গ্রাফিক—সনৎ সিংহ।
প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবন আধারিত প্রস্তাবিত ট্যাবলো বাদ দেওয়া নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর, ট্যাবলো বাতিল নিয়ে কেন্দ্রের যুক্তি তুলে ধরেছেন আদালতে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, নেতাজির তৈরি আজাদ হিন্দ ফৌজ (আইএনএ) নৌবিদ্রোহের সময় যোগ দিয়েছিল ভারতীয় সেনার সঙ্গে। সে সময় নিহত সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে একটি ট্যাবলো তৈরি হয়েছে। সে জন্যই আলাদা করে ওই ট্যাবলোর রাখা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। অপর দিকে, এত কম সময়ের মধ্যে আদলত পদক্ষেপ করতে পারবে না বলে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে মামলাটি।
প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে নেতাজির ট্যাবলো বাতিলের সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতেও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে বদল হয়নি। এর পর গত বৃহস্পতিবার আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার কলকাতা হাই কোর্টে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সেই মামলারই শুনানি হয়েছে সোমবার।
শুনানির সময়, রমাপ্রসাদ আদালতে সওয়াল করেন, ‘‘কোন পরিস্থিতিতে নেতাজির ট্যাবলো বাতিল হল? কেন শুধু নেতাজির ট্যাবলোকে বাদ দেওয়া হল?’’ তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এত দেরি করে কেন এলেন?’’ এত কম সময়ের মধ্যে আদালত কী করতে পারবে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
এর পর কেন্দ্রের হয়ে সওয়াল করেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর। সওয়ালে তিনি বার বার তুলে ধরেন, কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজির বিষয়ে কতটা সজাগ। তিনি বলেছেন, ‘‘২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজি সংক্রান্ত ফাইল প্রকাশের কাজ শুরু করে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সারা দেশ নেতাজিকে নিয়ে গর্ব করে। তিনি আমাদের আইকন। তাঁর হলোগ্রাম বসানো হয়েছে। অগস্টে মূর্তিও বসানো হবে। এটা মনে রাখতে হবে নেতাজি শুধু বাংলার নন, সারা ভারতের।’’ ট্যাবলো নিয়েও কেন্দ্রের যুক্তি তুলেছেন ধরেছেন দস্তুর। তিনি বলেছেন, ‘‘সব কিছুর নিয়ম আছে। ১৯৪৬ সালে নৌ-বিদ্রোহের সময় ভারতীয় সেনার সঙ্গে আইএনএ যুক্ত ছিল। সে সময় বহু সেনা নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আইএনএ-র সেনারাও। তাঁদের প্রতি সম্মানজ্ঞাপন করে একটি ট্যাবলো তৈরি হয়েছে। সে জন্যই আলাদা করে ওই নেতাজির ট্যাবলো রাখা হয়নি।’’
এই মামলার শুনানির পর কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এক দিন পরেই প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান। এর মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ করা আদালতের পক্ষে সম্ভব নয়। সে জন্য খারিজ করে দেওয়া হয়েছে মামলাটি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলা দায়ের হতে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy