Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

স্কুলে মেঝে চাটিয়ে শাস্তি খুদে ছাত্রকে

জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) অলোক মহাপাত্র বলেন, ‘‘এমন কিছু কানে আসেনি। তবে যদি এমনটা ঘটে থাকে, তা হলে তা অবশ্যই নিন্দনীয়।’’ সংশ্লিষ্ট সার্কেল ইন্সপেক্টরের কাছ থেকে খবর নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

ছাত্রকে স্কুলের মেঝেতে চাটতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ। ক্ষমা চাইছেন হিঙ্গলগঞ্জের বিশপুর পূর্বপল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই শিক্ষক। ছবি: নবেন্দু ঘোষ

ছাত্রকে স্কুলের মেঝেতে চাটতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ। ক্ষমা চাইছেন হিঙ্গলগঞ্জের বিশপুর পূর্বপল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই শিক্ষক। ছবি: নবেন্দু ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা 
হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০১
Share: Save:

পড়া মুখস্থ করেনি দ্বিতীয় শ্রেণির এক খুদে পড়ুয়া। চটে যান মাস্টারমশাই। শাস্তি দিতে ছেলেটিকে স্কুলের নোংরা মেঝে জিভ দিয়ে চাটতে বলেন বলে অভিযোগ। সে কথা অস্বীকারও করছেন না উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের বিশপুর পূর্বপল্লি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সৌমিত্র রায়। অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে অবশ্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।

জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) অলোক মহাপাত্র বলেন, ‘‘এমন কিছু কানে আসেনি। তবে যদি এমনটা ঘটে থাকে, তা হলে তা অবশ্যই নিন্দনীয়।’’ সংশ্লিষ্ট সার্কেল ইন্সপেক্টরের কাছ থেকে খবর নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

স্কুলটিতে ৭০ জন পড়ুয়া। শিক্ষক দু’জন। তাঁদের মধ্যে সৌমিত্র রগচটা বলেই জানেন অভিভাবকেরা। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা তাঁর নামে ভয়ে কাঁপে। ক্লাসে পড়া না পারলে ওই শিক্ষক ছেলেমেয়েদের মারধর করেন বলেও অভিযোগ। এর আগেও ছেলেমেয়েদের স্কুলের মেঝে চাটতে বাধ্য করেছেন বলে জানাচ্ছেন অভিভাবকেরা। অনেক সময়ে ছেলেমেয়েরা বাড়ি ফিরে ভয়ে সে কথা চেপে যায় বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তবে শনিবারের ঘটনা চাপা থাকেনি। দ্বিতীয় শ্রেণির ওই পড়ুয়া বাড়িতে সব খুলে বলে।

সোমবার অভিযুক্ত শিক্ষককে স্কুলে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। ঘন্টাখানেক বিক্ষোভ চলার পরে ভুল স্বীকার করেন সৌমিত্র। ভবিষ্যতে এমনটা হবে না বলে কথা দেন। এরপরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের মারধরের অভিযোগ নানা সময়েই ওঠে। এর আগে পাঠভবনে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে শাস্তি দেওয়ার নামে নিজের মূত্র পান করতে বাধ্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন এক শিক্ষক।

হিঙ্গলগঞ্জের স্কুলে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, নোংরা মেঝে চাটানোর ফলে দ্বিতীয় শ্রেণির কয়েক জন পড়ুয়া অসুস্থও হয়ে পড়েছে। কিন্তু শনিবার কী এমন দোষ করেছিল ওই ছাত্র?

ছেলেটির কথায়, ‘‘পড়া পারিনি বলে মাস্টারমশাই বকাবকি করেন। সকলের সামনে ক্লাস ঘরের মেঝে চাটতে বলেন। কান মুলে দেন।’’ অভিভাবকদের তরফে পারুল দাস বলেন, ‘‘শিশুরা যদি ঠিক মতো পড়াশোনা না করে, তা হলে বকাঝকা করতেই পারেন শিক্ষকেরা। তাই বলে এমন শাস্তি দিতে হবে! উনি আগেও ছেলেমেয়েদের মারধর করেছেন। বাথরুমে পর্যন্ত যেতে দিতে চান না।’’

সৌমিত্রর সাফাই, ‘‘বাচ্চারা যাতে পড়াশোনা করে, সে জন্যই এমন শাস্তি দিতাম। এখন বুঝতে পারছি, ভুল হয়েছে। এমনটা আর হবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Student Primary Teacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy