Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫
Purulia

কম সময়ে হাওড়া, নয়া রুটের প্রস্তাব

বিশেষজ্ঞরাও জানাচ্ছেন, আদ্রা-বাঁকুড়া-রায়নগর হয়ে মশাগ্রাম তুলনায় অনেকটাই ‘ফ্রি’ রুট। এই রুটে মালগাড়ির সংখ্যা অনেক কম।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

প্রশান্ত পাল
শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:২৩
Share: Save:

আরও কম সময়ে পুরুলিয়া থেকে হাওড়া পৌঁছতে নয়া রুটে পুরুলিয়া-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস চালানোর প্রস্তাব দিলেন সংসদের রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া। সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে এই দাবি জানিয়ে চিঠি দেন তিনি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষের প্রতিক্রিয়া,‘‘যে কোনও প্রস্তাব সব সময়েই স্বাগত। প্রস্তাব এলে তা বিবেচনা করা হবে।’’
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা-আসানসোল রুটের দামোদর থেকে যে লাইনটি মহীশিলা হয়ে কালীপাহাড়িতে মিশেছে, সেই রুটেই পুরুলিয়া-হাওড়া ইন্টারসিটি চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন বাসুদেববাবু। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে পুরুলিয়া থেকে আসানসোল হয়ে ট্রেন চালানোর প্রস্তাব নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়। কিন্তু বার্নপুর-আসানসোল রুট ‘সিঙ্গল’ লাইন থাকায় প্রথমে তা ‘ডবল’ লাইন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বাসুদেববাবু জানান, সে সময়ে রেলের করা একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, লাইনটি ‘ডবল’ করতে হলে একাধিক বড় বড় নির্মাণ ভাঙতে হবে। তখনই দামোদর-মহীশিলা-কালীপাহাড়ি যে সিঙ্গল রুটে মালগাড়ি চলত, তা ‘ডবল’ লাইন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কালীপাহাড়ি থেকে মহীশিলা ডবল লাইনের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে জানিয়ে বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘আদ্রা ডিভিশিনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (কনস্ট্রাকশন) আমাকে জানিয়েছেন, দামোদর-মহীশিলা ডবল লাইনের কাজ কিছু দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। তাই আমি জিএমকে অনুরোধ করেছি, এই লাইন দিয়ে পুরুলিয়া-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস চালানোর জন্য রেলবোর্ডে প্রস্তাব পাঠাতে। পুরুলিয়া থেকে আদ্রা-বাঁকুড়া-মেদিনীপুর-খড়্গপুর হয়ে হাওড়া পৌঁছতে ছ’ঘণ্টা সময় লাগে। আদ্রা-আসানসোল রুটের দামোদর স্টেশন থেকে মহীশিলা হয়ে গেলে চার ঘণ্টায় পৌঁছনো যাবে।’’ প্রসঙ্গত প্রাক্তন সাংসদ জানান, আর একটি রুট দিয়েও প্রায় একই সময়ে পুরুলিয়া থেকে হাওড়া পৌঁছনো যাবে। পুরুলিয়া-আদ্রা-বাঁকুড়া-রায়নগর হয়ে মশাগ্রামে গিয়ে লাইনটি মিশছে। সেই রুটে বাঁকুড়ার যাত্রীরা সুবিধা পাবেন।
বাঁকুড়া-দামোদর রেলওয়ে, যাকে ‘বিডিআর লাইন’ বলা হয়, তা ‘ন্যারো গেজ’ থেকে ‘ব্রড গেজ’ করা হয়েছে। মশাগ্রাম পর্যন্ত ট্রেনও চলছে। বাসুদেববাবু জানান, এই লাইনটি অতীতে একটি বেসরকারি সংস্থার ছিল। রামবিলাস পাসোয়ান রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেল লাইনটি কিনে নেয়। পরে নীতিশ কুমার রেলমন্ত্রী থাকাকালীন লাইনটি ‘ব্রড গেজ’ করার অনুমোদন মেলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেলমন্ত্রীত্বে সেই কাজ শুরু হয়। পূর্ব রেলেও মশাগ্রাম নামে স্টেশন রয়েছে। রায়নগর হয়ে যে লাইনটি মশাগ্রাম পর্যন্ত গিয়েছে, একই জায়গায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলেরও মশাগ্রাম নামে স্টেশন রয়েছে। দু’টি লাইনে সংযোগ করার কাজটুকু বাকি। তা হয়ে গেলে কমবেশি চার ঘণ্টায় পুরুলিয়া থেকে হাওড়া পৌঁছনো যাবে, আশা বাসুদেববাবুর।

বিশেষজ্ঞরাও জানাচ্ছেন, আদ্রা-বাঁকুড়া-রায়নগর হয়ে মশাগ্রাম তুলনায় অনেকটাই ‘ফ্রি’ রুট। এই রুটে মালগাড়ির সংখ্যা অনেক কম। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের দুই মশাগ্রাম স্টেশন যুক্ত হলে পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার যাত্রীরা অনেকটাই কম সময়ে হাওড়ায় পৌঁছতে পারবেন। তবে পূর্ব রেলের মশাগ্রাম স্টেশনে মেন লাইনের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের লাইনটির সংযোগের জন্য একটি উড়ালপুল তৈরি করা প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন। কেননা, হাওড়া থেকে বাঁকুড়ার দিকে আসার লাইনে সংযোগ ঘটানোর ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা না হলেও হাওড়াগামী লাইনের সঙ্গে বাঁকুড়ার দিকের লাইনে সংযোগের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে এ সমস্যা মেটাতেও উদ্যোগী হবেন, আশ্বাস বাসুদেববাবুর।

অন্য বিষয়গুলি:

Purulia Howrah Train Route
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy