প্রতীকী ছবি।
গত এক দশকে এতখানি দাম বাড়েনি। রান্নার তেল থেকে দুধ, আটা থেকে নুন— এ সবের দাম গত এক দশকের রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। মোদী সরকারের উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রক ২২টি খাদ্যপণ্যের দামে নজরদারি করে। সরকারের হিসাব বলছে, এই ২২টি খাদ্যপণ্যের মধ্যে ৯টির মাসিক গড় দাম গত মাসে অর্থাৎ এপ্রিলে রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। গম, আটা, বাদাম-সোয়া-পাম-সূর্যমুখীর মতো ভোজ্য তেল, বনস্পতি, দুধ, এমনকি নুনের দামও ২০১২-র পর থেকে এতখানি বাড়েনি। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘মানুষের পকেট খালি করার পরে এবার মোদী সরকার খাবারের থালাও খালি করে দিয়েছে।’’
এমনিতেই পেট্রল-ডিজ়েল থেকে রান্নার গ্যাসের দাম আকাশছোঁয়া। পেট্রল-ডিজ়েল সেঞ্চুরি ছুঁলে, রান্নার গ্যাসের দাম হাজার ছুঁয়েছে। গত দেড় মাসে রান্নার গ্যাসের দাম ১০০ টাকা বেড়েছে। এর সঙ্গে যে রোজকার খাদ্যপণ্যের দামও বাড়ছে, তারই প্রতিফলন মিলছে কেন্দ্রীয় উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকের পরিসংখ্যানে। ২২টি খাদ্যপণ্যের দাম গত এক বছরে ৯.৭ শতাংশ বেড়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এমনিতেই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে নীতি বদলে সুদের হার বাড়াতে হয়েছে। খাদ্যপণ্যের দাম খুচরো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হারে সবথেকে বেশি ধাক্কা দেয়। তা যদি এভাবে বাড়ে, তা হলে মূল্যবৃদ্ধির হারও বাড়বে।
এই মূল্যবৃদ্ধির পিছনে অর্থনীতিবিদদের অনেকে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণও দেখছেন। মার্চ থেকে এপ্রিলে ডিজ়েলের দাম ৯.৭ শতাংশ বেড়েছে। ফলে পণ্য পরিবহণের খরচও বেড়েছে। পেট্রলের দাম বেড়েছে ৮.৯ শতাংশ। গত এক বছরে পেট্রলের দাম ১৬ শতাংশের বেশি, ডিজ়েলের দাম ১৯ শতাংশের বেশি এবং রান্নার গ্যাসের দাম ১৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
মোদী সরকার উজ্জ্বলা প্রকল্পে ৮.৯৯ কোটি গরিব পরিবারকে নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ দিয়েছিল। সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘নিখরচায় গরিব পরিবারকে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দিয়ে সরকার ঢাক পিটিয়েছিল। কিন্তু তারপরে ভর্তুকি তুলে দিয়ে গ্যাসের দাম এতই বাড়িয়েছে যে ৯০ লক্ষ পরিবার আর কখনও গ্যাসের সিলিন্ডার কেনেনি। ১.০৮ কোটি পরিবার বছরে মাত্র একটি সিলিন্ডার নিয়েছেন। জ্বালানিতে লুট, ভর্তুকি-চুরির আর কত খেসারত জনতাকে দিতে হবে?’’
সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়া। সাধারণ মানুষ তা জানেন বলেই বিরোধীদের কথায় কান দিচ্ছেন না। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরার পাল্টা মন্তব্য, ‘‘জিনিসপত্রের দাম থেকে নজর সরাতেই লাউডস্পিকার বনাম হনুমান চালিশা, বোরখা, লাভ জিহাদ, মসজিদ বনাম মন্দিরের বিতর্ক টেনে আনা হচ্ছে। দেখানো হচ্ছে, এগুলিই একমাত্র সমস্যা। আমাদের বিশ্বাস, দেশের সব মানুষ ধর্মান্ধ নন। কোনটা আসল সমস্যা তাঁরা ঠিকই বুঝতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy