ফাইল চিত্র।
শীতের বৃষ্টি কমবেশি বিপদ ডেকে আনলেও চলতি গ্রীষ্মের বৃষ্টিতে আপাতত আমের তেমন ক্ষতি দেখছেন না ফলবিজ্ঞানী ও কৃষি-আবহবিদেরা। তাঁদের বক্তব্য, শীতে অকালবৃষ্টি দিয়ে এক বার আমের ফলনে কোপ দিয়েছে প্রকৃতি। তবে এ বার ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ অনেকাংশে রেহাই দেওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা কমেছে। ঝড় না-হলে বৃষ্টিতে আমের তেমন সমস্যার আশঙ্কা নেই। তবে বৃষ্টিতে মিষ্টত্বে কিছু ইতরবিশেষ হলেও হতে পারে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
সারা বছর মাছে-ভাতে কাটে বাঙালির। কিন্তু গরম কালে পাতে আম না-হলে তার চলে না। সেই সাধের আমে প্রকৃতি এ বার কোপ মারতে চলেছে কি না, সেই প্রশ্ন তাই উতলা করে তুলেছে বাঙালিকে।
তাঁদের আশ্বস্ত করে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল বিজ্ঞানের অধ্যাপক আবু হাসান বলছেন, “৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিবেগে ঝড় না-হলে সমস্যা নেই। যেমন বৃষ্টি হচ্ছে, তাতেও আমের ফলনে ক্ষতি হবে না।” তবে কিছুটা আক্ষেপের সুরেই শীতকালের বৃষ্টিকে দুষেছেন তিনি। অধ্যাপক হাসান জানান, আমগাছে ভাল মুকুল ধরতে হলে শীতকালে অন্তত তিন মাস খটখটে মাটি দরকার। কিন্তু এ বার শীতে তো ঘনঘন বৃষ্টি হয়ে মাটি ভিজিয়ে দিয়েছিল।
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েরই অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনন্দময় পুস্তের মতে, এই সময়ে জল পড়লে বরং আমের বোঁটা শক্ত হবে। তবে আম পাকার সময় হয়ে গিয়েছে। এই সময়ে অতিবৃষ্টি হলে মিষ্টত্ব কমে যেতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।
আমের ফলনের জন্য মালদহের সুনাম আছে। কিন্তু এ বার আবহাওয়ার খেয়ালিপনায় আমের ফলনের দফারফার কথা মানছেন সেখানকার চাষিরাও। তাঁরা জানাচ্ছেন, চড়া রোদে অনেক আম গাছেই ফেটে গিয়েছে। কখনও আবার উটকো ঝড় বা শিলাবৃষ্টিতে আম ঝরে গিয়েছে। আমচাষি সুব্রত সরকারের আশঙ্কা, প্রকৃতি বার বার বিরূপ হলে আমের ফলনের সাড়ে সর্বনাশ হবে! উদ্যানপালন দফতরের হিসেব, মালদহে ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। গত মরসুমে তিন লক্ষ ৭০ হাজার টন আম উৎপন্ন হয়েছিল। এ বার একেই তো মুকুল কম এসেছে। তার উপরে এ-পর্যন্ত ১০ হাজার টন আমের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে।
আমের জন্য বিখ্যাত মুর্শিদাবাদও। ওই জেলার উদ্যানপালন দফতরের উপ-অধিকর্তা প্রভাস মণ্ডল জানান, মুর্শিদাবাদে ২১,৫০০ হেক্টর আম বাগান আছে। তবে ঝড় না-হলে ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, নদিয়ায় এ বার আমের ফলন সে-ভাবে হয়নি। ক্ষয়ক্ষতি কী হয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। তবে সার্বিক ভাবে ফলন কম হলে যেটুকুই ক্ষতি হোক, সেটাই চাষিদের কাছে অনেক বলে মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy