ দিনের বেতন।
বোধিসত্ত্ব বন্দ্যোপাধ্যায়চন্দননগর
পক্ষে
রাজ্য সরকার যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে তার কর্মচারীদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, তবে অখণ্ড ভারতের ভিতরে আর এক ভারত তৈরি হবে, যেটা কাঙ্ক্ষিত নয়। কল্যাণকর রাষ্ট্রের পক্ষে মঙ্গলদায়কও হতে পারে না। মহার্ঘ ভাতা অবশ্যই এক জন কর্মচারীর অধিকার। এটা সরকারের মর্জিমাফিক হতে পারে না।
কল্যাণ সাহাবর্ধমান
বিপক্ষে
ডিএ বাড়লে এক শ্রেণির কর্মচারীর হাতে বেশ কিছু টাকা আসবে। কিন্তু অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মচারীদের সঙ্গে বৈষম্য বাড়বে। বাজারে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। বরং বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা যথেষ্ট পরিমাণে অর্থ উপার্জন করেন। আমার মনে হয় ডিএ না বাড়ানোই ভাল।
সুপ্রতিম গুপ্তকলকাতা
পক্ষে
বাবার আমল থেকেই শুনে আসছি ডিএ বাড়ে। আজ কী এমন হল যে ডিএ অধিকার না হয়ে অনধিকার হয়ে পড়ল? তা হলে তো বলতে হয়, রাজনীতি করলেই মন্ত্রী হওয়া যাবে না। যোগ্যতা চাই!
মনোজিৎ কুমার দাসসিউড়ি
পক্ষে
দীর্ঘ সংগ্রামের ফলেই সরকারি কর্মচারীরা মহার্ঘ ভাতার অধিকার অর্জন করেছেন। বেতনক্রম সংশোধিত হয় ১০ বছর ব্যবধানে। এর মধ্যে মুদ্রাস্ফীতির ফলে যে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে, তার ক্ষতি কিছুটা পূরণ করার জন্যই মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়। সরকার মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে পারছে না বলেই মহার্ঘ ভাতা দেওয়াটা তাদের কর্তব্য।
প্রদীপ কুমার দত্তকলকাতা
বিপক্ষে
এত টাকা পাওয়ার পরেও দিনের পর দিন চিৎকার করাটা মানায় না। কেন্দ্রীয় সরকারেরও ডিএ তুলে দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজে বা বেকারদের জন্য টাকাটা কাজে লাগানো দরকার। একটা ফ্যামিলি মাসে ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার পরও বলবে এতে হচ্ছে না। আর এক জনের সেখানে ২-৫ হাজার টাকাতে কী ভাবে চলবে?
সুতনু গুপ্তবর্ধমান
পক্ষে
ডিএ অবশ্যই কর্মচারীদের অধিকার। হাই কোর্টের রায়ে তা প্রতিষ্ঠিত। রাজ্য সরকার যত রকমের প্রকল্প ঘোষণা করছে, তা আমরা বাস্তব রূপ দিই। কিন্তু আমাদের রাজ্য সরকার বছরের পর বছর ঠকাচ্ছে।
শুভঙ্কর মিত্রকলকাতা
বিপক্ষে
যা সবার জন্য নয়, শুধুমাত্র সরকারি কর্মচারীদের জন্য, বেসরকারি কর্মচারীদের জন্য নয়, এ রকম কোনও বিষয় ‘অধিকার’ হতে পারে না। বহু বেসরকারি কর্মচারী সরকারি কর্মচারীদের চেয়ে অনেক কম মাইনে পান।
সপ্তর্ষি ঘোষকলকাতা
পক্ষে
মহার্ঘ ভাতা শুধু অধিকার নয়, কলকাতা হাই কোর্টের রায় অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা একটি মৌলিক অধিকার। এটি বিঘ্নিত হলে কোনও নাগরিক উচ্চ বা সর্বোচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন। আদালত সংবিধানের ২২৬ এবং ৩২ ধারা অনুযায়ী ‘রিট’ জারি করতে পারে।
হাসান আনসারবোলপুর
পক্ষে
খোলাবাজারে মূল্যবৃদ্ধির মতো স্বাভাবিক ঘটনার সাথে সাযুজ্য রেখে কর্মীদের মহার্ঘ ভাতার অধিকার স্বাভাবিক এবং আইনসিদ্ধ প্রক্রিয়া। রাজ্য সরকারি আমলা এবং জুডিশিয়াল অফিসাররা এটা পুরো পান।রাজ্য সরকারি কর্মীদের এমন দমন ও বঞ্চনা কেন? মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব উচ্চপদস্থ আমলার থেকে সাধারণ কর্মচারীদের জীবনে অনেক বেশি।
সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়কাটোয়া
বিপক্ষে
সংবিধান বা আইনগত ভাবে কোথাও বলা নেই মহার্ঘ ভাতা অধিকারের মধ্যে পড়ে। আমাদের ভাবতে হবে, ৩০ শতাংশ মানুষ চাকুরিজীবী। আর ৭০ শতাংশ মানুষ স্বনির্ভরশীল। মূল্যবৃদ্ধি হলে ওই ৭০ শতাংশ মানুষকে সমস্যার সমাধান নিজেকেই করতে হয়। যেখানে বেতনবৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো, সেখানে কেন মহার্ঘ ভাতা? এলআইসি আর কাশ্মীর বেড়ানোর জন্য?
আশীষ ঘোষদস্তিদারমেমারি
পক্ষে
অন্য সব কিছু ভাল ভাবে চলছে, শুধু মহার্ঘ ভাতার সময় অসুবিধা, এটা মেনে নেওয়া যায় না। যারা মহার্ঘ ভাতা পাবে, সেটা তাদের প্রাপ‍্য। অন্যের জিনিসে তারা তো হাত বাড়াচ্ছে না।
সুদীপ ওম ঘোষবসিরহাট
বিপক্ষে
ভাতা কখনও বাধ্যতামূলক হতে পারে না। দেশের ৯৮ শতাংশ মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা স্থিতিশীল নয়। তাঁদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। সরকারি কর্মচারীরা আর্থিক ভাবে স্থিতিশীল। নির্দিষ্ট শতাংশের হারে মহার্ঘ ভাতার দাবি অন্যায্য।
সিদ্ধার্থ দত্তচৌধুরীভদ্রেশ্বর
পক্ষে
যেখানে অন্যান্য রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা মহার্ঘ ভাতা ঠিক মতো পেয়ে থাকেন, সেখানে আমাদের রাজ্যে এমন প্রশ্ন উঠেছে কেন? কেন এই অধিকার থেকে সরকারি কর্মচারীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে? সরকার অযথা ৫০০ টাকা, ১০০০ টাকা করে ভাতা দিতে পারছে, তা হলে মহার্ঘ ভাতা কেন নয়? মহার্ঘ ভাতা অবশ্যই অধিকার!
দিব্যেন্দুদুর্গাপুর
বিপক্ষে
ডিএ কোনও অধিকার নয়। এটা সংগঠিত শ্রমিকদের দলবদ্ধ দর কষাকষির উপর নির্ভর করে। সরকার শ্রমিকদের স্বার্থবাহী কি না, তার উপর নির্ভর করে। করোনাকালে কেন্দ্র ডিএ দেয়নি। আদালত কিছু করতে পারেনি। কর্মচারীদের লড়াই করেই ডিএ আদায় করতে হবে।
রমাপ্রিয় পালিতদুর্গাপুর
বিপক্ষে
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রভাব কি শুধু সরকারি কর্মচারীদের উপর পড়ে? বাকিরাও কি ভুক্তভোগী নন? রাজ্য সরকার না দিয়ে কোনও ভুল করেনি। কেন্দ্রীয় সরকারেরও উচিত দেশের কথা, সব মানুষের কথা ভেবে মহার্ঘ ভাতা বন্ধ করা।
অরুণ কুমার মিত্রবাঁকুড়া
বিপক্ষে
এক জন সরকারি কর্মচারীর মাইনে ত্রিশ-চল্লিশ বা ষাট হাজার টাকা আর এক জন লেবারের ডেলি হাজিরা ৪৫০ টাকা। দু’জনই তাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার চালায়। সরকারি কর্মচারীদের বোঝা উচিত এটা। আমার মতে, সরকারের উচিত আরও বেশি সাধারণ মানুষের দিকে দেখা। ওদের মাইনে আর এক টাকাও বাড়ানো উচিত নয়।
রজ্জাক লস্করশেরপুর
পক্ষে
দ্রব্যমূল্য সূচক এবং রোপা ২০০৯-এর নিয়ম অনুযায়ী ডিএ আমাদের অধিকার। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারী, যাঁরা অন্য রাজ্যে কাজ করছেন, তাঁদের মহার্ঘ ভাতার সঙ্গে আমাদের মহার্ঘ ভাতার বৈষম্য কেন? বৈষম্য হওয়া উচিত নয়। ডিএ আমাদের অধিকার।
মিঠুন চক্রবর্তীকলকাতা
বিপক্ষে
মহার্ঘ ভাতা সরকারের দেওয়া অনুদান। এবং এই অনুদান যুক্তিহীন। যখন একই বাজার থেকে সব শ্রেণির বিভিন্ন আয়ের মানুষ একই দামে জিনিসপত্র কিনছেন, তখন বেছে বেছে উচ্চ হারে বেতন পাওয়া সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়া তেলা মাথায় তেল দেওয়ার শামিল। মহার্ঘ ভাতা নয়, সমতা আনতে চাই বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ।
অতীশচন্দ্র ভাওয়ালকোন্নগর
পক্ষে
মহার্ঘ ভাতা অধিকার না হলে দৈনন্দিন বেড়ে চলা বাজারদরের সঙ্গে জীবনযাত্রার মান বজায় রাখা অসম্ভব। এতে কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মানের অবনমন ঘটতে বাধ্য। যা একটি প্রগতিশীল দেশ বা রাজ্যের কাছে লজ্জার। যেখানে সরকারের সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজের রূপায়ণে কর্মচারীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য, সেখানে কর্মচারীদের মানোন্নয়ন সরকারের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
প্রীতম দাসরামপুরহাট
বিপক্ষে
অধিকার শুধুমাত্র ১০ শতাংশ নাগরিকের জন্য হতে পারে না। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা নির্ধারিত হয়। কিন্তু বাকি ৯০ শতাংশও তো ওই একই বাজারের অধীন। ওই ১০ শতাংশ চূড়ান্ত সামাজিক-অর্থনৈতিক সুবিধাপ্রাপ্তকেই শুধু নাগরিক মনে হলে, বাকিরা প্রজার সম্মান ছাড়া গণতন্ত্রে আর কিছু পাবে না। মহার্ঘ ভাতা অধিকার হতে পারে না।
ত্রিদিব হালদারবসিরহাট
পক্ষে
ডিএ তো দরকার। সব কিছুর দাম বেড়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে খরচ বেড়ে গিয়েছে। সব কিছুর দাম কমে যাক, ডিএ লাগবে না। সরকারের অসুবিধা হলে সব সংগঠনের সঙ্গে বসে আন্তরিক ভাবে অসুবিধার কথা বুঝিয়ে বলুক। সত্যি অসুবিধা থাকলে এবং সেটা বুঝিয়ে বললে মনে হয় সবাই বুঝবে।
তাপস তালুকদারশিলিগুড়ি
বিপক্ষে
সরকারি কর্মচারীর করের টাকায় সরকার চলে না। কথায় কথায় শুধুমাত্র সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়াবে। অন‍্য পেশার লোকেদের চাকরিরই কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই আমার মতে ডিএ বৃদ্ধি তো দূরের কথা, অবিলম্বে বেতন কমানো উচিত।
সৌমিত্র সাহাকলকাতা
পক্ষে
নিয়োগকর্তা শ্রম কিনছেন। কর্মচারীর অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির জন্য মূল বেতন বাড়ে। বাজারের মূল্যসূচক মেনে মহার্ঘ ভাতা বাড়ে। যাতে কর্মীদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতিসাধন হয়। তাই মহার্ঘ ভাতা কম দেওয়া মানে কর্মচারীকে ঠকানো।
অমিতাভ মিস্ত্রীবিরাটি
বিপক্ষে
সরকারি কর্মচারীরা, বিশেষত বেশির ভাগ শিক্ষক, সততার সঙ্গে বুকে হাত রেখে কি মহার্ঘ ভাতা দাবি করতে পারেন? শিক্ষকেরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি করাচ্ছেন। সরকারি স্কুলের মানোন্নয়নে নজরই দিচ্ছেন না। কী ভাবে তাঁরা মহার্ঘ ভাতার দাবি করেন? মহার্ঘ ভাতা কোনও মতেই অধিকার নয়। সরকারি কর্মচারীদের সবটুকু দিয়ে দিলে সাধারণ মানুষ কী পাবে?
রনি বেরাপশ্চিম মেদিনীপুর
পক্ষে
আইনস্বীকৃত বলেই তো দেশের সব সরকারি কর্মীকে মূল বেতনের সঙ্গে এটা দেওয়া হয়। আইনি না হলে কি সরকার এটা দিতে পারত? ভারতের সব সরকার এই ৭৫ বছর ধরে ডিএ দিয়ে কি বেআইনি কাজ করে চলেছে? মহার্ঘ ভাতা অবশ্যই অধিকারের মধ্যে পড়ে।
প্রদীপ কুমার মুখোপাধ্যায়কৃষ্ণনগর
পক্ষে
ডিএ কখনওই অধিকারের মধ্যে পড়ে না। যেখানে এত বেকারত্বের জ্বালা, যেখানে চুক্তিভিত্তিক বহু সরকারি কর্মীর ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেতন অথচ সমান কোয়ালিফিকেশন, সেখানে সরকারি কর্মচারীদের ৪০ শতাংশ ডিএ বাড়লে প্রচুর বেতনবৈষম্য সৃষ্টি হবে।
রাজু সরকারবর্ঝমান
বিপক্ষে
ভারতীয় সংবিধান মেনেই সব সরকারি চাকরিজীবীকে বাজারমূল্য বৃদ্ধির অনুপাতে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়। প্রতি বছর দু’ধাপে। জানুয়ারি মাসে এবং জুলাই মাসে। মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মচারীদের আইনগত অধিকার।
মণিমোহন লঙ্গলহাওড়া
পক্ষে
পশ্চিমবঙ্গের ১১ কোটি মানুষের মধ্যে আনুমানিক ৩ কোটি মানুষ চাকুরিরত। এঁদের জন্য মহার্ঘ ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, বাড়ি ভাড়া ইত্যাদি আছে। অপর দিকে বাকি ৮ কোটি মানুষ কিন্তু মাসে ১০ হাজার টাকার কম রোজগার করেন। তাঁরা তো মহার্ঘ ভাতা ছাড়া ওই টাকাতেই সংসার প্রতিপালন করেন, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াও করান।
প্রবীর বিশ্বাসবনগাঁ
পক্ষে
সরকারি কর্মচারীরা বিভিন্ন দফতরে নিরলস পরিশ্রম করে রাজ্যের উন্নয়নের কাজে প্রত্যক্ষ ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের বেতনের মূল্যমান যখন মুদ্রাস্ফীতির কবলে অবনমিত হয়, মহার্ঘ ভাতা প্রদান প্রকৃৃত অর্থে তাঁদের বেতনবৃদ্ধি করে না, বেতনের মূল্যমানকে অবনমনের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই মহার্ঘ ভাতা অধিকার, দয়ার দান নয়।
রুমা বসুকলকাতা
বিপক্ষে
ভাতা কখনও অধিকার নয়, অনুদান। কেউ আপনাকে ভাতা দিতে পারে, না-ও পারে। আসলে দীর্ঘ দিন পেতে পেতে লোকে অনুদানকেই অধিকার ভেবে ফেলে। কী এমন কাজ এরা করে যার জন্য এত অনুদানের অধিকার আসে?
রাজাহাওড়া
পক্ষে
ডিএ নির্ধারিত হয় সর্বভারতীয় দ্রব্যমূল্য সূচক (এআইসিপিআই) অনুযায়ী। তাই ডিএ অনুদান, এটা ভ্রান্ত ধারণা। বেতনের কার্যত যে ক্ষয় হয় বাজারের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য, ডিএ তার সঙ্গেই সামঞ্জস্য রেখে দেওয়া হয়।
সুকন্যা পালিতহাওড়া
পক্ষে
মহার্ঘ ভাতা যে একজন সরকারি কর্মচারীর অধিকার, এটা তো কলকাতা হাই কোর্ট স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছে। এটা কোনও দয়ার দান নয়। এটা ঠিক হয় অল ইন্ডিয়া কনজ়িউমার প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী। কোনও কাল্পনিক ভিত্তিতে নয়। এটা নিয়ে রাজ্য সরকার অহেতুক জেদাজেদি করছে। অহেতুক মামলা-মোকদ্দমা চালিয়ে রাজ্যের কোষাগারের ক্ষতি করে চলেছে।
শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়কলকাতা
পক্ষে
মহার্ঘ ভাতা অধিকার হতে পারে না। হলে তা তো বেসরকারি চাকরিতেও প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
সৌমেন কুমার মৈত্রবোলপুর
বিপক্ষে
মূল্যবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে সব সরকার তার কর্মচারীদের সুষ্ঠু ভাবে জীবনযাপন করার জন্য মহার্ঘ ভাতা দিয়ে থাকেন। সরকারি কর্মচারীদের যে হেতু অন্য কোনও ব্যবসা বা উপার্জনের সাথে যুক্ত থাকার অধিকার নেই, তাই মহার্ঘ ভাতা তাঁদের অধিকার।
রঞ্জিত গড়াইইন্দাস
পক্ষে
এক জন কর্মচারীর সাধারণ মাইনে খুবই কম থাকে এবং বাজারে জিনিসপত্রের মূল্য যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে মহার্ঘ ভাতা না দিলে জীবন চালানো মুশকিল।
অভিষেক সাহাবেলঘরিয়া
পক্ষে
বর্তমানে যা বাজারমূল্য, ডিএ ছাড়া সংসার চলবে না। সরকারের টাকা আছে ডিএ দেওয়ার। ফালতু খরচ বন্ধ করলেই হবে। জাতির উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে। শুধু নিজের গদির জন্য বাংলার মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে উন্নয়ন হয় না। উন্নয়নের হার্দিক মানসিকতা দরকার।
রবীন্দ্রনাথ সিংহরনবনিয়া
পক্ষে
ডিএ কখনওই বাধ্যতামূলক হতে পারে না। কেন্দ্র দিচ্ছে বলে রাজ্যও দিতে বাধ্য নয়। কেন্দ্র এবং রাজ্য আলাদা সংস্থা, আলাদা নিয়ম, আলাদা বেতন স্কেল। তাই ‘ডিএ অধিকার’ তত্ত্ব খাটে না। যোগ্যতা থাকলে কেন্দ্রের চাকরিই করতে পারতেন, রাজ্যের চাকরি করছেন কেন?
বাণীব্রত পালঝাড়খণ্ড
বিপক্ষে
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব জিনিসেরই দাম বাড়ে। সেই অনুযায়ী কর্মচারীদেরও বেতনবৃদ্ধি করা উচিত। সে ক্ষেত্রে ডিএ অবশ্যই সাংবিধানিক অধিকার।
মহম্মদ এজাজ আহমেদমগরাহাট
পক্ষে
রাজ্যে কর্মরত অনেক আধিকারিক কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পান। যেমন আইপিএস, আইআরএস, আইএএস ইত্যাদি। কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা তা পান না। এই দ্বিচারিতা কেন?
দীপক পালমেদিনীপুর
বিপক্ষে
দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সভ্যভদ্র হয়ে বাঁচতে ডিএ চাই। ডিএ অবশ্যই কর্মচারীদের অধিকার। আদালতের পর্যবেক্ষণেও সেই দাবি সুপ্রতিষ্ঠিত।
গৌতম জানাবর্ধমান
বিপক্ষে
এমনিতেই সরকারি কর্মচারীরা প্রচুর টাকা বেতন পান। রাজ্য সরকারের প্রতিটি কর্মচারী বছরে তিন শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পান। এর পরেও কেন মহার্ঘ ভাতার জন্য আবদার? যাঁরা দোকানের কর্মচারী বা অন্য কাজে যুক্ত, তাঁদের বছরে কি এ ভাবে বেতন বাড়ে? মহার্ঘ ভাতার টাকা উন্নয়নের কাজে ব্যয় হোক।
তুষার ভট্টাচাৰ্যবহরমপুর
পক্ষে
বাঁচার অধিকার যদি মৌলিক অধিকার হয়, তবে জীবনধারণের অধিকারও মৌলিক অধিকার। জীবনধারণের মান বজায় রেখে বাঁচাও মৌলিক অধিকার। এআইসিপিআই সূচক অনুযায়ী ডিএ-ও অধিকার।
প্রীতিময় মণ্ডলবসিরহাট
পক্ষে
যে দেশে কোটি-কোটি শিক্ষিত বেকারকে বসে থাকতে হয় একটা কাজের আশায়, সেখানে শুধু অধিকার আর আইনের দোহাই দিয়ে এই অনাচার? করোনার সময় কাজ না করে বেতন নিতে ভাল লাগত? হকের চাকরি, বেতন বলতেন তো তখনও! ডিএ যদি দিতেই হয়, ঘুষ না-খাওয়া পুলিশ আর ইমার্জেন্সি ওয়ার্কারদের দেওয়া হোক।
আদিদেব বন্দ্যোপাধ্যায়হৃদয়পুর
মহার্ঘ ভাতা কোনও ভাবেই অধিকার হতে পারে না। মহার্ঘ ভাতা অবশ্যই সরকারের দান। সরকার মাইনে দিচ্ছে, বাড়িভাড়া দিচ্ছে, বোনাসও দেয়। আর কী চাই?
পলাশ মজুমদারহাবড়া
ডিএ অবশ্যই একজন কর্মীর মৌলিক অধিকার। প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে একই বেতন দিয়ে কর্মচারীদের পক্ষে সংসার চালানো মুশকিল। তাই এআইসিপিআই অনুযায়ী কেন্দ্র ও প্রতিটি রাজ্যের কর্মচারীদের ডিএ দেওয়া উচিত। শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি ক্ষেত্রেও তা দিতে হবে।
আকাশ আলিদিনহাটা
পক্ষে
কর্মচারীরাই সব কর্মসূচি সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদন করে থাকেন। সুতরাং এটা মালিক বা সরকারের তরফ থেকে কর্মচারীদের প্রতি একটি কৃতজ্ঞতা মাত্র। কারণ, কোনও সরকার একা কোনও কাজ সম্পাদন করতে পারে না। কর্মচারীরাই সেনাবাহিনী।
পারমিতা মুখোপাধ্যায়সিউড়ি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy